আওয়ামী লীগও নিষিদ্ধ হবে: লক্ষ্মীপুরে এ্যানি
Published: 6th, February 2025 GMT
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ যে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, তাতে হাসিনা নিষিদ্ধ হয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগও নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। আমরা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ছিলাম, জেল খেটেছি। সুতরাং সবাইকে নিয়ে আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য এই প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়া। এই ওয়াদা নিয়ে আমরা মাঠে নেমেছি।’
আজ বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুর পৌর শহীদ স্মৃতি একাডেমির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লক্ষ্মীপুর পৌর শহীদ স্মৃতি একাডেমি পরিচালনা কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আওলাদ হোসেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাব উদ্দিন, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ দিদার হোসেন প্রমুখ।
এ সময় শহীদ উদ্দিন চৌধুরী আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের পর অনেকেই বলেছেন আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করে দেবেন। ক্ষমা করার কোনো সুযোগ নেই। অনেকেই বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয় না কেন, একটা দলকে হুট করে নিষিদ্ধ করা যায় না। যদি বিচার হয়, এমনিতে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। সংসদে বসে জনগণের সমর্থন নিয়ে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে নিষিদ্ধ করা আমাদেরও দাবি। আমরা শুধু বিএনপির জন্য, বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য আন্দোলন করিনি। জনগণের জন্য, দেশের জন্য, শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নিরাপদ অঞ্চলেও অরক্ষিত গাজাবাসী
বাড়ি, আশ্রয়শিবির কিংবা ইসরায়েল ঘোষিত নিরাপদ অঞ্চল কোথাও যেন নিরাপত্তা মিলছে না গাজাবাসীর। গতকাল বুধবার রাতের অন্ধকারে নুসেইরাহ শরণার্থী শিবির ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষিত আল-মাওয়াসি আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত চারজন নিহতের সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
এর মধ্যে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে নিহত হয়েছেন দু’জন পুরুষ এবং গুরুতর আহত হয়েছেন সাতজন। এ ছাড়া আল-মাওয়াসি আশ্রয়কেন্দ্রে এক ব্যক্তির সঙ্গে প্রাণ গেছে এক নারী ও এক শিশুর। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার ৪৫টি স্থাপনায় হামলার কথা স্বীকার করেছে আইডিএফ। নিজেদের এক প্রতিবেদনে আলজাজিরা জানিয়েছে, গাজার কোথাও এখন নিরাপত্তা নেই। আছে শুধুই মৃত্যু আর ধ্বংস। খবর আলজাজিরা ও এএফপির
এদিকে গাজার পূর্বাঞ্চলের শুজাইয়া অঞ্চলে একাধিক ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন অন্তত ৫৫ জন। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৮০ জন। এসব হামলায় অন্তত ১০টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে এলাকাটি। জীবিত বাসিন্দারা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া নারী ও শিশুদের উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে উদ্ধারকাজ চালানোর সময় এলাকাটিতে উড়ছিল ইসরায়েলি ড্রোন। উদ্ধারকারীরা জানান, ভারী বোমায় মৃতদেহগুলো এমনভাবে ছিন্নভিন্ন হয়েছে, সেগুলো শনাক্ত করাও কষ্টকর। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৮৪৬ জনে। তবে গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৬১ হাজার ৭শর বেশি।
গাজা শহরের শুজাইয়া এলাকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চালানো ব্যাপক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, ‘ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে চলমান হত্যাযজ্ঞ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য কলঙ্ক।’ এদিকে গাজাকে ‘মৃত্যু উপত্যকা’ হিসেবে সম্বোধন করে ইসরায়েলের অবরোধ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
তিনি বলেন, ‘গাজা এখন একটি মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে এবং সেখানকার বেসামরিক জনগণ মৃত্যুর গোলক ধাঁধায় আটকে পড়েছে।’ গুতেরেসের এই মন্তব্যের আগে জাতিসংঘের ছয়টি সংস্থার প্রধানরা বিশ্বনেতাদের কাছে গাজার অধিবাসীদের জন্য জরুরি সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে এ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, গাজায় খাদ্য সরবরাহের কোনো সংকট নেই এবং গুতেরেস ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার’ করছেন।
অন্যদিকে, হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য হোসাম বদরান মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘এই যুদ্ধ চিরকাল চলতে পারে না। তাই যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো অত্যাবশ্যক।’
গাজায় ইসরায়েল খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যাপকভাবে অপুষ্টির শিকার হচ্ছে শিশুরা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৬০ হাজার শিশু অপুষ্টির ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক হুমকির কারণে ২১টি পুষ্টি কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ৩৫০ গুরুতর অপুষ্ট শিশু।