ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন। তবে সরকার তাঁদের যথার্থ মূল্যায়ন করতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন করেছেন, ‘সৌদি আরবের বিমানভাড়া এত বাড়ল কেন?’

উড়োজাহাজের টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন রাশেদ খাঁন। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে রাশেদ খাঁন বলেন, প্রবাসীরা গণ-অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাঁরা রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করায় হাসিনার গদি কেঁপে ওঠে। মধ্যপ্রাচ্যে ৫৭ জন প্রবাসী গ্রেপ্তারও হন; কিন্তু সরকার তাঁদের ঠিকভাবে মূল্যায়ন করেনি। সৌদি আরবের বিমানভাড়া এত বাড়ল কেন?

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘সিন্ডিকেট ধরতে না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণহত্যার বিচার করতে পারছে না। আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারকে ধরতে পারছে না। তারা এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। দ্রব্যমূল্য হুহু করে বাড়ছে।

গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখনো সচিবালয়, পুলিশ, প্রশাসন, র‍্যাব ও বিজিবিতে আওয়ামী লীগ রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এখনো আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও নিবন্ধন স্থগিত করেনি। তারা জনগণের আবেগ নিয়ে খেলছে। এভাবে চলতে থাকলে তারা ব্যর্থ হবে। আর সরকার ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে।

মানববন্ধনে গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও উচ্চতর পরিষদের সদস্য ফারুক হাসান দাবি করেন, উড়োজাহাজের টিকিটের দাম কমানোর জন্য ভ্রমণ কর, আবগারি শুল্ক, ল্যান্ডিং ও পার্কিং চার্জসহ সব অপ্রয়োজনীয় চার্জ প্রত্যাহার করতে হবে।

মানববন্ধনে আরও যেসব দাবি জানানো হয়, তার মধ্যে রয়েছে সাত দিনের মধ্যে উড়োজাহাজের টিকিটের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে আনতে হবে ও দাম কমাতে হবে; বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি অন্যান্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়াতে হবে; টিকিটের দাম স্থিতিশীল রাখতে একটি রেগুলেটরি বোর্ড গঠন করতে হবে।

বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও ইউরোপগামী ফ্লাইটের টিকিটের দাম চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা প্রবাসী কর্মীদের জন্য ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেছে। অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে বহু কর্মী বিদেশে যেতে পারছেন না, যা তাদের জীবিকা এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন দলটির উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, আব্দুর জাহের, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের মনজুর মোর্শেদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান এবং গণ অধিকার পরিষদ ও প্রবাসী অধিকার পরিষদের নেতারা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নারীদের ওপর সহিংসতার প্রতিবাদে নারীরা

ধর্ষণ-নিপীড়ন-সহিংসতার বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন নারীরা। এতে অংশ নেন দুই শর বেশি নারী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ‘নারী সহিংসতার বিরুদ্ধে নারী’ নামের একটি প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়। সেখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের দাবি এবং নারীর অধিকার নিশ্চিত করাসহ নানা বক্তব্য সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়ান বিভিন্ন পেশার নারীরা। মানববন্ধন শেষে গান গেয়ে এবং ‘আজাদি, আজাদি’ স্লোগান দিয়ে শোভাযাত্রার মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করেন তাঁরা।

মানববন্ধন শেষে এর আয়োজকদের দেওয়া এক বার্তায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশে নারীদের নিরাপত্তা এখন একটি প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশজুড়ে সমাজের সব স্তরের নারীদের ওপর হয়রানি, নির্যাতন, ধর্ষণ, গণপিটুনি ও সাইবার বুলিংয়ের উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটছে। এগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই; বরং এটি নারীদের বিরুদ্ধে একটি সুপরিকল্পিত সহিংসতা ও ভয় দেখানোর ধারাবাহিক প্যাটার্নের অংশ।’

বার্তায় আরও বলা হয়, এর মধে৵ ঢাকার শ্যামলীতে যৌনকর্মীদের ওপর হামলা, লালমাটিয়ায় দুই শিক্ষার্থীকে জনসমক্ষে নির্যাতন ও হয়রানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের কর্মীর এক শিক্ষার্থীকে হয়রানির ঘটনা, কক্সবাজারে হিজড়াদের ওপর হামলা, রংপুর ও জয়পুরহাটে মেয়েদের ফুটবল মাঠে আক্রমণ, আদিবাসী নারীদের ওপর অব্যাহত নিপীড়ন এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নারীদের ওপর প্রতিদিনের হয়রানি, এমনকি নিষ্ঠুর ‘মব অ্যাটাক’ (দলবদ্ধ হামলা) উল্লেখযোগ্য। নারীদের প্রতি সহিংসতার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপরও প্রতিশোধমূলক হামলা, হুমকি ও সংগঠিত ‘মব অ্যাটাক’ এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

এসব ঘটনায় সরকারের প্রতিক্রিয়া কেবল মুখের কথায় পরিণত হয়েছে অভিযোগ করে বার্তায় বলা হয়েছে, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বিবৃতিগুলো নারীদের আশ্বস্ত করার পরিবর্তে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। ভুল তথ্য, আইন ও বাস্তবতা সম্পর্কে বিভ্রান্তি তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট, যা কিনা ঘটনার বিচার না করে বরং অপরাধীদের রক্ষা করেছে।’

নারীদের এই সমাবেশ থেকে পাঁচটি দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণ, সাইবার বুলিং বন্ধ ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা এবং গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বার কাউন্সিলের ফি কমানোর দাবিতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন
  • রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস চত্বরের গাছ কাটা ও পুকুর ভরাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • ধর্ষণ নিপীড়ন নারীবিদ্বেষ রুখো
  • সারাদেশে ধর্ষণের প্রতিবাদে রূপগঞ্জে ৫ দফা দাবিতে মানববন্ধন
  • ধর্ষণের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী কণ্ঠ
  • কুবিতে ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • চাঁদাবাজিতে অসহায় খুলনার ব্যবসায়ীরা
  • মেডিকেল কলেজ বন্ধে ছাত্রদলের প্রতিবাদ
  • বাউল শিল্পীকে মারধরে জড়িতদের শাস্তি দাবি
  • নারীদের ওপর সহিংসতার প্রতিবাদে নারীরা