পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী এপ্রিলে ঢাকা সফর করতে পারেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ধরে নিচ্ছি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফর করবেন। তবে নির্দিষ্ট তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আমি মনে করি না, এই সফর এপ্রিলের আগে হবে।’ তিনি আরও বলেন, উভয় পক্ষই (সফর সম্পর্কে) এটি নিয়ে কাজ করছে। এখনো সময় আছে এবং আমরা এর মধ্যে কিছু সিদ্ধান্ত নেব।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিপূরণের বিষয়টি ঢাকা উত্থাপন করবে কি না, জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ৫৩ বছর পরেও দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত সমস্যা রয়ে গেছে এবং আলোচনার সময় এই বিষয়গুলো উত্থাপন করা হবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি এসব বিষয়ে স্থির থাকি, তাহলে কোনো পক্ষই লাভবান হবে না। আমরা অবশ্যই আমাদের স্বার্থ রক্ষা ও পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করব; কিন্তু একই সময়ে আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে অন্য যেকোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্কের মতোই দেখতে চাই। আমরা তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে নেতিবাচকভাবে দেখতে চাই না।’

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সমুদ্র যোগাযোগ ইতিমধ্যে আবার শুরু হয়েছে, যা ইতিবাচক অর্থনৈতিক সুবিধা বয়ে আনছে। আমরা এই সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা করব।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বিগত সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছিল, যা কোনো দেশের স্বার্থ রক্ষা করেনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

গত ১৬ বছরে ঘুষ-দুর্নীতি একটা ট্র্যাডিশন হয়ে গিয়েছিল: হাসনাত আবদুল্লাহ

গত ১৬ বছর দেশের এমন কোনো খাত নেই, যেখানে দুর্নীতি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার দেবীদ্বার সরকারি রেয়াজ উদ্দিন পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘গত ১৬ বছর দেশের এমন কোনো সেক্টর নেই, যেখানে দুর্নীতি হয়নি। অফিস-আদালতে ঘুষ-দুর্নীতি একটা ট্র্যাডিশন হয়ে গিয়েছিল। মন্ত্রী-এমপিরা দুর্নীতি করে করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। যাঁরা এসব কাজ করেছেন, তাঁরাও একসময় শিক্ষার্থী ছিলেন। আজকে তোমরা (শিক্ষার্থী) যেখানে বসেছ, সেখানে তাঁরাও বসেছিলেন; কিন্তু তাঁরা সঠিক শিক্ষা পাননি।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘কোনো শিক্ষকই তাঁর শিক্ষার্থীদের দুর্নীতিতে জড়ানোর অন্যায় শিক্ষা দেন না। তোমরা যারা এখানে আছ, তোমাদের নিজেদের আগে দুর্নীতিমুক্ত হয়ে সৎ মানুষ হতে হবে। যোগ্যতা থাকুক বা না থাকুক, সেটা বিষয় না। কিন্তু আগে নিজেদের ভালো মানুষ হিসেবে তৈরি করতে হবে। তোমরা যারা এসএসসি পরীক্ষা দেবে, এটি তোমাদের প্রস্তুতি পর্ব। এই প্রস্তুতি যার যত ভালো, তার সামনের পথচলা তত ভালো হবে। তোমরা যখন কোনো সমাজে যাবে, তখন কেউ তোমাদের পরিচয় করিয়ে দেবে—ঢাবির ছাত্র, বুয়েটের ছাত্র, চুয়েটের ছাত্র; তখন তোমার প্রতি অন্যদের আলাদা একটি নজর থাকবে। তোমাদের নিজেদের সেভাবে গড়ে তুলবে হবে, যোগ্য করে তুলতে হবে।’

দেশে যাঁরা দুর্নীতিবাজ আছেন, তাঁদের বেশির ভাগই শিক্ষিত উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘একটু লক্ষ করতেই দেখা যায়, আমাদের দেশে যাঁরা দুর্নীতিবাজ আছেন, তাঁরা কিন্তু শিক্ষিত। তাঁরাই একসময় বেস্ট রেজাল্ট করে ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা করেছেন। কিন্তু সঠিক শিক্ষা না পাওয়ায় তাঁরা দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। আজকে যারা এখানে আছ, তোমাদের অবশ্যই সৎ মানুষ হতে হবে। একজন রিকশাওয়ালা চাইলেও পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি করতে পারবে না। কারণ, তাঁর কাছে সেই সুযোগ নেই। কিন্তু সুযোগ না থাকার কারণে দুর্নীতি না করা আর সুযোগ পেয়ে দুর্নীতি না করার মধ্যে কিন্তু পার্থক্য রয়েছে। যিনি সুযোগ পেয়েও দুর্নীতি করেন না, তিনিই এই সমাজের সবচেয়ে ভালো মানুষ।’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মোশাররফ হোসাইনের সঞ্চালনায় ও প্রধান শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আবদুস সবুর খান, সাবেক সহকারী শিক্ষক মো. জামাল, মো. কবির, বর্তমান সহকারী শিক্ষক মো. আজিজুল ইসলাম, বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ