সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের চেষ্টা শক্তভাবে প্রতিহত করা হবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অন্তর্বর্তী সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠী সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করছে। সরকার এ ধরনের কর্মকাণ্ড শক্তভাবে প্রতিহত করবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রস্তুত। কোনো ধরনের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হলে দায়ী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিক কঠোর ব্যবস্থা নেবে এবং দোষীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবে।’

এর আগে রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে জানিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি সরকারের অভিমত, পলাতক অবস্থায় ভারতে বসে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে জনমনে গভীর ক্রোধের সৃষ্টির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করা হয়। বলা হয়, গত ছয় মাসে ৩২ নম্বর বাড়িটিতে কোনো ধরনের আক্রমণ, ধ্বংসযজ্ঞ হয়নি। গত বুধবার রাতে এটি ঘটেছে পলাতক শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে, যার দুটি অংশ আছে। 

একটি অংশ হলো, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা আত্মদান করেছেন শেখ হাসিনা তাদের অপমান করেছেন, অবমাননা করেছেন। শহীদের মৃত্যু সম্পর্কিত অবান্তর, আজগুবি ও বিদ্বেষমূলক কথা বলে পলাতক শেখ হাসিনা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে অবজ্ঞা করেছেন ও অশ্রদ্ধা জানিয়েছেন। 

দ্বিতীয়ত, শেখ হাসিনা দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও অমানবিক প্রক্রিয়ায় নিপীড়ন চালিয়ে ক্ষমতায় থাকাকালীন যে সুরে কথা বলতেন গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়ার পরও তিনি একই হুমকি-ধমকির সুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে, গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া প্রতিটি মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলে চলেছেন, হুমকি দিচ্ছেন। দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির হুমকি দিয়েছেন। 

মানুষের মনে জুলাই গণহত্যা নিয়ে যে ক্ষত রয়েছে সে ক্ষততে শেখ হাসিনা একের পর এক আঘাত করে চলেছেন। তাঁর এই সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার দেশ ও জনগণের জানমালের রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বাত্মকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার যথাযথ চেষ্টা করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শেখ হাসিনা বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো সম্ভব। 

সরকার আশা করে, ভারত যেন তার ভূখণ্ডকে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে এমন কাজে ব্যবহৃত হতে না দেয় এবং শেখ হাসিনাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ না দেয়। অন্তর্বর্তী সরকার  ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না। 

এতে বলা হয়, জুলাই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। এই বিচার নিশ্চিত করে গণহত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কী কী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা সরকার খতিয়ে দেখবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র গণঅভ য ত থ ন কর ছ ন সরক র ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

ভাঙা হল শেখ মুজিবের বাড়ি, পোড়ানো হল হাসিনার সুধা সদন

ভারতে শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের পাল্টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ‘বুলডোজার মিছিল’ নামে ভাঙচুরের যে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল, তা ছড়াল দেশের বিভিন্ন স্থানে।

ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে এক্সক্যাভেটর ও ক্রেন নিয়ে ভেঙে ফেলা হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি। ধানমন্ডি ৫ নম্বরে শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

ভাঙচুর করা হয়েছে ঢাকার বাইরে খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, সিলেটে শেখ হাসিনার আত্মীয় এবং আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িসহ বিভিন্ন ভাস্কর্য।

আরো পড়ুন:

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বিক্ষোভ, ভাঙচুর

কারাগারে পিন্টুর মৃত্যু
রাজশাহীতে শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে বুধবার রাত ৮টার পর থেকেই বিপুলসংখ্যক মানুষ ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে জড়ো হয়। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনতার ভিড় বাড়তে থাকে।

এক পর্যায়ে জনতা গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। লাঠিসোঁটা ও শাবল হাতে ভাঙচুরে যোগ দেন অনেকে। কেউ কেউ বাড়ির দেয়াল ভাঙার চেষ্টা করেন।

এদিকে  বুধবার শেখ হাসিনার বক্তৃতা ইস্যুতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ছাত্র-জনতা। এর জের ধরেই সিলেট, খুলনা, রাজশাহীসহ দেশের কয়েকটি স্থানে রাতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বাসা ও স্থাপনায় হামলার খবর পাওয়া গেছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিল বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর থেকে বাড়িটি অনেকটা পরিত্যক্ত ছিল।

এর আগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেওয়া শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়া নিয়ে ফেসবুকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিল’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। পাশাপাশি ঘোষণা করা হয় ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচি। 

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত
  • দিনভর ভাঙচুর, বিকেলে গরু জবাই
  • ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবের বাড়ি ভাঙার নিন্দা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের
  • করব্যবস্থার জটিলতা ব্যবসায়ীদের জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা: ঢাকা চেম্বার সভাপতি
  • সারা দেশে হামলা ভাঙচুরের যত ঘটনা
  • বুলডোজারে আমু-সাদিকের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিলো ছাত্র-জনতা
  • ভাঙা হল শেখ মুজিবের বাড়ি, পোড়ানো হল হাসিনার সুধা সদন
  • অপরাধ জগতে মেরূকরণ, হত্যা হামলা বেড়েছে খুলনায়
  • বিদেশে পালাতে চেয়েছিলেন শফিকুর!