বগুড়া শহরের সাতমাথায় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) জেলা কার্যালয়ে হামলা, ‌ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। আজ বৃহস্পতিবার রাত পৌনে আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে শহরের প্রধান সড়কে জেলা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ও ভাঙচুর করা হয়।

স্থানীয় লোকজন জানান, একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা প্রথমে সাতমাথা টেম্পল সড়কে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। প্রথমে তালা ভেঙে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে দোতলার ছাদে হাতুড়ি দিয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। আসবাব বাইরে বের করে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ সময় শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালও ভাঙচুর করা হয়। পরে শহরের সাতমাথায় জেলা জাসদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে এবং আসবাব বাইরে বের করে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। রাত পৌনে নয়টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা স্লোগান দিয়ে কবি কাজী নজরুল ইসলাম সড়কে জেলা জাতীয় পার্টির কার্যালয় ভাঙচুর করেন। এ সময় কার্যালয়টির সাইনবোর্ড ভাঙচুর করা হয়।

এর আগে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে জেলা জজ আদালতের সামনে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেয়ালে থাকা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফলক ভাঙচুর করেন। রাত সোয়া ৯টার দিকে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ কে এম মঈন উদ্দিন বলেন, সাতমাথায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।

রাত পৌনে ১০টার দিকে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিতে বুলডোজার নিয়ে আসেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। তবে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়ার আগেই টাউন ক্লাব, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক  সুলতান মাহমুদ খানের ব্যক্তিগত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজের কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা.

.., ঢাকা...’ বলে স্লোগান দেন ছাত্র-জনতা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ক ষ ব ধ ছ ত র জনত

এছাড়াও পড়ুন:

হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ধানমন্ডিসহ সারা দেশে

জাতীয় নাগরিক কমিটি মনে করে, শেখ হাসিনার উসকানিমূলক ও বিদ্বেষপরায়ণ বক্তব্য জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ধানমন্ডিসহ সারা দেশে। শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক ও অস্থিতিশীলতামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদ জানানোর দাবি জানিয়েছে তারা।

বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিনের পাঠানো বিবৃতিতে এ কথাগুলো বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ভারত সরকারের প্রতি মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ও ওয়ারেন্টভুক্ত খুনি হাসিনা ও তাঁর সহযোগীদের সব কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দ্রুত বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের মাটিতে বসে শেখ হাসিনা যে বিদ্বেষমূলক ও অস্থিতিশীলতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হোক। সরকারকে এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে বিদেশের মাটিতে বসে কেউ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে না পারে।

বাংলাদেশের জনগণের ন্যায়বিচারের অধিকার রক্ষায় ভারত সরকারের ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা ছাত্র ও সাধারণ জনগণের প্রতি শান্ত ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই। খুনি হাসিনা ও তার দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। তারা মনে করে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি জনমনে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে, তার সমাধান কেবল দ্রুত ও সুষ্ঠু ন্যায়বিচারের মাধ্যমেই সম্ভব।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং যেকোনো অপশক্তির ষড়যন্ত্র রুখতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলে জনগণের ক্ষোভ প্রশমিত হবে এবং দেশ স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যাবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ