টঙ্গীতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ও তাঁর চাচার বাড়িতে ভাঙচুর, মালামাল লুট
Published: 6th, February 2025 GMT
গাজীপুরের টঙ্গীতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল ও তাঁর চাচা গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমানের বাড়িতে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করছেন স্থানীয় ছাত্র-জনতা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। রাত সাড়ে আটটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল। ভাঙচুরের একপর্যায়ে অনেকেই বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে মালামাল লুট করে। পাশাপাশি কিছু জিনিসে আগুন ধরিয়ে দেয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়াকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার রাতে ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিলের’ কর্মসূচির ডাক দেয় ‘২৪-এর বিপ্লবী ছাত্র–জনতা’। সেখানে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। এর পর থেকে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের ম্যুরাল ভাঙচুর, আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়ি ও আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে আজ সন্ধ্যার পর জাহিদ আহসান ও তাঁর চাচা মতিউর রহমানের বাড়িতে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালান ছাত্র-জনতা।
জাহিদ আহসান ও মতিউরের বাড়ি টঙ্গীর নোয়াগাঁও এলাকায়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তাঁরা আত্মগোপনে আছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, বাড়ি দুটির সামনে আজ বিকেল থেকে ঘোরাঘুরি করছিলেন স্থানীয় কিছু ছাত্র-জনতা। এর মধ্যে সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পর তাঁরা বিক্ষুব্ধ হয়ে বাড়ি দুটিতে হামলা ও ভাঙচুর চালান। একপর্যায়ে মতিউর রহমানের বাড়িতে থাকা একটি পরিবারের তিন সদস্যকে বের করে দেন।
ঘটনাস্থলে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা জানান, জাহিদ আহসান ও মতিউর রহমান এলাকায় বিভন্ন মানুষের ওপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার করেন। এসব কারণে তাঁদের ওপর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিল তাঁদের। সেই ক্ষোভের অংশ হিসেবেই বাড়ি দুটিতে আজ তাঁরা ভাঙচুর চালান। এর মধ্যে আগামীকাল বাড়ি দুটি এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্য পাঠিয়েছি। আপাতত পরিস্থিতি শান্ত আছে। বাড়ির ভেতর কিছু জিনিসে আগুন দিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ জনতা। তবে সেটি বড় হওয়ার আগেই নিভে যায়।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র রহম ন র ব ড় ত জ হ দ আহস ন ছ ত র জনত চ র কর আওয় ম সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার ও যুব অধিকার পরিষদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খানের বিরুদ্ধে ‘স্যার না বলায়’ অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ করেছেন জেলা যুব অধিকার পরিষদের নেতারা। এ–সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে পুলিশ সুপার উল্টো অভিযোগ করেন, ‘স্যার বলা, না বলা কিছু না। তাঁরা যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন, সেটি খুবই দুঃখজনক।’
আজ বুধবার দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সুনামগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি করে জেলা গণ অধিকার পরিষদ। এরপর একটি মামলার বিষয়ে কথা বলতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান যুব অধিকার পরিষদের কয়েকজন নেতা–কর্মী। পুলিশ সুপারের সঙ্গে তাঁর কক্ষে কথা বলার সময় তিনি উত্তেজিত হয়ে তাঁদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও গলাধাক্কা দিয়ে তাঁদের বের করে দেওয়ার হুমিক দেন বলে অভিযোগ করেন যুব অধিকার পরিষদের নেতারা।
জেলা গণ অধিকার পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক মোহাম্মদ হান্নান জানান, কর্মসূচি শেষে তাঁরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে প্রথমে সাক্ষাৎ করেন। পরে বেলা দুইটার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান। এর আগে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আছেন কি না, জানতে দলের সদস্য মাছুম আহমদ এসপির মুঠোফোনে কল দেন। তিনি কার্যালয়ে আছেন জেনে তাঁরা সেখানে যান। তখন কে তাঁকে ফোন দিয়েছিলেন জানতে চান এসপি। বিষয়টি নিয়ে কথার একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে তাঁদের গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, এসপি গণ অধিকারের কর্মী মাছুম আহমদকে বলছেন, ‘ফোনে কথা বলার সময় তিনি (মাছুম) যেভাবে কথা বলেছেন, ভাষা মার্জিত ছিল না। ঔদ্ধত্যপূর্ণ ছিল।’ তখন মাছুম বলেন, ‘আমি সালাম দিয়েছি, এসপি সাহেব বলেছি। কিন্তু স্যার না বলায় এখন আপনি (এসপি) রাগ করছেন। আপনি বলেন আপনাকে আমরা কী ডাকব।’
কথার একপর্যায়ে এসপি উত্তেজিত হয়ে তাঁদের বের হয়ে যেতে বলেন। তখন বিষয়টি নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল হক নুরের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান এসপি। পরে সেখানে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ পরিস্থিতি শান্ত করেন। এরপর ভিডিওতে যুব অধিকার পরিষদের নেতাদের বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করতেও শোনা যায়।
জানতে চাইলে মাছুম আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসলে স্যার না বলাতেই উনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের সঙ্গে এমন দুর্ব্যবহার করেছেন। তিনি বিএনপি করে এসেছেন। চাকরি ছাড়লে বিএনপি থেকে এমপি হতে পারবেন, এসব নানা কথা আমাদের শুনিয়েছেন। একপর্যায়ে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার কথা বলেন।’ তাঁরা পুলিশ সুপারকে সুনামগঞ্জ থেকে প্রত্যারের দাবি জানান।
জেলা গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি মো. আলী আসগর বলেন, তিনি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যাননি। একটি মামলার বিষয়ে কথা বলতে যুব অধিকারের নেতারা সেখানে যাওয়ার পর পুলিশ সুপার এমন আচরণ করেন।
পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁদের আচরণে ঔদ্ধত্য ছিল। আমি শুধু এটা বলেছি। কিন্তু তাঁরা এটাকে স্যার বলা, না বলাতে নিয়ে আমাকে উত্তেজিত করে তোলেন। এরপর আমি কিছুটা রাগান্বিত হয়ে পড়ি। পরে সবাই মিলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে, চা খেয়ে তাঁরা চলে যান। এখন ভিডিও দেখে মনে হচ্ছে, তাঁরা পরিকল্পিতভাবে এটা করেছেন। তাঁরা তো আগেও আমার এখানে একাধিকবার এসেছেন, তখন তো এই পরিস্থিতি হয়নি।’