হাকিমপুরে স্থগিত হওয়া সেই নারী ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত
Published: 6th, February 2025 GMT
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় ‘তৌহিদী জনতা’র বিক্ষোভ ও বাধার মুখে স্থগিত হওয়া নারী ফুটবল প্রীতি ম্যাচটি আবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় উপজেলার ৩ নম্বর আলীহাট ইউনিয়নের বাওনা গ্রামের এক অস্থায়ী মাঠে খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। বাওনা ছাত্রকল্যাণ সমবায় সমিতি এই ম্যাচ আয়োজন করেছে। খেলা দেখতে মাঠ কানায় কানায় দর্শকে পূর্ণ ছিল।
সম্প্রতি বিক্ষোভ ও বাধার মুখে দিনাজপুর ও জয়পুরহাট জেলায় স্থগিত হওয়া নারী ফুটবল ম্যাচ আবার আয়োজনের বিষয়ে প্রেস বিবৃতি দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.
৩ নম্বর আলিহাট ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে প্রীতি ফুটবল ম্যাচে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একই ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক সানোয়ার হোসেন, উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব এনামুল হক, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান জিয়া, ফুটবল ম্যাচ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বখতিয়ার আহমেদ। দর্শকদের নজর কাড়তে লাল, নীল ও হলুদ কাপড় দিয়ে মাঠের চারপাশ সাজানো হয়েছিল। মাঠে সাধারণ দর্শকদের প্রবেশের জন্য ৫০ টাকা করে শুভেচ্ছা ফি নেয় আয়োজক কমিটি।
দিনাজপুর জেলা নারী ফুটবল একাডেমি ও রংপুর বিভাগীয় নারী দলের খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রংপুর বিভাগীয় নারী ফুটবল দল ১-০ গোলে দিনাজপুর জেলা নারী ফুটবল দলকে পরাজিত করে। দিনাজপুর দলের গোলরক্ষক ছিলেন স্বপ্না আক্তার ও রংপুর বিভাগীয় নারীর দলের গোলরক্ষক ছিলেন শাম্মি আক্তার (আশা)। উভয় দলের উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড়েরা হলেন রত্না, ইন্নিমা, তিশা, সেতু, মোসলেমা, দুলালি ও বৃষ্টি।
মাঠে নারী দর্শক সারিতে বসে খেলা উপভোগ করছিলেন তাসমিন্নাহার রিপা নামে এক নারী। খেলা চলাকালে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে খেলা দেখতে এসেছি, অনেক ভালো লাগছে। আমরা অনেক ভালোভাবে খেলাটি উপভোগ করছি।
স্বপ্না আপুর খেলা দেখে অনেক ভালো লাগছে।’ একই দর্শক সারিতে বসে থাকা অপর নারী দর্শক বললেন, ‘আমি নারীদের খেলা দেখতে আসছি, আমরাও চাই বাইরে আসতে।’
খেলার আগে রংপুর বিভাগীয় নারী দলের গোলরক্ষক ইন্নিমা বলেন, ‘গত ২৮ জানুয়ারি এই খেলা ছিল; কিন্তু খেলাটি হয়নি। আজ এ মাঠে খেলাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা অনেক আনন্দিত। আর সবাই খেলাটি দেখতে এসেছে, উৎসাহ দিচ্ছে, এতে আমরা অনেক খুশি।’
খেলা চলাকালে নারী ফুটবল প্রীতি ম্যাচের আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বখতিয়ার আহমেদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নির্দেশনায় আবারও খেলাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ধন্যবাদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ টবল ম য চ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল কর্মী নিহত
নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বালুর মাঠ এলাকায় ছুরিকাঘাতে অপূর্ব নামের এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি পঞ্চবটির বিসিক শিল্পনগরীর টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক ছিলেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত ছাত্রদলের মিছিল শেষে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রদল কর্মীরা সম্রাট নামের একজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা নিহত ও হামলাকারী দুইজনকেই ছাত্রদল কর্মী বললেও, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, হামলাকারী বিএনপির কেউ না। তাদের কর্মসূচি বানচাল করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মোহাম্মদ ইয়ামিন জানান, ধর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্রদলের মিছিলের কর্মসূচি শেষ করে তারা চাষাড়াস্থ শহীদ মিনারের পেছন দিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় তিনি দেখতে পান, পপুলারের পেছন দিকে নিহত অপূর্ব ও হামলাকারী সম্রাটের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছে। এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। এসময় তিনি অপূর্বকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখেন। পরে তার বুকে ছুরিবিদ্ধ দেখতে পান।
তিনি জানান, হামলার পরে সম্রাট পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। তাকে ছাড়িয়ে নিতে তার ভাই আসলে তাকেও গণপিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে সম্রাটকে উদ্ধার করে। এসময় অপূর্বকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ও সম্রাটকে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অপূর্বকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা মাসদাইর জামালের গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ খোকন ও নিহতের স্ত্রী সাথী আক্তার জানান, নিহত যুবক বিসিকের টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক। তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার জাবুটিয়া গ্রামে। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তারা বুঝতে পারছেন না।
হাসপাতালে সম্রাট হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, যারা হামলা করেছিল তারা চলে গেছে। তিনি শহীদ মিনারের পাশের বেইলি টাওয়ারের একটি ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারী।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, সারাদেশে ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদে ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদলের মিছিলে নিহত অপূর্ব এসেছিল। যে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তিনি বিএনপির কেউ না। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাদের কর্মসূচি বাতিল করতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।