মেসির ছেলের ১১ গোল, রোনালদোর ছেলের ১০ গোল
Published: 6th, February 2025 GMT
সর্বকালের সেরা ফুটবলারের খেতাব নিয়ে দুই দশকের বেশি সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। এখনো বিভিন্ন রেকর্ডের জন্য লড়াই করে চলেছেন এ দুজন। তবে এর মধ্যে দৃশ্যপটে আসতে শুরু করেছে দুই ফুটবলারের সন্তানেরাও।
প্রায় কাছাকাছি সময়ে মাঠে নেমে প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসিয়েছে তারা। মেসির ছেলে থিয়াগো মেসি যেখানে দলের ১২ গোলের ১১টি দিয়েছে, রোনালদোর ছেলে ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র একই সময়ে করেছে দলের ১০ গোলের সব কটি।
২০২৩ সালে মেসি ইন্টার মায়ামিতে আসার পর তাঁর ছেলে থিয়াগোও মায়ামির বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলা শুরু করে। এর আগে একাধিকবার মাঠে নেমে ছোটদের লড়াইয়ে নিজের কারিকুরিও দেখায় মেসিপুত্র। তবে আটলান্টা ইউনাইটেডের বিপক্ষে অনূর্ধ্ব-১৩ এমএলএস কাপের ম্যাচে থিয়াগো যা করেছে, তা আগের সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুনছেলেদের ঝগড়া থামালেন বাবা মেসি২৩ অক্টোবর ২০২৪১২ বছর বয়সী থিয়াগো একাই প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছে ১১ বার। আর মায়ামি ম্যাচ জিতেছে ১২-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে। ম্যাচের ১২ মিনিটে প্রথম গোল করা থিয়াগো প্রথমার্ধেই করে ৫ গোল। আর বিরতির পর যোগ করে আরও আরও ৬ গোল। একটি গোল পেলে হয়ে যেত ট্রিপল হ্যাটট্রিকও।
অন্যদিকে কাছাকাছি সময়ে অনূর্ধ্ব-১৫–এর ম্যাচে আল নাসরের জার্সিতে মাঠে নেমে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে রোনালদোপুত্র ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র। বাবার ৪০তম জন্মদিনের প্রাক্কালে রোনালদো জুনিয়র মাঠে নেমেছিল আল ইত্তিহাদের বিপক্ষে। এই ম্যাচ অবশ্য মেসির ছেলে থিয়াগোর ছেলের ম্যাচের মতো একতরফা হয়নি।
ইত্তিহাদও খেলেছে সমানতালে। তবে শেষ পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর আল নাসর ম্যাচ জিতেছে ১০-৯ গোলে। যেখানে আল নাসরের ১০ গোলের সব কটিই এসেছে ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়রের কাছ থেকে। এদিন ম্যাচের প্রথমার্ধেই ৪ গোল করে রোনালদোপুত্র।
আরও পড়ুনরোনালদোই ইতিহাসের সেরা...কে বলছেন, রোনালদো০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আর বিরতির পর তার কাছ থেকে আসে আরও ৬ গোল। রোনালদো জুনিয়রের গোলবন্যায় মাতার ঘটনা অবশ্য আকস্মিক কিছু নয়। আগের ম্যাচে আল হিলালের বিপক্ষে আল নাসরের ৭-০ গোলের জয়ে সব গোল করেছিল রোনালদো জুনিয়রই। অর্থাৎ দুই ম্যাচ মিলিয়ে ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়রের গোল ১৭টি। অবিশ্বাস্যই বটে।
বয়সভিত্তিক দলের হয়েই মেসি-রোনালদোর পুত্রদ্বয় যেভাবে গোল করে চলেছে, সেটা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে তাদের বাবাদের কথা। তবে এই পথ ধরে মেসি–রোনালদোর পর্যায়ে পৌঁছাতে হলে অনেক লম্বা পথ পেরোতে হবে এ দুজনকে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল কর
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যবসায় প্রশাসনে পড়া ছেলেটির গোলে রিয়াল সেমিফাইনালে
লুকা মদরিচ ও এনদ্রিকের গোলে ২৫ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। লেগানেস ম্যাচে ফিরেছে বিরতির পর। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হুয়ান ক্রুজ ৩৯ মিনিটে প্রথম গোলের পর ৫৯ মিনিটে তাঁর কাছ থেকেই দ্বিতীয় গোল পেয়েছে লেগানেস।
নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যোগ করা সময়ের শুরুতে স্কোরলাইন ২-২ ছিল। রিয়ালও হন্যে হয়ে গোল খুঁজছিল। ঠিক তখনই—যোগ করা সময়ের ৩ মিনিটে—মাদ্রিদের ভিলানুয়েভা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসন ও ব্যবসায় বিশ্লেষণের ওপর ডিগ্রির খোঁজে থাকা ছেলেটি রিয়ালকে সেটাই এনে দেন যেটা তারা খুঁজছিল। গোল!
আরও পড়ুনচোটের ছোবলে ‘জরুরি অবস্থা’ রিয়ালে২২ ঘণ্টা আগেব্রাহিম দিয়াজের ক্রস থেকে হেডে গোল করে লেগানেসের মাঠে ২০ বছর বয়সী গঞ্জালো গার্সিয়ার উদ্যাপন দেখে কে! স্বপ্নপূরণের আনন্দে একবার রিয়ালের ব্যাজেও চুমু খেলেন। ২০১৪ সালে রিয়ালের বয়সভিত্তিক দলে যোগ দেওয়া গার্সিয়া মাঝে মায়োর্কার বয়সভিত্তিক প্রকল্পে চার বছর ছিলেন। ২০১৯ সালে আবারও রিয়ালের ‘লা ফাব্রিকা’য় ফিরে এ মৌসুমে স্প্যানিশ ফুটবলের তৃতীয় স্তরে সর্বোচ্চ গোল করেছেন (১৯)।
গত সপ্তাহে এক ম্যাচে ৪ গোল করা গার্সিয়া রিয়ালের হয়ে এর আগে দুই ম্যাচ খেললেও তাঁর সেরাটা বের করে নেওয়ার এটাই যে মোক্ষম সময় সেটা বুঝেছিলেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি। লেগানেসের বিপক্ষে তাই গার্সিয়ার মাঠে নামা এবং শেষ পর্যন্ত ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোলটি এল তাঁর কাছ থেকেই। কাল রাতে গার্সিয়ার গোলেই ৩-২ ব্যবধানের জয়ে কোপা দেল রের সেমিফাইনালে উঠেছে রিয়াল।
ম্যাচ শেষে গার্সিয়া বলেছেন, ‘অভিষেকের চেয়েও এই দিনটি বিশেষ কিছু। ছোটবেলা থেকে এই স্বপ্ন দেখে আসছি, (রিয়ালের হয়ে) গোল করব, আর সেটাও এত গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে সুখীর চেয়ে বেশি কিছু মনে হচ্ছে।’
গত বছরের ২২ অক্টোবর থেকে স্প্যানিশ ফুটবলে নির্দিষ্ট এক ক্লাবে একটি ধারা শুরু হয়েছিল। সেদিন বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে লুকাস ভাসকেজের গোলে ধারাটির শুরু—স্পেনের নাগরিক না, এমন খেলোয়াড়েরা রিয়ালের হয়ে টানা গোল করছিলেন। সেটি এত দিনে টানা ৬৩ গোলে উন্নীত হওয়ার পর থামল মাদ্রিদে জন্ম নেওয়া গার্সিয়ার গোলে।
আরও পড়ুনগার্দিওলার বিচ্ছেদই সিটির বাজে অবস্থার বড় কারণ, মনে করেন অঁরি১৯ ঘণ্টা আগেনিয়মিত খেলোয়াড়েরা চোট পাওয়ায় তরুণদের ওপর ভরসা রাখতে হয়েছিল আনচেলত্তিকে। কিলিয়ান এমবাপ্পে ও জুড বেলিংহাম খেলতে পারেননি। ডেভিড আলাবা, অ্যান্টনি রুডিগার এবং এদের মিলিতাওকেও চোটের কারণে পাননি আনচেলত্তি। রাউল আসেনসিও, জ্যাকোবো র্যামন, আরদা গুলের, এনদ্রিকদের মতো তরুণদের তাই মাঠে নামান রিয়ালের এ কোচ।
জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তি বলেছেন, ‘গঞ্জালো বয়সভিত্তিক দলে ফর্মে আছে। এই তরুণেরা যা করেছে, সেটা নিয়ে আমাদের সুখী থাকতে হবে। তারা ভুল করতে পারে। কিন্তু দলকে সাহায্য করেছে। তাদের আমাদের দরকার।’
ম্যাচ ২-২ গোলে সমতায় থাকতে রিয়ালের সমর্থকেরা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত দৃশ্যও দেখেছেন। রক্ষণ সামলাতে ভিনিসিয়ুস নিচে না নামায় তাঁকে বকে দেন মিডফিল্ডার লুকা মদরিচ। তখন মদরিচের সঙ্গে বাদানুবাদও হয় ভিনির।
ফেদেরিকো ভালভের্দে এগিয়ে এসে মদরিচের পক্ষ নিয়ে ভিনিকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। এ নিয়ে মদরিচ ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘ভিনির ওপর আমি রাগ করব কীভাবে? এটা ফুটবল...যেটা দেখার প্রয়োজন নেই আপনারা সেটাই দেখেন।’ আনচেলত্তি এ নিয়ে বলেছেন, ‘মদরিচ যদি এ কথা বলে থাকে তাহলে আমাদের অবশ্যই সেটাকে সম্মান করা উচিত।’