যাকে বন্ধু ভাবেন সে কি সত্যিই বন্ধু নাকি বন্ধুর মুখোশ পরে থাকা অন্য কেউ? মাত্র তিনটি আচরণ মূল্যায়ন করলেই এই প্রশ্নের উত্তর পেতে পারেন। আপনার আনন্দ, বেদনার গল্প যাকে শোনাতে চান, যার সঙ্গ আপনার ভালো লাগে তিনিও যদি একইরকম অনুভব করেন তাহলে আপনি সৌভাগ্যবান। কিন্তু সহযোগিতা চাইলে যদি এড়িয়ে যায়, কখনও যদি নিজ থেকে যোগাযোগ না করেন অথবা আপনাকে সফল হতে দেখলে তিনি যদি চুপসে যান; তাহলে সতর্ক হোন।
সহযোগিতা চাইলে কৌশলে এড়িয়ে যান: বন্ধু তো সে, যাকে সময়-অসময়ে, ভালো-মন্দে, প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে পাশে পাওয়া যায়। বন্ধু কোনও সাহায্য চাইলে আপনি যেকোন উপায়ে চেষ্টা করেন তার পাশে দাঁড়াতে। কিন্তু আপনার দরকারে কি বন্ধু সব সময় পাশে থাকেন, বা থাকার চেষ্টা করেন? আপনি সমস্যায় পড়ে তার কাছে সাহায্য চাইলে তিনি যদি কৌশলে এড়িয়ে যান? তাহলে বুঝতে হবে তিনি সুবিধাবাদী বন্ধু।
সে কখনও আগে যোগাযোগ করেন না: বন্ধুত্বের সম্পর্ক শুধু প্রয়োজনের নয়, তিনি আপনার প্রিয়জন। কখনও কখনও বিশেষ প্রয়োজন ছাড়াই দুইজনের কথা হতে পারে, দেখা হতে পারে। বন্ধুত্বে এই পাগলামি না থাকলে কি হয়! একতরফা কোনও কিছুই দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কখনও আপনি তাকে ডেকে নেবেন আবার কখনও তিনি আপনাকে ডেকে নেবেন। কিন্তু তিনি যদি নিজে উদ্যোগী হয়ে কখনও কথা না বলেন, তাহলে এই সম্পর্ককে কর্তৃত্ববাদী বন্ধুত্ব বলতে পারেন। প্রকৃত বন্ধুত্বে কর্তৃত্ববাদ থাকে না।
আরো পড়ুন:
হোটেল রুমে লুকানো ক্যামেরা খোঁজার উপায়
নিজেই বানান ভিটামিন কে সমৃদ্ধ ফেসপ্যাক
আপনি সফল হলে তার আচরণ বদলে যায়: আপনি সফল হলে সেই সফলতার আনন্দ আপনার বন্ধুর মনেও প্রবাহিত হবে। কিন্তু আপনার সফলতা যদি তিনি উদযাপন না করেন তাহলে তাকে ঈর্ষাকাতর ভাবতে পারেন। এমন বন্ধুত্ব এগিয়ে নেবেন কিনা একবার ভাবুন।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বন ধ ত ব আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
‘অনুপ্রেরণা যে কোনো কাজই সহজ করে দেয়’
রোমান পোলানস্কি। অস্কার ও পাম ডি’অর জয়ী ফ্রেঞ্চ-পোলিশ চলচ্চিত্র পরিচালক। ‘দ্য পিয়ানিস্ট’, ‘বিটার মুন’, ‘অলিভার টুইস্ট’ প্রভৃতি সিনেমার নির্মাতা। এই জীবন্ত কিংবদন্তির বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণার কথা তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক
বিজ্ঞানে আমার আগ্রহ প্রচুর। অবশ্য ফিকশনের চেয়ে নন-ফিকশনই বেশি পড়ি। যখন নিজের কাজটা করতে যাই, তখন সেটে কোনো অভিনেতা কিংবা সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দিতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বাধ্য না হলে সেটিকে বিশ্লেষণাত্মকভাবে ভাবি না একদমই। এমন পরিস্থিতিতে কোনো না কোনো জবাব আমাকে দিতে হয় ঠিকই, তবে সেই জবাবদিহি আমার ব্যক্তিজীবন ও কাজকে জটিল করে তোলে।
আশপাশ থেকেই পাই কাজের ইঙ্গিত
আমার ভাবনা প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়। কোনো নিয়ম-কানুন ছাড়াই। একেক সময় একেক ধরনের সিনেমা বানাতে ভালো লাগে আমার। মূলত চারপাশে যা দেখি, তা থেকেই চলে আসে আমার অনুপ্রেরণা। সিনেমা খুব ভালোবাসি আমি; দেখিও প্রচুর। একেক সময় একেক ধরনের সিনেমা দেখতে ভালো লাগে; তবে সেটিকে কোনো না কোনোভাবে আমার তখনকার বাসনাকে তৃপ্ত করতে হয়। যদিও জীবন এবং দর্শনের প্রতি এক ধরনের ঘোর বরাবরই রয়েছে– যেগুলোর প্রতি মানুষ হিসেবে আমি প্রচণ্ড বিশ্লেষণাত্মক; তবু কাজটা সহজাতপ্রবণতায় ভর দিয়েই করি।
ফিল্মের শক্তি
সিনেমায় সাসপেন্স, অতিপ্রাকৃত উপাদান আর এক ধরনের আয়রনি বা বিদ্রুপের সমন্বয়ে এই রসিকতা বা হিউমারকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা থাকে আমার। সেটিই দর্শকদের হাসিয়ে তোলে। তারপর সিনেমাটি বানানো হয়ে গেলে প্রযোজক, পরিবেশক ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের সামনে দেখানোর সময় মনে দ্বিধা থাকে, কাজটা হলো তো ঠিকমতো! কিন্তু আপনি যখন দেখবেন আমজনতা ফিল্মটি দেখছে, তখনই প্রকৃত অর্থে টের পাবেন সেটির শক্তি।
সাধারণ মানুষের কথা
ফ্রুট সালাদ এডিটিংয়ের ভেতর দিয়ে যেতে হয় আমাকে। এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাই। কেননা, এটি সহজ এবং বড়ই আদিম। তারপর অনেক ক্লোজআপ ধরা দেয় সামনে। যে ফিল্মমেকাররা মনিটরের সামনে অনড় বসে আছেন–এ কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে যে, সিনেমা দেখতে বসা মানুষগুলোর মধ্যে সাধারণ মানুষও থাকবে। আমার কাছে স্টাইল একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার; আরও গুরুত্বপূর্ণ কাহিনি বিন্যাসের সারল্য। আমি স্রেফ একটা কাহিনি দেখাতে চাই। তা দেখাতে গিয়ে সেটির আবেগ ও স্টাইলের পরিচর্যা করি নিজের মতো। স্ক্রিপট লিখতে গিয়ে কো-স্ক্রিপট রাইটারের সঙ্গে আড্ডা ও হাসি-মশকরায় মেতে উঠি। তারপর একটা জায়গায় পৌঁছে লিখতে বসি। খানিকটা লেখা হয়ে গেলে আবারও আড্ডা। চলে স্ক্রিপট রি-রাইট। কখনও কখনও হয়তো একটা দৃশ্যই ৩০ বারের মতো রি-রাইট করি আমি। যারা সিনেমা দেখবে, তারাও আমাদের মতো হেসে উঠবে কিনা, এই ভাবনা আমাকে খুব পেয়ে বসে।
অনুপ্রেরণা যে কোনো কাজই সহজ করে দেয়
অভিনয়ের অভিজ্ঞতা আমার নিজেরই আছে। ফলে খুব সহজেই অভিনেতাদের সমস্যাগুলো ধরতে পারি। খেয়াল করবেন, যেসব ফিল্মমেকার নিজেও অভিনেতা ছিলেন, তাদের সিনেমায় ভালোমানের অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়ে থাকে। আর ফিল্মমেকারের কাজ হলো, অভিনেতার কাছ থেকে সর্বোচ্চ মানটি বের করে আনার জন্য তাঁকে নিরন্তর অনুপ্রাণিত করে যাওয়া। কেবল এই ক্ষেত্রই নয়; অনুপ্রেরণা যে কোনো কাজই সহজ করে দেয়। বাড়িয়ে দেয় কাজের মান। এ কাজটি ঠিকঠাক করতে পারি বলেই আমার সিনেমায় অভিনেতাদের কাছ থেকে দুর্দান্ত সব পারফরম্যান্স দেখা যায়। আপনি যখন একটি সিনেমা বানানো শুরু করবেন, তখন আপনার কাছে এক ধরনের নমুনা নিশ্চয়ই থাকবে; আর বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে সেই নমুনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অভিনেতাদের নির্বাচন করে সেটিকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করার দায় আপনারই। সে ক্ষেত্রে কাজটি হয়তো কখনও কখনও একটু বেশিই ভালো, আবার কখনও কখনও খানিকটা কম ভালো হবে। u