পবিত্র কোরআনের ১৮ তম সুরা আল কাহাফ। কাহাফ মানে গুহা। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ১১০। মক্কায় অবতীর্ণ এই সুরায়, গুহাবাসীদের বিবরণ স্থান পেয়েছে। জ্ঞানান্বেষণে এক আল্লাহ ভক্ত মহাপুরুষের সাক্ষাৎ এবং জুল কারনাইন ও ইয়াজুজ মাজুজের বিবরণ রয়েছে। সরল পথের আলোচনা করে মোহাম্মদ (সা.)-কে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে।
জুলকারনাইন ছিলেন ন্যায়পরায়ণ ও সৎ বাদশাহ। তিনি পশ্চিম থেকে পূর্ব পর্যন্ত সফর করেছিলেন। দুই পর্বতের মাঝখানে তিনি এক জনগোষ্ঠীকে খুঁজে পান। তারা তাঁর কাছে ইয়াজুজ ও মাজুজের হাত থেকে রক্ষা পেতে একটি দেয়াল নির্মাণের আবেদন জানাল। জুলকারনাইন কাজটি করে দিতে সম্মত হলেন। তিনি তাঁর কাজ নিয়ে গর্ব দেখাননি।
কোরআনে আছে, ওরা বলল, 'হে জুলকারনাইন! ইয়াজুজ ও মাজুজ পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করছে; আমরা কি তোমাকে কর এই শর্তে দেব যে তুমি আমাদের ও ওদের মধ্যে এক প্রাচীর গ'ড়ে দেবে?' সে বলল, 'আমার প্রতিপালক আমাকে যে-ক্ষমতা দিয়েছেন তা-ই ভালো। সুতরাং তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য করো, আমি তোমাদের ও ওদের মাঝখানে এক মজবুত প্রাচীর গড়ে দেব। তোমরা আমার কাছে লোহার তাল নিয়ে আসো।' তারপর মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা পূর্ণ হয়ে যখন লোহার ঢিবি দুটো পাহাড়ের সমান হলো তখন বলল, 'তোমরা হাপরে দম দিতে থাকো।' যখন তা আগুনের মতো গরম হলো তখন সে বলল, 'তোমরা গলানো তামা নিয়ে আসো, আমি তা ওর ওপর ঢেলে দেব।' এরপর ইয়াজুজ ও মাজুজ তা পার হতে পারল না বা ভেদ করতেও পারল না। সে (জুলকারনাইন) বলল, 'এ আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ। এখন আমার প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হবে তখন তিনি ওকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেবেন, আর আমার প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি সত্য।' সেদিন আমি ওদেরকে দলে দলে তরঙ্গের আকারে ছেড়ে দেব, আর শিঙায় ফুঁ দেওয়া হবে। তারপর আমি ওদের সকলকেই একত্র করব। আর সেদিন আমি জাহান্নামকে প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত করব অবিশ্বাসীদের কাছে, যাদের চক্ষু আমার নিদর্শনের প্রতি ছিল অন্ধ, আর যাদের শোনারও ক্ষমতা ছিল না। (সুরা সুরা কাহাফ, আয়াত ৯৪ থেকে ১০১)
আরও পড়ুনঅর্থ বুঝলে নামাজে অন্য চিন্তা আসে না২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪আবার সুরা শেষ হয়েছে বক্তব্য ও উপদেশ দিয়ে। কোরআনে আছে, যারা অবিশ্বাস করেছে তারা কি মনে করে যে, তারা আমার পরিবর্তে আমার দাসদেরকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করবে? আমি অবিশ্বাসীদের অভ্যর্থনার জন্য জাহান্নাম তৈরি রেখেছি।বলো, 'আমি কি তোমাদেরকে তাদের খবর দেব যারা কর্মে বড়ই ক্ষতিগ্রস্ত? ওরাই তারা, পার্থিব জীবনে যাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও তারা মনে করে তারা সৎকর্ম করছে। ওরাই তারা যারা অস্বীকার করে ওদের প্রতিপালকের নিদর্শনগুলো ও তাঁর সঙ্গে ওদের সাক্ষাতের বিষয়।' ওদের কর্ম তো নিষ্ফল। কিয়ামতের দিন ওদেরকে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হবে না। জাহান্নামই ওদের প্রতিফল, যেহেতু ওরা অবিশ্বাস করেছে এবং আমার নিদর্শনগুলো ও রসুলদের হাসি-ঠাট্টার ব্যাপার হিসেবে নিয়েছে। যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তাদের অভ্যর্থনার জন্য রয়েছে ফিরদাউসের উদ্যান, যেখানে তারা স্থায়ী হবে ও এর পরিবর্তে তারা অন্য কোনো স্থান কামনা করবে না। বলো, 'আমার প্রতিপালকের কথা (লেখার জন্য) যদি সমুদ্র কালি হয়, তবে আমার প্রতিপালকের কথা শেষ হওয়ার পূর্বেই সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে, এর সাহায্যার্থে এর মতো (আর-একটি সমুদ্র) আনলেও।' বলো, 'আমি তোমাদের মতোই একজন মানুষ; আমার ওপর প্রত্যাদেশ হয় যে আল্লাহ্ই তোমাদের একমাত্র উপাস্য। সুতরাং যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে সে যেন সৎকর্ম করে ও তার প্রতিপালকের উপাসনায় কাউকেই শরিক না করে। (সুরা সুরা কাহাফ, আয়াত ১০২ থেকে ১১০)
চারটি ঘটনা থেকে চার রকম পরীক্ষার কথা জানা যায়। আসহাবে কাহাফের ঘটনা থেকে ধর্মবোধের পরীক্ষা, দুটি বাগানের মালিকের ঘটনা থেকে সম্পদের ওপর পরীক্ষা, হজরত মুসা (আ.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অব শ ব স পর ক ষ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
বনানীতে নারী শ্রমিককে চাপা দেওয়া পিকআপের নিবন্ধন স্থগিত
বনানীতে নারী পোশাকশ্রমিককে চাপা দেওয়া পিকআপটির নিবন্ধন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। পিকআপের মালিককে প্রয়োজনীয় সব দলিল এবং চালককে তাঁর লাইসেন্সসহ তিন দিনের মধ্যে বিআরটিএতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় পিকআপটির নিবন্ধন নম্বর (ঢাকা মেট্রো-ন-১৪-০৭৬২) স্থায়ীভাবে বাতিল করে মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিআরটিএ।
আজ সোমবার সকাল ৬টা ৪১ মিনিটের দিকে বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় কলাবোঝাই একটি পিকআপের চাপায় মিনা আক্তার নামের এক নারী পোশাকশ্রমিক নিহত হন। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ থেকে মহাখালীর আমতলী পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নেন। এতে দুই পাশের সড়কে শত শত গাড়ি আটকে পড়ে। প্রায় সাত ঘণ্টা পর শ্রমিকেরা সড়ক ছাড়লে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
বিআরটিএর তথ্য অনুসারে, পিকআপটির মালিকের নাম টিটন ইসলাম। ঠিকানা কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধোপাইল এলাকার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিআরটিএ সূত্র জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরই বিআরটিএর পক্ষ থেকে নিবন্ধন স্থগিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর পিকআপের মালিকের যে ফোন নম্বর বিআরটিএতে রক্ষিত আছে, সেই নম্বরে কল করে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
বিআরটিএর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ভয় পেয়ে হয়তো মালিক ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। তবে বিআরটিএ থেকে নোটিশ করা হলে বেশির ভাগ মালিকই হাজির হন। এই যানের মালিক এবং চালককেও হাজির করা যাবে বলে তাঁরা মনে করছেন।
আরও পড়ুন৭ ঘণ্টা পর বনানীর সড়ক ছাড়লেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা, অবরোধে ভোগান্তি৩ ঘণ্টা আগে