হেলাল হাফিজসহ ১৪ ব্যক্তি ও নারী ফুটবল দল পাচ্ছে একুশে পদক
Published: 6th, February 2025 GMT
প্রয়াত কবি হেলাল হাফিজসহ ১৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল এবার রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘একুশে পদকে’ ভূষিত হচ্ছে। তাদের মধ্যে ছয়জনই মরণোত্তর পদক পাচ্ছেন।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এবার একুশে পদক পাচ্ছেন প্রয়াত কথাসাহিত্যিক শহীদুল জহির, সংগীত শিল্পী ফেরদৌস আরা, লেখক মঈদুল হাসান, চলচ্চিত্র পরিচালক আজিজুর রহমান, সংগীত শিল্পী ও শিক্ষক ওস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া, চিত্রশিল্পী রোকেয়া সুলতানা, অনুবাদক ও গবেষক নিয়াজ জামান, অভ্র ফন্টের নির্মাতা মেহেদী হাসান খান, আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন ও শহীদুল আলম, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লা ও মাহমুদুর রহমান, চট্টগ্রামের সংবাদপত্র দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পদক জয়ীদের নামের তালিকা ঘোষণা করেন।
অবশ্য ফেসবুক পেজেও বিষয়টি তুলে ধরে পোস্ট করেছেন ফারুকী। তিনি লিখেছেন, “আমরা খুবই আনন্দিত এই বছর ‘বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলকে’ একুশে পদকের জন্য বিবেচনা করা হয়েছে।”
তিনি আরো লিখেছেন, “গুণী মানুষেরা পদকের অনেক ঊর্ধ্বে। আমার মনে হয় না তারা কেউ পদকের জন্য কাজ করেন। রাষ্ট্র তাদের সম্মান জানায়। ‘আপনার অবদানের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ’ এটা বলার জন্য।”
আরো পড়ুন:
লাল, কালো, সাদার মন্ত্রে এবারের অমর একুশে বইমেলা
নিজ গ্রামের স্কুলে সংবর্ধিত একুশে পদকপ্রাপ্ত জিয়াউল হক
ভাষা ও সাহিত্যে এবার দুজনকে একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে একজন কবি হেলাল হাফিজ, যিনি গত বছর ডিসেম্বরে প্রয়াত হয়েছেন। তিনি পাচ্ছেন মরণোত্তর একুশে পদক। আরেকজন হলেন কথাসাহিত্যিক শহীদুল জহির। তার প্রকৃত নাম মো.
সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র ছুটির ঘণ্ট চলচ্চিত্রের পরিচালক প্রয়াত আজিজুর রহমানও মরণোত্তর পদক পাচ্ছেন। সংগীতে বিশেষ অবদান রাখায় এবার শিল্পী, সংগীত শিক্ষক ও সুরকার ওস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া (মরণোত্তর) এবং শিল্পী ফেরদৌস আরা একুশে পদকে ভূষিত হচ্ছেন।
শিল্পকলায় চিত্রশিল্পের জন্য রোকেয়া সুলতানা ও আলোকচিত্রে নাসির আলী মামুনকে দেওয়া হচ্ছে একুশে পদক। আর লেখক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মূলধারা ৭১ এর রচয়িতা মঈদুল হাসান পাচ্ছেন গবেষণায় ক্যাটাগরিতে।
সাংবাদিকতায় মাহফুজ উল্লা পাচ্ছেন মরণোত্তর একুশে পদক। সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারে দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এই পদকে ভূষিত হচ্ছেন।
লেখক ও অনুবাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক নিয়াজ জামান শিক্ষায়, আলোকচিত্রী ও দৃকের প্রতিষ্ঠাতা শহীদুল আলম সংস্কৃতি ও শিক্ষায়, কম্পিউটারে অভ্র ফন্টের নির্মাতা মেহেদী হাসান খান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এবং চট্টগ্রামের সংবাদপত্র দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী (মরণোত্তর) সমাজসেবায় এবার একুশে পদক পাচ্ছেন।
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার হলো স্বাধীনতা পুরস্কার। এর পরই একুশে পদক দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মর্যাদার স্থানে রয়েছে। ১৯৭৬ সাল থেকে সরকার এই পদক দিয়ে আসছে।
ঢাকা/হাসান/রাসেল/তারা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদক প চ ছ ন র রহম ন র জন য র এক শ
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হামলা চালাতে পারে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী
পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার দাবি করেছেন, আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে ভারত, এমন ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ পাকিস্তানের হাতে আছে। খবর আল জাজিরার।
আজ বুধবার ভোরে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে আতাউল্লাহ তারার অভিযোগ করে বলেছেন, “ভারত গত সপ্তাহের পহেলগামে হামলাকে ‘মিথ্যা অজুহাত হিসেবে’ ব্যবহার করে পাকিস্তানে সম্ভাব্য আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করছে।”
মন্ত্রী তার দাবির সমর্থনে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদান করেননি এবং ভারত সরকার তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।
আরো পড়ুন:
‘আমি যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছি, সে দেখতে চাকরানীর মতো’
পহেলগাম হামলা: প্রতিশোধ নিতে সামরিক বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিলেন মোদি
তারার ‘এক্স’ পোস্টে বলেছেন, “যেকোনো আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেওয়া হবে। এই অঞ্চলে যেকোনো গুরুতর পরিণতির জন্য ভারত সম্পূর্ণরূপে দায়ী থাকবে।”
এর আগে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ আসিফও রয়টার্সকে বলেছিলেন, পাকিস্তানে ভারতের হামলা ‘আসন্ন’ ইসলামাবাদ অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
আসিফ বলেন, “ইসলামাবাদ উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। তবে, আমাদের অস্তিত্বের প্রতি সরাাসরি হুমকি সৃষ্টি হলে আমরা পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করব।”
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগ্রামে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে পাকিস্তান পরোক্ষাভাবে জড়িত থাকার কথা ভারত বলার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।
দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে এটি ছিল সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হামলাকারীদের কঠোর শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি ছায়া সংগঠন হিসেবে ধারণা করা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এক বিবৃতিতে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
কিন্তু ইসলামাবাদ ঘটনার সঙ্গে কোনো ভূমিকা অস্বীকার করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
পহেলগ্রামে হামলার ঘটনার পর, প্রতিবেশী দেশ দুটি একে অপরের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ভিসা বাতিল এবং ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য পাকিস্তানি আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ভারত সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত ঘোষণা করেছে।
এই পদক্ষেপের ফলে পাকিস্তানে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে এবং পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, তারা নয়াদিল্লির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ৭৪০ কিলোমিটার (৪৬০ মাইল) বাস্তব সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর গত কয়েকদিন ধরে গুলি বিনিময়ের ঘটনাও ঘটছে। উত্তেজনা কমানোর জন্য দুই পক্ষকে আন্তর্জাতিকভাবে আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশকে একটি ‘দায়িত্বশীল সমাধান’ এর দিকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা উভয় পক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি এবং ... তাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ না করার জন্য বলছি।”
মুখপাত্র আরো বলেন, “রুবিও মঙ্গলবার বা বুধবার ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে কথা বলবেন এবং অন্যান্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীদেরও একই কথা বলতে উৎসাহিত করবেন।”
জাতিসংঘ বলেছে, মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্করের সাথে কথা বলেছেন এবং ‘এমন সংঘর্ষ এড়াতে প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন যার পরিণতি দুঃখজনক হতে পারে’।
ঢাকা/ফিরোজ