আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়। 

বিবিসি বলছে, ট্রাম্প আইসিসি’র ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি ছাড়াও অভিযোগ করেছেন যে, এই সংস্থা আমেরিকা ও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে অবৈধ এবং ভিত্তিহীন পদক্ষেপ নিচ্ছে। 

ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশের পর এখন মার্কিন নাগরিক ও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের বিরুদ্ধে আইসিসির তদন্তে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের এবং তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। 

নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, আইসিসি বিপজ্জনক নজির স্থাপন করেছে। আইসিসির পদক্ষেপের ফলে মার্কিনিরা বিপদে পড়েছে। সেইসঙ্গে মার্কিনিরা হয়রানি, খারাপ আচরণ ও গ্রেপ্তারের আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে।  

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানের পর হোয়াইট হাউজে গেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। দুইদিন আগেই নেতানিয়াহু ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এরপরেই ট্রাম্প এই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করলেন। 

এর আগে আইসিসি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। যদিও এ বিষয়ে আইসিসির মন্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে সংস্থাটি আগেই সম্ভাব্য মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কায় প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। একটি সূত্র জানায়, আইসিসি তাদের কর্মীদের বেতন তিন মাস আগেই পরিশোধ করেছে। যাতে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার ফলে কার্যক্রম ব্যাহত না হয়।

গত ডিসেম্বরে আইসিসির প্রেসিডেন্ট বিচারক তোমোকো আকানে সতর্ক করে বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় আইসিসির কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে এবং এটি অস্তিত্বের সংকটে পড়তে পারে।’’ তবে আইসিসির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এমন নিষেধাজ্ঞা এটাই প্রথমবার নয়। এর আগে ২০২০ সালে ট্রাম্প প্রশাসন আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর ‘কথিত’ যুদ্ধাপরাধ তদন্তের জন্য আইসিসির তৎকালীন প্রধান প্রসিকিউটর ফাতু বেনসুদা ও তার এক সহযোগীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

১২৫টি সদস্য রাষ্ট্রের স্থায়ী আদালত হলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। যা যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ও সদস্য রাষ্ট্রের ভূখণ্ড বা তাদের নাগরিকদের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের অপরাধের জন্য ব্যক্তিদের বিচার করতে পারে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও ইসরায়েল আইসিসির সদস্য নয়।

ঢাকা/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইস স র কর ছ ন অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

আশুলিয়ায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণালংকার লুট

সাভারের আশুলিয়ায় দোকান বন্ধের সময় এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে ওই ব্যবসায়ীর স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে।

রোববার রাতে আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নাম দিলীপ কুমার দাস (৪৮)। সে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের দুলাল দাসের ছেলে এবং নয়ারহাট বাজারের দিলীপ স্বর্ণালয়ের মালিক। 

জানা যায়, ডাকাতদের হামলায় আহত ওই ব্যবসায়ীকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান।

পুলিশ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানায়, স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার দাস রাতে দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় একদল ডাকাত দোকানে এসে দিলীপের হাতে থাকা স্বর্ণের ব্যাগ ধরে টান দেয় । এতে তিনি বাধা দিলে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে টাকার ব্যাগ ও সেখানে থাকা প্রায় ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা কয়েকটি ককটেল বোমা ফাটিয়ে বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ ঘটনার পর বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা সেখানে ছুটে এসে দিলীপ দাসকে দোকানের সামনে পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান।

নিহতের ফুপাতো ভাই খোকন সরকার বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে শাটার নামানোর সময় কয়েকজন ডাকাত তার হাতে থাকা ব্যাগ ধরে টান দেয়। কিন্তু দিলীপ ব্যাগ না ছাড়ায় চাপাতি দিয়ে তাকে কুপিয়ে স্বর্ণ এবং টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।

নিহতের স্ত্রী সরস্বতী দাশ বলেন, আমার স্বামী প্রতিদিন ৯টার মধ্যে বাসায় আসতো। কিন্তু ওরা আর আমার স্বামীকে বাসায় আসতে দিল না। আমি এ হত্যার বিচার চাই।

সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মেরাজুর রেহান পাভেল জানান, আহত অবস্থায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বুকে বড় ক্ষত ছিল, গালের ডানে ক্ষত ছিল এবং পিঠেও ক্ষত ছিল। আমরা চিকিৎসা শুরু করেছিলাম, স্যালাইন এবং ওষুধ চলছিল, পরে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যেই তিনি মারা যান। আমরা ধারনা করছি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি মারা গেছেন। 

আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধারে আমাদের কার্যক্রম চলছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ