Prothomalo:
2025-02-07@04:12:43 GMT

ঢাকায় বায়ুদূষণ কমার লক্ষণ নেই

Published: 7th, February 2025 GMT

শুকনা মৌসুমে রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ প্রতিবছর বেশি থাকে; কিন্তু এবারের শুকনা মৌসুমে বায়ুদূষণের রেকর্ড ভাঙছে। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস শুকনা মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। নভেম্বরে ঢাকার বায়ুর মান খারাপ হতে শুরু করে। সর্বশেষ নভেম্বরে বায়ুদূষণ ছিল আগের আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ডিসেম্বরও বায়ুদূষণ ছিল আট বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আর সদ্য শেষ হওয়া জানুয়ারি মাসে বায়ুদূষণ আগের আট বছরকে ছাড়িয়ে গেছে। জানুয়ারি মাসের দূষণের এ পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরেছে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পাওয়া গত ৯ বছরের (২০১৭ থেকে ২০২৫) বায়ুমান সূচক বা একিউআইয়ের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছে ক্যাপস। প্রতিষ্ঠানটি গতকাল বৃহস্পতিবার এ গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে।

জানুয়ারি মাসে প্রায় প্রতিদিন বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান বিশ্বের নগরগুলোর মধ্যে এক থেকে পাঁচের মধ্যেই ছিল। চরম দূষণ এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী; কিন্তু দূষণের উৎসগুলো নিয়ন্ত্রণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ে না। খোদ পরিবেশ অধিদপ্তরও বলছে, বায়ুদূষণ কমানো সময়সাপেক্ষ বিষয়। দ্রুত এটি কমছে না।

ভয়ানক দূষণ জানুয়ারিতে

বায়ুর মান ৩০০ পার হলেই তাকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বলা হয়। অর্থাৎ যেসব স্থানে বায়ুর মান এমন, সেখানে দূষণ পরিস্থিতি ভয়ানক রকম খারাপ। গত ২২ জানুয়ারি সকালে আইকিউএয়ারের মানসূচকে ঢাকার সার্বিক বায়ুর মান ছিল ৫১৮। আর সারা দিনে বায়ুর মান ছিল ৬২২। সেদিনের বাতাসে যে ভয়াবহ দূষণ, তা সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিশেষজ্ঞরা। শুধু ওই এক দিন নয়, পুরো জানুয়ারিতে এক দিনও নির্মল বায়ু পাননি রাজধানীবাসী।

ক্যাপসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসের বায়ুদূষণ আগের আট বছরের জানুয়ারি মাসের গড় মানের তুলনায় শতকরা ২৪ দশমিক ৫২ ভাগ বেশি ছিল। আট বছরের (২০১৭-২৪) জানুয়ারি মাসের গড় দূষণের মান ছিল ২৫৫ দশমিক ৪৮। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তা ছিল ৩১৮। আগের বছরের জানুয়ারিতে এটি ছিল ৩০২।

উদ্যোগগুলো যতটা কাগজে আছে, বাস্তবে নেই। তাই দূষণের হাল করুণ। আবদুস সালাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও দূষণবিশেষজ্ঞ

গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে যথাক্রমে ১০ দশমিক ৩৭ এবং ৩০ দশমিক ৫৪ শতাংশ বায়ুদূষণ বৃদ্ধি ছিল আগের বছরগুলোর তুলনায়।

ক্যাপসের চেয়ারম্যান আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকার বায়ুর মানের ক্রমাগত অবনমন দেখছি। আর এবারের শুকনা মৌসুমে দূষণের রেকর্ড হচ্ছে। গত নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি—প্রতিটি মাসেই আগের আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দূষণ দেখা গেছে। দূষণ থেকে নগরবাসীর কোনো মুক্তির দিশা দেখছি না।’

বায়ুর মান শূন্য থেকে ৫০ থাকলে ‘ভালো’ বলা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে ‘গ্রহণযোগ্য’। ১০১ থেকে ১৫০ ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ক্ষতিকর’, ১৫১ থেকে ২০০ ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০০–এর বেশি হলে তা হয় ‘দুর্যোগপূর্ণ’।

ক্যাপসের তথ্য অনুযায়ী, এবারে জানুয়ারি মাসের ৩১ দিনের মধ্যে ১৬ দিনই ছিল ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ১৫ দিন ছিল ‘অতি অস্বাস্থ্যকর বা দুর্যোগপূর্ণ বায়ুমান।’

দূষণ নিয়ন্ত্রণে দিশা নেই

ঢাকায় যেদিন সবচেয়ে বেশি দূষণ দেখা যায় অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি, তার পরদিনই থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে দূষণের কারণে আড়াই শর বেশি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়। দূষণে থাইল্যান্ডের অবস্থা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম। মাত্র তিন দিন বায়ুর মান অস্বাস্থ্যকর হওয়ার পরই স্কুল বন্ধের এমন নির্দেশনা আসে। জানুয়ারিতে ঢাকায় বায়ুমান ৩০০–এর বেশি গেছে কয়েক দিন; কিন্তু স্কুল বন্ধ বা জনস্বাস্থ্যের কথা ভেবে কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এর অবশ্য একটা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) মো.

জিয়াউল হক। তিনি বলেন, থাইল্যান্ডে তো বেশি দূষণ থাকে না। হঠাৎ কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় তারা এমন উদ্যোগ নিয়েছিল। আমাদের এখানে তো প্রায়ই এমন দূষণ থাকে। তাই আলাদা করে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বাস্তবে দূষণ যেন একদম গা–সওয়া হয়ে গেছে নগরবাসীর জন্য; কিন্তু এর উৎসগুলো নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ছে না। গাড়ির কালো ধোঁয়া, কলকারখানার দূষণ, ইটভাটা, বর্জ্য পোড়ানো—এসব উৎস বন্ধে তৎপরতা নেই বললেই চলে।

জিয়াউল হক বলছিলেন, ‘দূষণ নিয়ন্ত্রণ আসলে সময়সাপেক্ষ বিষয়। কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে; কিন্তু ফল আসতে অপেক্ষা করতে হবে।’

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ডিসেম্বর মাসে বায়ুদূষণ–সংক্রান্ত টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে প্রধান করে। কারখানা, গাড়ি ও ইটভাটাকে জরিমানাও করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও দূষণবিশেষজ্ঞ আবদুস সালাম বলছিলেন, উদ্যোগগুলো যতটা কাগজে আছে, বাস্তবে নেই। তাই দূষণের হাল করুণ।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব শ দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুনীর চৌধুরী নাট্যোৎসব-২০২৫

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ৬৪ জেলায় অনুষ্ঠিতব্য জুলাই অভ্যুত্থান শীর্ষক প্রযোজনাকে কেন্দ্র করে নাট্যকর্মশালা ও মুনীর চৌধুরী নাট্যোৎসব-২০২৫ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ফরিদপুর জেলায় স্থানীয় নাট্যদল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে এক বিশেষ নাট্যকর্মশালা শুরু হয়েছে।

এই কর্মশালার জন্য অডিশনের মাধ্যমে ১৪ জন নাট্যকর্মী নির্বাচিত করা হয়েছে। ২৭ জানুয়ারি শুরু হওয়া এ কর্মশালা ১৫ দিনব্যাপী চলবে এবং ১০ ফেব্রুয়ারি  নাট্যকর্মশালার সমাপনী দিনে সন্ধ্যা ৬টায় কবি জসীম উদদীন হলে অংশগ্রহণকারীদের পরিবেশনায় "জুলাই অভ্যুত্থান" চূড়ান্ত নাটকটি মঞ্চায়ন করা হবে।

কর্মশালার আয়োজন সমন্বয়ক, ফরিদপুর জেলা কালচারাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল হাসান মিলন জানান, প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ইরা আহমেদ। সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে আছেন বিশ্বনাথ ভৌমিক।

ফরিদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এই কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ও সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীসহ বৈশাখী নাট্যগোষ্ঠী, বহুরূপী সাংস্কৃতিক সংস্থা, বিনোদন নাট্যদল, উড়ানী নাট্যদল, সংগ থিয়েটার ও বাংলা থিয়েটারের নাট্যকর্মীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকায় বায়ুদূষণ কমার লক্ষণ নেই, জানুয়ারিতে ভয়াবহ
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫)
  • একুশে পদক পাচ্ছেন ১৪ ব্যক্তি ও নারী ফুটবল দল
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫)
  • ফাইনাল পর্বে ১০ জন নিয়ে জয় ব্রাজিলের, জিতল আর্জেন্টিনাও
  • নেসকোতে চাকরি, মূল বেতন ১ লাখ ৫ হাজার
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫)
  • টঙ্গীতে শেষবারের মতো ইজতেমার অনুমতি পেল সাদপন্থিরা
  • ফরিদপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুনীর চৌধুরী নাট্যোৎসব-২০২৫