ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা সফল হবে না, তবে এর প্রভাব থাকবে
Published: 6th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখল এবং লোকজনকে সরিয়ে মালিকানা নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে না। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আরব দেশগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন; কিন্তু আরব দেশগুলো এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করতে জর্ডান, মিসর ও সৌদি আরবের কথা বলেছেন ট্রাম্প; কিন্তু এ দেশগুলো ট্রাম্পের পরিকল্পনায় বাদ সাধতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররাও এ পরিকল্পনার বিরোধী।
সুযোগ পেলে হয়তো অনেক ফিলিস্তিনি গাজা ছেড়ে যেতে পারেন। তবে তারপরও ১২ লাখ ফিলিস্তিনির ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে থাকবে। এসব লোকজনকে হটাতে ট্রাম্পকে তখন সেনবাহিনীর সহায়তা নিতে হবে এবং বলপ্রয়োগ করতে হবে।
২০০৩ সালে ইরাকে আমেরিকার বিপর্যয়কর হস্তক্ষেপের পর এটি যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক অজনপ্রিয় হবে।
মধ্যপ্রাচ্যে দ্বিরাষ্ট্র সমাধান সম্ভব, এই আশার এটিই হবে চূড়ান্ত পরিণতি। এক শতাব্দীর বেশি পুরোনো সংঘাতের অবসান ঘটাতে ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে না। দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ঘোরবিরোধী ইসরায়েল। দীর্ঘদিন ধরে এ নিয়ে আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে।
কিন্তু ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিক থেকে এটি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রীয় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইনেরও লঙ্ঘন করবে। যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ়ভাবে দাবি করে আসা একটি নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার বিষয়টিও ভেঙে যাবে। ইউক্রেনে রাশিয়ার এবং তাইওয়ানে চীনের আঞ্চলিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা আরও বেড়ে যাবে।
গাজা নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা সফল না হলেও তাঁর মন্তব্যের প্রভাব থাকবে। তিনি এখন আর কোনো টিভি শোর উপস্থাপক বা নজর কাড়তে চাওয়া রাজনৈতিক নবিশ নন। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। তাঁর এ মন্তব্যে স্বল্পমেয়াদি প্রভাব পড়বে ইসরায়েল ও হামাসের নাজুক যুদ্ধবিরতি চুক্তির ওপর। আরবের একটি জ্যেষ্ঠ সূত্র বলছে, এটা হবে ‘মৃত্যুঘণ্টা’।
গাজার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা নিয়ে পরিকল্পনা না থাকাটা ইতিমধ্যে এ চুক্তির একটি বড় ঘাটতি। এখন ট্রাম্প একটি প্রস্তাব সামনে এনেছেন। এটি বাস্তবায়িত না হলেও ফিলিস্তিনিদের মনে অনেক বড় চাপ সৃষ্টি করে। অন্যদিকে ইহুদি উগ্রপন্থীদের পরিকল্পনা এবং স্বপ্নকে আরও জোর দেবে। ট্রাম্পের এ পরিকল্পনায় নেতানিয়াহু ও তার সরকারের লোকজন খুশি। তারা চায় গাজা যুদ্ধ আবার শুরু হোক, যার দীর্ঘমেয়াদি উদ্দেশ্য হলো ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে ইহুদিদের বসতি স্থাপন করা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র পর
এছাড়াও পড়ুন:
হিযবুত তাহরীরের মিছিল থেকে বেশ কয়েকজন আটক
রাজধানীতে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের ‘মার্চ ফর খিলাফত’ কর্মসূচি থেকে বেশ কয়েকজনকে আটকের খবর পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের সামনের সড়কে কর্মসূচি শুরুর পর তাদের আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হিযবুত তাহরীরের সমর্থকরা মিছিল শুরু করার কিছু সময় পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে বিভিন্ন গলিতে অভিযান চালিয়ে নাসির নামে একজনসহ আরও বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। আটক নাছির যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে মিছিলে অংশ নিতে এসেছেন বলে জানান।
যদিও আটকের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, তুরস্কে খিলাফত পতনের ১০১ বছরের প্রেক্ষাপটে ‘মার্চ ফর খিলাফত’ কর্মসূচি ডাক দেয় হিযবুত তাহরীর। জুমার নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের সামনের রাস্তায় জড়ো হয় কয়েক হাজার মানুষ। ‘মুক্তির একপথ, খিলাফত খিলাফত’ স্লোগানে তারা মিছিল শুরু করেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দিলে তাদের ঠেলে হিযবুত তাহরীরের লোকজন এগিয়ে যেতে থাকে। পল্টন মোড়েও তাদের বাধা থামাতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। বিজয়নগর পানির পাম্প মোড় প্রদক্ষিণ করে পল্টনের দিকে এগোলে পুলিশ দুই রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়ে। সেই টিয়ারশেল উপেক্ষা করে মিছিলটি পল্টন ময়দানে গেলে পুলিশ তিনটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এতে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।