রাশিয়ায় মানবপাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত বুধবার রাতে নেপালে পালানোর সময় ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে ফাবিহা জেরিন তামান্না নামের ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির মুখপাত্র বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান। 

এতে বলা হয়, ‘চক্রটি প্রথমে ১০জনকে সৌদি আরব ওমরাহ ভিসায় পাঠায়। সেখানে তাদের ওমরাহ করানোর পর রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দেয়।’

তিনি জানান, ‘সুলতান তাদের দাস হিসেবে রাশিয়ার সৈনিকদের কাছে হস্তান্তর করে। সেখানে তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ না দিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাধ্য করে। এর আগে যুদ্ধে নাটোর সিংড়া থানার হুমায়ুন কবির নামে একজন নিহত এবং ঢাকা কেরানীগঞ্জের আমিনুল নামের একজন গুরুতর আহত হন।

তিনি জানান, পাচার হওয়া ১০ জনের মধ্যে নরসিংদীর পলাশ থানার বাসিন্দা আকরাম হোসেন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান। পরে নিজ ব্যবস্থাপনায় গত ২৬ জানুয়ারি দেশে ফিরে অন্যান্য ভুক্তভোগীর পরিবারে যোগাযোগ করেন তিনি।

জসীম উদ্দিন খান জানান, ‘গত মঙ্গলবার ‘যুদ্ধাহত’ আমিনুলের স্ত্রী ঝুমু আক্তার ঢাকার বনানী থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার দন্তের ধারাবাহিকতায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তামান্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’ 

তামান্না নিজের সম্পৃক্ততা ‘স্বীকার’ করেছে উল্লেখ করে এসপি জসীম বলেন, ‘সাধারণ মানুষদের যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রেরণা যুগিয়েছে তামান্নার ভাই তুহিন, যিনি বর্তমানে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন।’

তিনি জানান, ‘পাচার হওয়া ১০জনের আরেকটি দল বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছে। যুদ্ধ করতে বাধ্য করা হবে জেনে তারা রাশিয়ায় যেতে অস্বীকার করেছেন। ফলে তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সিআইডি তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম নবপ চ র

এছাড়াও পড়ুন:

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে থানা ঘেরাও

নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের একজন কর্মীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে থানা ঘেরাও করে প্রায় চার ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা। সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোতোয়ালি থানা ঘেরাও করে ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে আটকের দাবি জানান তাঁরা। পরে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে গ্রেপ্তারের সময় বেঁধে দিয়ে কর্মসূচি তুলে নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন সময়ে ছাত্রদল কর্মীদের ওপর হামলা ও মারধরে জড়িত থাকার অভিযোগে রোববার সন্ধ্যায় দুজনকে প্রক্টর অফিসে হস্তান্তর করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা। তাঁরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতাউল গণি। অপরজন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন। রাত নয়টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা দুজনকে কোতোয়ালি থানা–পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।

সোমবার আকরাম হোসেনকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলেন, আকরাম জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি কখনো ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের মৌখিক সম্মতি নিয়ে গণস্বাক্ষর দিয়ে থানায় আবেদন করলে পুলিশ মুচলেকা নিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেয়।

এ খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে আকরামকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার বিকেল থেকে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আকরাম ভাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। তাকে ছাত্রলীগকর্মী আখ্যায়িত করে হামলা ও হেনস্তা করা হয়েছে। সে কখনো ছাত্রলীগের পদে ছিল বা মিছিল মিটিংয়ে যেতে দেখিনি আমরা। একজন জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধাকে এভাবে ছাত্রলীগ বলে চালিয়ে দেবে, তা আমরা মেনে নিতে পারি না। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ বা মামলাও নেই, এ জন্য তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে ছাত্রলীগ কর্মী ছাড়া পেয়ে গেল। আমরা অভিযোগ দেওয়ার পরও কেন তাকে ছেড়ে দিয়েছে, এ জন্য আমরা অবস্থান নিয়েছি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত আকরামকে আটক করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশকে আহ্বান জানাচ্ছি।’

আকরাম হোসেনকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দুজন ছাত্রলীগ কর্মীকে আহত অবস্থায় প্রক্টরিয়াল বডির কাছ থেকে পেয়েছি। তারপর তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পরে থানায় নিয়ে এসেছি। দুজনের মধ্যে আতাউল গণি ছাত্রলীগের পদে থাকায় এবং অভিযোগের ভিত্তিতে চালান করে দিয়েছি। আকরামের বিরুদ্ধে আমরা ছাত্রলীগের সাথে কোনো প্রকার সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাইনি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা মব ভায়োলেন্স: শিল্পী সংঘের সভাপতি
  • ভিন্নমত দমনে চীনা শাসক গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছেন জ্যাক মা!
  • ‘শুনেছি আমার বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিল সেই বাদী থানায় আটক আছে’
  • ঈদগাঁওয়ে বজ্রপাতে লবণ শ্রমিকের মৃত্যু
  • এনসিসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হলেন আবদুস সালাম
  • ৩৬ বছর পর মায়ের খুনি বাবার মুখোমুখি ছেলে
  • রাষ্ট্র ও পুলিশ নয়, আমাকে হয়রানি করিয়েছে কাছের বন্ধুরা: জয়
  • পদ্মায় মাথাবিহীন লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা, একজন গ্রেপ্তার
  • গাজীপুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় আরো ১ জনের মৃত্যু
  • নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে থানা ঘেরাও