সাইবার হামলা থেকে স্মার্টফোন নিরাপদ রাখতে মানতে হবে এই ৫ নিয়ম
Published: 7th, February 2025 GMT
স্মার্টফোনে থাকা তথ্য চুরির জন্য নিয়মিত সাইবার হামলা চালিয়ে থাকে হ্যাকাররা। কয়েক বছর ধরে এ ধরনের হামলার পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। ম্যালওয়্যারসহ বিভিন্ন ধরনের স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে স্মার্টফোনে সাইবার হামলার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে থাকে। তবে চাইলে বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে স্মার্টফোনের নিরাপত্তা বাড়ানো যায়। পদ্ধতিগুলো দেখে নেওয়া যাক—
সপ্তাহে অন্তত একবার ফোন রিস্টার্ট করা
স্মার্টফোনকে সুরক্ষিত রাখতে সপ্তাহে অন্তত একবার বন্ধ করে পুনরায় চালু করা পরামর্শ দিয়ে থাকেন সাইবার নিরাপত্তা–বিশেষজ্ঞরা। এ পদ্ধতি মেনে চললে ‘জিরো-ক্লিক এক্সপ্লয়েট’ নামের সাইবার হামলা প্রতিরোধ করা যায়। জিরো ক্লিক এক্সপ্লয়েটের ফলে ব্যবহারকারী কোনো কিছুতে ক্লিক না করলেও হ্যাকাররা দূর থেকে ফোনে প্রবেশ করতে পারে। আর তাই সপ্তাহে অন্তত একবার ফোন বন্ধ করে ১০ সেকেন্ড অপেক্ষা করে চালু করা উচিত। পাশাপাশি নিয়মিত সফটওয়্যার হালনাগাদ করা জরুরি।
ব্লুটুথ সংযোগ বন্ধ রাখা
ব্লুটুথ সংযোগ চালু রাখার অভ্যাস বদলানো উচিত। ব্লুটুথ ব্যবহারের মাধ্যমে হ্যাকাররা বিভিন্ন পদ্ধতিতে ফোনে প্রবেশ করতে পারে, বিশেষত জনবহুল এলাকায় এই ঝুঁকি বেশি থাকে। নিরাপত্তা বাড়াতে ও হ্যাকাররা যাতে সহজে শনাক্ত করতে না পারে এ জন্য ফোনের ব্লুটুথ নাম পরিবর্তন করে সাধারণ কিছু রাখা যেতে পারে, যেমন- ‘ডিভাইস ১২৩’। প্রয়োজন না হলে ব্লুটুথ বন্ধ রাখলে ব্যাটারির স্থায়িত্বও বাড়বে।
পাবলিক ইউএসবি চার্জিং পোর্ট এড়িয়ে চলা
পাবলিক ইউএসবি চার্জিং পোর্ট ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছে এনএসএ। বিমানবন্দর, ক্যাফে কিংবা হোটেলের উন্মুক্ত ইউএসবি চার্জিং পোর্ট থেকে ফোন চার্জ করা বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ এসব পোর্ট ব্যবহার করে হ্যাকাররা ‘জুস জ্যাকিং’ নামের এক ধরনের সাইবার হামলা চালিয়ে ফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করাতে পারে অথবা ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে। আর তাই পাবলিক ইউএসবি চার্জিং পোর্টের পরিবর্তে সব সময় ব্যক্তিগত চার্জার বা পোর্টেবল পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করতে হবে।
পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করা
পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে। উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক সাধারণত সুরক্ষিত থাকে না এবং হ্যাকারদের জন্য এটি সহজ লক্ষ্যবস্তু। অনেক সময় প্রতারণার ফাঁদ হিসেবে ‘ফ্রি ওয়াই-ফাই’ নামে ভুয়া নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়, যেখানে সংযুক্ত হলে হ্যাকাররা সহজেই ফোনের তথ্য চুরি করতে পারে। নিরাপদ থাকতে কোনো পাবলিক নেটওয়ার্কে সংযোগ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কাছ থেকে প্রকৃত নেটওয়ার্কের নাম নিশ্চিত হওয়া জরুরি। আরও নিরাপত্তার জন্য ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ডাটা এনক্রিপ্ট করে হ্যাকিং প্রতিরোধ করে।
মাইক্রোফোন ও ক্যামেরা সুরক্ষিত রাখা
মাইক্রোফোন ও ক্যামেরার সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। অনেক সময় ‘হট-মাইকিং’ নামে এক ধরনের সাইবার হামলার মাধ্যমে হ্যাকাররা ফোনের মাইক্রোফোন গোপনে চালু করে ব্যবহারকারীর কথোপকথন শুনতে পারে। সাধারণত ক্ষতিকর অ্যাপ বা ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে এই কাজটি করা হয়। তাই ফোনের অ্যাপ পারমিশন নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। আরও নিরাপদ থাকতে ক্যামেরা কভার ও মাইক্রোফোন ব্লকার ব্যবহার করা যেতে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন টওয় র ক প বল ক ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পুনরায় হামলা ইসরায়েলের ‘ভুল’ পদক্ষেপ: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা পুনরায় শুরু করাকে তিনি ‘ভুল’ বলে অভিহিত করেছেন এবং ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েলের দখলকে ‘বেআইনি’ বলে অভিহিত করেছেন। খবর আনাদোলুর।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল), ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ১৩ জন সিলেক্ট কমিটির সভাপতির প্রশ্নের জবাবে সংসদীয় যোগাযোগ কমিটিকে বলেন, “আমি মনে করি দখল অবৈধ। ব্রিটিশ সরকার বরাবরই এই নীতিতে বিশ্বাসী।”
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্র ওষুধ আমদানির ওপর ‘বড়’ শুল্ক আরোপ করবে: ট্রাম্প
বৃহস্পতিবার তুরস্কে আবারো বৈঠকে বসছে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র
তিনি উল্লেখ করেন, দীর্ঘদিন ধরে গাজায় পর্যাপ্ত সাহায্য পৌঁছাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, “আমার মতে, শত্রুতা পুনরায় শুরু করা ভুল।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “গাজায় যুদ্ধবিরতিতে ফিরে যেতে হবে। সাহায্য আনতে হবে। জিম্মিদের উদ্ধার করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের ভূমিকা প্রয়োজন।” তিনি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে দীর্ঘমেয়াদে শান্তি নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় বলে অভিহিত করেছেন।
তুরস্কের সরকারি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলায় ৫০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
গাজায় যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সংসদীয় যোগাযোগ কমিটিকে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনেক দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা ‘খুবই চ্যালেঞ্জিং’।
তিনি বলেন, “আমাদের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং এবং বিশ্বজুড়ে খুবই চ্যালেঞ্জিং।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানান, মার্কিন শুল্ক আরোপের ঘটনায় তিনি ‘হতাশ’। তিনি মনে করেন না যে, এটি দেশের অর্থনীতির জন্য বা বিশ্বজুড়ে অর্থনীতির জন্য ভালো।
তবে তিনি আরো বলেন, “বিকল্প উপায়গুলো আমাদের আলোচনার টেবিলে রাখা উচিত এবং প্রয়োজনে প্রতিশোধের জন্য প্রস্তুতিমূলক কাজ করা উচিত।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের ঘটনায় বিশ্ব বদলে যাচ্ছে। তবে তিনি এটিকে একটি ‘অস্থায়ী ক্ষণস্থায়ী পর্যায়’ বলেই মনে করেন।
স্টারমার বলেন, “দুটি জিনিস করা প্রয়োজন। প্রথমটি হলো আমাদের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ করার জন্য আমাদের আরো অনেক কিছু করতে হবে, আরো দ্রুত এবং আরো অনেক কিছু করতে হবে। দ্বিতীয়ত, বাণিজ্যের বাধা কমানোর বিষয়ে আমাদের অন্যান্য সমমনা দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে হবে।”
ঢাকা/ফিরোজ