একাত্তর ও চব্বিশের ২ শহীদের নামে নোবিপ্রবিতে ভবন
Published: 6th, February 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ মুগ্ধর নামে মেডিকেল সেন্টার ও নোয়াখালীর কৃতি সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিনের নামে অডিটোরিয়াম ভবনের নামকরণ করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) নোবিপ্রবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নোটিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি ভবন, দুইটি হল, একটি স্থাপনা ও একটি প্রকল্পের বর্তমান নাম পরিবর্তণ করে নতুন নামকরণের বিষয়ে জানানো হয়েছে।
অফিস আদেশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের ৬৪তম সভার ১৮ নম্বর আলোচ্যসূচির আলোকে নতুন নামকরণের এ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস অডিটোরিয়ামের পরিবর্তে বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন অডিটোরিয়াম, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু কর্ণারের পরিবর্তে বাংলাদেশ কর্ণার, দেশরত্ন শেখ হাসিনা সমুদ্র বিজ্ঞান ও সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের পরিবর্তে সমুদ্র বিজ্ঞান ও সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট স্থাপন শীর্ষক প্রকল্প নামকরণ করা হয়েছে।
এছাড়া মেডিকেল সেন্টারের পরিবর্তে শহিদ মুগ্ধ মেডিকেল সেন্টার, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের পরিবর্তে নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হল এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পরিবর্তে জুলাই শহিদ স্মৃতি ছাত্রী হল নামকরণ করা হয়েছে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের কথা রাখল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, প্রধান ফটকের নাম হচ্ছে শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। গত বছরের ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মারা যান। মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত তিনি আন্দোলনরত ক্লান্ত–শ্রান্ত শিক্ষার্থী ও জনতাকে পানি পান করাচ্ছিলেন। ‘ভাই, পানি লাগবে পানি’ বলে মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার দৃশ্য দেশবাসীর হৃদয় নাড়িয়ে দেয়। সেই মুগ্ধর স্মরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের নামকরণ করা হয়েছে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ’।
আগামীকাল রোববার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ উদ্বোধন করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এর আগে গত ৫ আগস্টের পরপরই নির্মাণাধীন ওই ফটকের সামনে শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ লিখে দেন শিক্ষার্থীরা। সেটিই ফটকের নামকরণ করার জন্য দাবি তুলেছিলেন তাঁরা। ‘বিজয় তোরণ’ হিসেবে ফটকটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছিল।
আগামীকালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবদুল মজিদ, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নাজমুল আহসান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হারুনর রশীদ খান, ট্রেজারার অধ্যাপক মো. নূরুন্নবী এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ও মুগ্ধের জমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান (স্নিগ্ধ)। সভাপতিত্ব করবেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো মীর মুগ্ধর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ও বর্তমান উপাচার্য মো. রেজাউল করিম। ওই সভায় উপস্থিত থেকে মীর মুগ্ধর বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান (দীপ্ত) ও জমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান (স্নিগ্ধ) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা স্মৃতিচারণ করেন।
সভায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়। ওই দাবিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় দাবি ছিল প্রধান ফটকের নাম শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া। অন্যান্য দাবির মধ্যে ছিল ১৮ জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান ও যথাযথ মর্যাদায় তা পালন করা, টিএসসির সামনে শহীদ মীর মুগ্ধর স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ ও স্মৃতিফলক নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে রাষ্ট্রের কাছে মীর মুগ্ধ হত্যার বিচার চেয়ে আবেদন এবং এই আন্দোলনে সব শহীদের স্মরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে জুলাই গণহত্যা নামে একটি স্মৃতি কর্নার করা।
পরবর্তী সময়ে মো. রেজাউল করিম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণের উদ্যোগ নেন। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৩০তম সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের নাম শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ করা হয়।