Samakal:
2025-03-09@23:04:55 GMT

নজর কাড়ছে নান্দনিক স্টল

Published: 7th, February 2025 GMT

নজর কাড়ছে নান্দনিক স্টল

কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবনানন্দ দাশ ও হুমায়ূন আহমেদ একটি টেবিলে বসে আছেন। এ রকম দুটি বিশাল ক্যানভাস একত্র করে রওশন হাবীব ও শান্ত আহমেদের আঁকা পেইন্টিং ঝুলছে দাঁড়িকমা প্রকাশনীর স্টলে। এ ছাড়া স্টলের ব্যানার ও দেয়ালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে লাল-হলুদ রঙে আঁকা জুলাই আন্দোলনের স্লোগান।

এবারের বইমেলায় এমন নান্দনিক স্টল দেখা গেছে বেশ কয়েকটি। পাঠকরা ঘুরে ঘুরে পছন্দসই বই খুঁজছেন, আর নান্দনিক স্টল পেলে দাঁড়িয়ে দেখছেন। অনেকে স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি তুলছেন। সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করছেন।

এমন এক নান্দনিক স্টল তৈরি করেছে বাতিঘর। এখানে পাঠকের ভিড় দেখা গেছে। বই কিনছে কেউ, কেউ স্টলের বাইরে ও ভেতরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছে। বিক্রয়কর্মীরা জানান, বাতিঘরের মূল ভবনের মতো করে বানানো এই স্টলে ছবি তোলার হিড়িক পড়ে থাকে সবসময়। বিশেষত সন্ধ্যার দিকে সব আলো জ্বলে ওঠার পর স্টলটির সৌন্দর্য বাড়ে। এজন্য বইয়ের পাশাপাশি ছবি তুলতে আগ্রহী হন পাঠক।

অন্যদিকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্টল ভ্রাম্যমাণ বইয়ের গাড়ির আদলে তৈরি। কেন্দ্রের মার্কেটিং অফিসার সঞ্জয় পাণ্ডে জানান, নকশাবিদ সঞ্জীব কুমার সাহা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সম্পর্কে তাঁর চিন্তার বহিঃপ্রকাশ থেকে বেশ কয়েকটি নকশা তৈরি করেন। এখান থেকে একটি নির্বাচন করেছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাঈদ। কেননা, ভ্রাম্যমাণ বইয়ের গাড়ির পাশাপাশি সারাদেশে ভ্রাম্যমাণ বইমেলার কার্যক্রম চলছে।

সম্পূর্ণ বাঁশ দিয়ে তৈরি একটি স্টল আকাশ প্রকাশনীর। বাঙালিয়ানার লোকজ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস থেকে এবারের স্টল তৈরি করেছেন বলে জানান মালিক আলমগীর সিকদার লোটন।

মেলা ঘুরে দেখা যায় অয়ন প্রকাশনী তাদের বইভিত্তিক বিভিন্ন কাটআউট ছোট ছোট করে তৈরি করে স্টলের বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়েছে। আবার পুঁথিনিলয়ের স্টলের চারটি পিলারের জায়গায় রয়েছে বইয়ের কাটআউট। এ ছাড়া মাথার ওপরে বিশাল এক বইয়ের আকৃতির কাটআউট। যেন সবাইকে জ্ঞানের ছায়াতলে নিয়ে আসার জন্য বদ্ধপরিকর।

এ রকম আরও বিভিন্ন ধরনের চিন্তার বহিঃপ্রকাশসমৃদ্ধ স্টল দেখা গেছে বইমেলায়। কেউ তাদের লোগো তুলে এনেছে স্টলে, আবার কেউ বইয়ের প্রচ্ছদের ছবি। তবে বড় স্টলগুলোতে বই দেখা ও কেনার পাশাপাশি পাঠকদের ছবি তুলতে দেখা গেছে।

জুলাই মঞ্চ

গতকাল থেকে মেলার ষষ্ঠ দিনে শুরু হয় ‘জুলাইয়ের গল্প’ শীর্ষক একটি নতুন কার্যক্রম। জুলাই অভ্যুত্থান ২০২৪-এর নিহতদের স্মরণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান। গতকাল অতিথি হিসেবে কথা বলেন নিহত আনাসের বাবা ও মা। সঞ্চালনায় ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেল সম্পাদক হাসান ইমাম।

নতুন বই

মেলায় গতকাল নতুন বই আসে ৮০টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নবান্ন প্রকাশনীর সফিকুল ইসলামের গল্পগ্রন্থ দৈত্য পাহাড়ের পিশাচ, কথাপ্রকাশের মফিজুর রহমান রুননুর সংস্কৃতিবিষয়ক গ্রন্থ বাঙালির ধর্ম সংস্কৃতি ও জাতীয়তার সংকট, শিরনী পাবলিকেশন্সের ড.

মুহাম্মাদ সিদ্দিকের ইতিহাসবিষয়ক গ্রন্থ স্পেন-পর্তুগালে মুসলিম অবদান ও তার প্রতিদান, অন্যপ্রকাশের মালেক মুস্তাকিমের কাব্যগ্রন্থ আধেক জীবন আধেক ধুলো, ঐকতান প্রকাশনীর আ হ ম আসাদুজ্জামানের কাব্যগ্রন্থ সেই তুমি ফিরে এলে।

মেলামঞ্চ

গতকাল মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ: মাহবুবুল হক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। সৈয়দ আজিজুল হকের সভাপতিত্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তারিক মনজুর। আলোচনায় অংশ নেন মাহবুব বোরহান ও মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান।

প্রাবন্ধিক বলেন, মাহবুবুল হক বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও ভাষাবিজ্ঞানী। বাংলা ভাষার ব্যাকরণ প্রণয়ন এবং বাংলা বানান সংস্কারে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন।  ভাষা ও ব্যাকরণের অনেক জটিল বিষয়কে সরল ও পরিচ্ছন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, মাহবুবুল হক বাংলা ভাষার উৎকর্ষ সাধনে নিবেদিত ছিলেন।

লেখক বলছি মঞ্চে আলোচনা করেন কবি টোকন ঠাকুর ও জাকির আবু জাফর। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি সাখাওয়াত টিপু ও জব্বার আল নাঈম। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আজগর আলীম, সৈয়দ আশিকুর রহমান প্রমুখ।

সময় পরিবর্তন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কারণে ৮ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি বইমেলা বেলা ১১টার পরিবর্তে শুরু হবে দুপুর ২টায়। এই দুই দিন মেলায় থাকবে না পূর্বঘোষিত শিশুপ্রহর।

আজ প্রথম শিশুপ্রহর

আজ বইমেলা শুরু হবে বেলা ১১টায় ও চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত মেলায় থাকবে শিশুপ্রহর। শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা সকাল সাড়ে ৮টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। এটি উদ্বোধন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুস সাত্তার। এ ছাড়া সকাল ১০টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল কর ছ ন বইম ল বইয় র গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

আশুলিয়ায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণালংকার লুট

সাভারের আশুলিয়ায় দোকান বন্ধের সময় এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে ওই ব্যবসায়ীর স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে।

রোববার রাতে আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নাম দিলীপ কুমার দাস (৪৮)। সে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের দুলাল দাসের ছেলে এবং নয়ারহাট বাজারের দিলীপ স্বর্ণালয়ের মালিক। 

জানা যায়, ডাকাতদের হামলায় আহত ওই ব্যবসায়ীকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান।

পুলিশ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানায়, স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার দাস রাতে দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় একদল ডাকাত দোকানে এসে দিলীপের হাতে থাকা স্বর্ণের ব্যাগ ধরে টান দেয় । এতে তিনি বাধা দিলে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে টাকার ব্যাগ ও সেখানে থাকা প্রায় ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা কয়েকটি ককটেল বোমা ফাটিয়ে বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ ঘটনার পর বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা সেখানে ছুটে এসে দিলীপ দাসকে দোকানের সামনে পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান।

নিহতের ফুপাতো ভাই খোকন সরকার বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে শাটার নামানোর সময় কয়েকজন ডাকাত তার হাতে থাকা ব্যাগ ধরে টান দেয়। কিন্তু দিলীপ ব্যাগ না ছাড়ায় চাপাতি দিয়ে তাকে কুপিয়ে স্বর্ণ এবং টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।

নিহতের স্ত্রী সরস্বতী দাশ বলেন, আমার স্বামী প্রতিদিন ৯টার মধ্যে বাসায় আসতো। কিন্তু ওরা আর আমার স্বামীকে বাসায় আসতে দিল না। আমি এ হত্যার বিচার চাই।

সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মেরাজুর রেহান পাভেল জানান, আহত অবস্থায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বুকে বড় ক্ষত ছিল, গালের ডানে ক্ষত ছিল এবং পিঠেও ক্ষত ছিল। আমরা চিকিৎসা শুরু করেছিলাম, স্যালাইন এবং ওষুধ চলছিল, পরে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যেই তিনি মারা যান। আমরা ধারনা করছি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি মারা গেছেন। 

আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধারে আমাদের কার্যক্রম চলছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ