Narayanganj Times:
2025-02-06@18:15:51 GMT

নিস্তব্দ হোয়াইট চ্যাপেল

Published: 6th, February 2025 GMT

নিস্তব্দ হোয়াইট চ্যাপেল

আমার বসবাস লস এঞ্জেলেস। ২০১২ সাল থেকে এখানে আছি, মাঝে মধ্যে বাংলাদেশে যাওয়া হয় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। আমার ভাইয়ের ছেলে তানভীর, তার স্ত্রী অনামিকা তার একমাত্র কন্যা তানিশা ও লেভেলে পড়াশুনা করছে। অনামিকা ওকালতি করছে আর তানভীর একটা নামি দামী মশলার কোম্পানীতে ম্যানেজার পদে কর্মরত। 


সম্প্রতি তানভীর বার্মিংহামে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ী ক্রয় করেছে, সেই বাড়ী দেখার জন্য আমার ভাই মাজুম ও তার স্ত্রী পারভীন বাংলাদেশ থেকে বেড়াতে এসেছে। বেশ কিছুদিন থাকবে। আমার অন্যান্য আত্মীয় স্বজনও থাকে। কেউ ম্যানচেস্টার কেউ হোয়াইট চ্যাপেল, কেউ রোমফোর্ড বিভিন্ন স্থানে। হঠাৎ এক দিন অনামিকা কল করে বললো আমাকে বার্মিংহাম বেড়াতে যেতে। মাজুমদেরও বাংলাদেশে ফেরার সময় হয়ে গেছে। গেলে দেখা হতো। তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলাম যাবো। আমার মেয়ে মুক্তাকে সঙ্গে নিয়ে যাবো। 


৫ই মে, LAX এয়ারপোর্ট থেকে BHX এয়ারপোর্ট রওয়ানা হই। ১০ ঘন্টার জার্নি। যথাসময়ে বার্মিংহাম এয়ারপোর্টে পৌঁছে যাই, তানভীর আমাদের তুলে নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। লন্ডনের আকাশ প্রায়শঃই মেঘাচ্ছন্ন থাকে। বছরের অর্ধেক সংখ্যক দিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকে। আবার এই বৃষ্টি এই রোদ এমন ও হয়। সন্ধ্যা নেমেছে। আমরা আধা ঘণ্টার মধ্যে বাড়ীতে পৌঁছালাম। তখন ঘড়িতে সন্ধ্যা ৭:১৫। বাড়ী পৌঁছে আপনজনকে দেখে খুশিতে, আবেগে আপ্লুত হলাম ও জড়িয়ে ধরলাম। মুহুর্তে খুশির বন্যা বয়ে গেল। সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেলো। প্রশান্তি নেমে এলো। চোখ জুড়ালো, মন জুড়ালো। ইতোমধ্যে তানিশার বান্ধবী ইফরা তার মাকে নিয়ে আসলো তানিশার বাড়ীতে।


আমার ভাইকে বিদায় জানাতে। এর মধ্যে ইফরার মায়ের সঙ্গে আর পারভীনের সঙ্গে বেশ সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। আমাদের সঙ্গে পরিচয় হলো। কথা হলো। ওরা পাকিস্তানি। সবাই আমরা একত্রে ডিনার করলাম। অনামিকা অনেক কিছু রান্না করেছিল। ফিশ বেইক করেছিল, মাটন, রাইস, সালাদ, ডাল এবং গন্ধরাজ লেবু। খাওয়ার শেষে চিজ কেক খেলাম। গল্প হলো। মাজুমদের বাংলাদেশে যাবার মাত্র দুই দিন বাকি। ইফরা বিদায় নেবার জন্য তৈরী হলো। যাবার সময় পারভীনের হাতে একটি গিফট তুলে দিল। তারপর বিদায় নিয়ে চলে গেল। আমি ওদের বিদায় পথে তাকিয়ে ছিলাম আর ভাবছিলাম আর হয়তো কোনদিন ওদের সাথে দেখা হবে না। উপরের তলায় আমাদের দুইটি রুম বরাদ্দ ছিল। আমরা আরামে ঘুমালাম। 


৭ই মে, সকালের আকাশ মেঘলা। বৃষ্টি নাই। আলো ছায়া অবস্থা। এমন আবহাওয়ায় বেড়াতে ভালই লাগে। আমরা প্রাতঃ কালীন নাশতা সেরে প্ল্যান অনুযায়ী উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের বার্থ প্লেস দেখতে যাবো। তাই রেডি হয়ে যাই। আমরা সকলেই একত্রে তানভীরের সঙ্গে গেলাম। উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের জন্ম হয়েছিল এপ্রিল ২৩, ১৫৬৪ সাল। তার জন্ম ও বেড়ে উঠা স্টেটফোর্ড অব অ্যাভন। আমরা ঠিক এই জায়গাই আসলাম। তিনি একজন অভিনেতা, নাট্যকার এবং কবি ছিলেন। তাকে ইংল্যান্ডের জাতীয় কবি বলা হয়। তিনি ইংরেজী ভাষার সর্ব শেষ্ঠ সাহিত্যিক। তার রচনা গুলোর মধ্যে ১৫৪টি সনেট, দুটি দীর্ঘ আখ্যান মূলক কবিতা, তিনি আর ও যৌথভাবে কবিতা লিখেছিলেন। তার শ্রেষ্ঠ বই গুলো যেমন: 
১। জুলিয়াস সিজার 
২। রোমিও জুলিয়েট 
৩। ম্যাক বেথ 
৪। হ্যামলেট 
৫। কিৎলেয়ার ইত্যাদি। তাঁর পিতার নাম উইলিয়াম জন শেক্সপিয়ার। তাঁর মা ছিলেন মেরি অর্ডেন। তিনি এক ধনী কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।


উইলিয়াম শেক্সপিয়ার ১৮ বছর বয়সে ২৬ বছর বয়সী-অ্যানি হ্যাথাওয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর তিনটি সন্তা, যথাক্রমে কন্যা সুজানা, পুত্র হ্যামলেট ও জুডিথ নামে দুইটি যমজ সন্তান জন্ম দেন। দুর্ভাগ্য বশতঃ হ্যামলেটের মৃত্যু হয় মাত্র ১১ বছর বয়সে। সেই সময় হ্যামলেট নামে একটি বিয়োগাত্মক নাটক লেখেন। যা এখনো স্মরণীয়। তিনি প্রখ্যাত নাট্য কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। তার নাম "লর্ড চেম্বার লেইন ম্যান" নামে যা পরবর্তী কালে 'কিৎস ম্যান" পরিচিত ছিল। তিনি ১৬১৩ সনে নাট্য জগত থেকে বিদায় নেন। এবং স্ট্যাটফোর্ড প্রত্যাবর্তন করেন। উইলিয়াম শেক্সপিয়ার ২৩ এপ্রিল ১৬১৬ (৫২ বছর) বয়সে মৃত্যুবরণ করেন, স্ট্যাট ফোর্ড অব অ্যাভন ওপর উইকশায়ার ইংল্যান্ডে। 

উইলিয়াম শেক্সপিয়ার এর বার্থ প্লেস সরকার ভালই রক্ষনাবেক্ষন করে রেখেছেন। পার্কিং এর সুব্যবস্থা আছে। বিশাল জায়গা জুড়ে আধুনিকায়ন করে রেখেছেন। যে ঘরে তিনি বেড়ে উঠেছেন, সেই ঘরটি দৃষ্টি নন্দন করে সাড়িয়েছেন। তার পাশে লাইব্রেরী আছে। গিফট শপ, অর্নামেন্ট শপ, সক্ শপ, টয় শপ, ফুড শপ, কেক, কুকি, চিপস, ড্রিংস ইত্যাদি আছে। বিভিন্ন জায়গায় মানুষ সং সেজে আকর্ষণীয় সাজে বসে, দাঁড়িয়ে, ট্যুরিষ্টদের আনন্দ দেয়ার চেষ্টা করছে। প্রতিদিন হাজার ট্যুরিষ্ট ছবি তুলছে। আমরাও ছবি তুললাম।

ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় পার্কের মতো বসার ব্যবস্থা আছে। আমরা কেক, কুকি, চিপস ড্রিংস পাকা বেঞ্চের মতো আছে সেখানে বসে খেলাম। চারিদিক অবলোকন করছিলাম। কেউ গান করছে, কেউ গাড়িতে করে বাদ্যযন্ত্র, ড্রাম বাজিয়ে গান করছে দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার জন্য। অদ্ভুত রোমাঞ্চকর অবস্থা। খুবই চমৎকার। সেখানে পস মেশিন আছে। সে মেশিনের সাহায্যে টাকা তোলা যায়। আমাদের ঘোরা ঘুরি শেষ। এখন বাসায় ফেরার পালা। তানভীর পার্কিং লটে এসে আমাদের গাড়ীতে তুলে নিল।

রাঙায় প্রাকৃতিক দৃশ্য, গাছপালা, বাড়ীঘর ও বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটি দেখতে দেখতে বাড়ী চলে আসি। সন্ধ্যায় তানভীরের বাড়ীর কাছেই এক রেস্টুরেন্ট আছে। সেখানে ডিনার খেতে যাবো। পায়ে হেঁটে-পাঁচ মিনিটের রাস্তা। পরিবেশ খুবই সুন্দর। একটা কর্নারে দোলনার মতো ব্যবস্থা আছে দোল খাওয়া যায়। চারিদিকে ফুল দিয়ে সাজারো। আমরা বসে দাঁড়িয়ে ছবি তুললাম। তারপর খাবার টেবিলে গিয়ে বসলাম। মেন্যু ছিল- চিকেন স্টেক, মেশ পটেটো, পেরি পেরি বার্গার, বিবি কিউ বার্গার, নাচোস, কেবাবিশ, রাইস, ড্রিংস ইত্যাদি। খাওয়া দাওয়া সেরে বাসায় চলে আসি। তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে। কারণ প্ল্যান আছে পরের দিন সকাল দশটায় ম্যানচেস্টার যাবো। আমার কাজিন বাবুর বাসায়। সেখানে আমার ফুপু থাকে। তিনি অসুস্থ্য। হাসপাতালে ভর্তি। লাং এ পানি এসেছে। সার্জারি লাগবে। একটি টিস্যু ফেলে দিতে হবে। তাকেও দেখতে যাবো। আরও আত্মীয় আছে তারা বাবুর বাসায় আসবে। দেখা হবে। ইনশাআল্লাহ। 


৮ই মে ভোরের আকাশ পরিষ্কার ঝকঝকে, আবহাওয়া ছিল রৌদ্রময়। তানভীর আমাদের নিয়ে যাবে। আড়াই ঘণ্টার জার্নি। আকাশ, বাতাস, ঘর বাড়ী, গাছপালা, উঁচু নিচু জায়গা আর গান শুনতে শুনতে পৌঁছে যাই। বাড়ীটি খুবই সুন্দর সাজানো গোছানো। বাবুর স্ত্রীর পুরান ঢাকার মেয়ে। ওর তিনটি কন্যা সন্তান। আমার ফুপুর মেয়ে মনিষা ওর দুইটি কন্যা সন্তান। স্কুল টিচার। ওরা কাছেই থাকে। আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য এসেছে। দেখা হলো, কথা হলো। তারপর বাবু আমাদের নিয়ে গেলো হাসপাতাল। বাড়ীর কাছেই ম্যানচেস্টার হাসপাতাল। বিরাট হসপিটাল। লিফটে ৫ তলায়। আমাদের দুই জন করে কেবিনে ঢুকার অনুমতি দিল। ফুপু অধির আগ্রহে উৎসুক দৃষ্টিতে বসে আছে। ভিতরে গেলাম পা ঝুলিয়ে বসে আছে দরজার দিকে মুখ করে। আমাদের দেখে প্রাণ খোলা হাসি দিল। দেখে মনে হলো তার কোন রোগ নাই। সামান্য কথা হলো। অন্যদেরও সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হলো। একত্রে ছবি তুললাম। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বাসার দিকে রওয়ানা হলাম। গুড়ি, গুড়ি বৃষ্টি পড়ছিল। গাড়ীতে বসে ফুপুর কথা ভাবাছিলাম আর সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছিলাম। তিনি যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে যান। বাবুর স্ত্রী অনেক আইটেম রান্না করেছিল। এতো সুন্দর আপ্যায়ন আমি কোনদিনও ভুলবনা।

মেন্যু ছিল দেশীয় খাবার- বাচ্চি, চিকেন রোস্ট, নারিকেল চিংড়ি, ফিশ, মাটন, ভেজি। ডেজার্ট ছিল মিষ্টি দই, পায়েশ, বাখলাবা, গাওয়া, খেজুর। তারা সম্প্রতি মক্কা গিয়ে ছিল ওমরা হজ্জব পালন করতে সেখান থেকে খেজুর, অজোয়া খেজুর, গাওয়া খাওয়ার জন্য সুন্দর ডিজাইনের ছোট কাপ খুবই দৃষ্টিনন্দন। কিনে এনেছিলো, গাওয়া বানানো শিখে এসেছে। সেই সুন্দর কাপে আমাদের গাওয়া খাওয়ালো। ওদের প্রতিটা রান্না মজা ছিল। ভেবে অবাক হই কি ভাবে অল্প সময়ে এতো গুলো রান্না করলো। অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা বাসায় ফিরি। বার্মিং হাম। বাসায় ফিরে দেখি অনামিকার কিছু ফ্রেন্ড নিউজার্সি থেকে বেড়াতে এসেছে। তারা হোটেলে উঠেছে। রাতে দুই বান্ধবী ওদের স্বামী ও বাচ্চা নিয়ে এসেছে। রাতে এদের দাওয়াত ছিলো তাদের সাথে খাওয়া দাওয়া হলো। তাদর সঙ্গে ভালই এনজয় করলাম। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লাম কারণ পরের দিন লন্ডন যেতে। হবে। নীলার বাসায় হোয়াইট চ্যাপেলে। নীলার এক ছেলে নাম নেহাল, স্বামী- সাঈদ, ওরা দশ তলা বিল্ডিং এর ৫ তলায় থাকে। ডুপ্লেক্স বাসা। 


৯ই মে ভোরের আকাশে রোদ দেখা যাচ্ছে। তানভীর হোয়াইট চ্যাপেলে যাওয়ার জন্য গাড়ী ও ড্রাইভার ঠিক করে দিল। সাড়ে তিন ঘণ্টার জার্নি। যাই হোক আমরা সুন্দরভাবে এসে পৌছালাম। গন্তব্যে এসে কল দিলাম সাঈদ এসে আমাদের নিয়ে গেলে পাঁচ তলায়। আমাদের দেখে নীলা খুব খুশি হলো। আমরাও খুশি হলাম। ঘুরে ঘুরে দেখলাম। বারান্দায় এসে চারিদিকের দৃশ্য খুবই মনোমুগ্ধকর। খাওয়া দাওয়া হলো, আইটেম ছিল দেশীয় খাবার যেমন: রাইস, রোস্ট, কাবাব, ফিস, মাংস ইত্যাদি। সন্ধ্যায় আমার কাজিন আসলো আলিয়ার হোসেন। আলিয়া PH.

D কমপ্লিট করে Northumbrie University, Head of the department এ জব করছে। রোমফোর্ড এলাকায় ডুপ্লেক্স বাড়ী ক্রয় করেছে। রোমফোর্ড বসবাসের জন্য উত্তম জায়গা। ও আসলো দেখা করতে। নীলা হাতে বানানো সিংগাড়া, কেক কাবাব দিয়ে আপ্যায়ন করলো। আমাদের প্ল্যান শুনে দেখলো আমরা সকালে ফ্রি আছি। তাই ও সকাল ১০টায় রেড থাকার জন্য বললো। আলিয়া এসে ওদের বাড়ীতে নিয়ে যাবে। তাই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। 


১০ই মে, সকালটা ছিল রৌদ্রময়-বাংলাদেশের মতো পাখীর ডাক শোনা যায়না। চড়ুই পাখির কিচির মিচির শব্দ নাই। গাছগাছালির মৃদু আওয়াজ নাই। সাদা মাটা সকাল। প্রাতঃরাশ সেরে আমরা রেডি হলাম। সঠিক সময়ে আলিয়ার আসলো। নীলাকে সংগে নিয়ে রওয়ানা হলাম। একটু খানি পায়ে হেটে, তারপর বাস অল্প সময়, তারপর ট্রেন অল্প সময়, ৫ মিনিট হেটে ওদের বাড়ী। ওর স্ত্রীর নাম লিপি, ওদের দুইটা বাচ্চা ১টি ছেলে এক পা দুই পা হাটে। মেয়েটি স্কুলে যায়। বাড়ীটি সুন্দর। পিছনটা আরো সুন্দর। একটি পুকুরের মতো আছে। পুকুরে শাপলা ফুল ফোটে আছে। রঙিন মাছ, ছোট বড় অনেক মাছ সাতার কাটছে, চারি দিকে ফুলের বাগান। কিছু ফুরে গাছ টবে লাগানো, কিছু মাটিতে লাগানো। বারান্দায় টেবিল চেয়ার বিছানো আছে। বাগান উপভোগ করার উত্তম জায়গা। আমরা সেখানে বসে গল্প করলাম একই মনোরম দৃশ্য দেখলাম। পুকুরের পানি চেঞ্জ করার সিস্টেম আছে। কতটুকু পানি দিতে হবে। কতদিন পর পানি বদল করতে হবে। নিয়মে চলতে হয়। ইতোমধ্যে লিলি মেয়েকে স্কুল থেকে নিয়ে আসলো। পরিচিত হলাম একত্রে খাওয়া দাওয়া হলো। আলীয়ারের ছেলে নীলাকে বেশ পছন্দ করেছিল। কোলে এসে বসে থাকালো। কোল থেকে আর নামতে চায় না। যাই হউক আমরা নীলাকে সংগে করে চলে আসি। 


আমরা যখন বাড়ীর কাছে হেটে আসছিলাম। বাড়ীর কাছে মাছের বাজার, তরকারীর বাজার, ফলের বাজার, কাপড়ের বাজার এইগুলি দেখতে দেখতে চলে আসি। বিকালে সাঈদ আমাদের নিয়ে গেলো রানী এলিহাবেথের বাড়ী দেখাতে। আমরা ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম। টেমস নদী দেখলাম। নদীর গেইট দেখলাম। বিরাট গেইট। এই নদীর পানি বেশ সুপেয়। হাজার হাজার ট্যুরিস্ট যাতায়াত করছে। বৃটিশ পার্লামেন্ট দেখলাম। সিটি সেন্টার গাড়ীতে ঘুরে ঘুরে দেখলাম। কিছুক্ষণ আগে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছিল। বৃষ্টির জন্য আমরা দ্রুত চলে আসি। রাতে সাঈদ পিৎজা নিয়ে আসলো। নীলা, নেহাল, সাঈদ আমরা একত্রে পিৎজা খেলাম। নেহালের সাথে গল্প হলো। সে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। পরের দিন হোয়াইট চ্যাপেল ত্যাগ করতে হবে। তাই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে। উপরের তলায় আমাদের থাকার ব্যবস্থা ছিল। আমরা ঘুমিয়ে গেলাম। নিস্তব্দ শহর। নিস্তব্দ হোয়াইট চ্যাপেল।

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ হ য় ইট চ য প ল আম দ র ন য় আম দ র দ ব যবস থ কর ছ ল ত রপর একত র

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে হামলা, আগুন

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। একই সময় পাশের চৌমুহনী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেনের বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক আটটার দিকে এসব ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের পৃথক দুটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

তবে এই হামলা-ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগের ঘটনার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নোয়াখালী জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম। আজ রাত সাড়ে ১০টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, চৌমুহনীর ঘটনাটি সেখানকার স্থানীয় রাজনৈতিক ঘটনা। এর সঙ্গে ছাত্রদের কোনো সম্পর্ক নেই। তা ছাড়া ছাত্রদের কর্মসূচি ছিল আজ দিনের বেলায়।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ রাত আটটার দিকে শতাধিক কিশোর-তরুণ ও যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর গ্রামের বাড়িতে হামলা চালান। হামলাকারীরা সাবেক সেনাপ্রধানের ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি জাবেদ ইউ আহমেদের দ্বিতল বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালান এবং ড্রয়িংরুমের সোফায় আগুন ধরিয়ে দেন।

প্রায় একই সময় একই ব্যক্তিরা পাশের চৌমুহনী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেন ওরফে ফয়সলের বাড়িতেও হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছেন। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, হামলাকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের মাথায় হেলমেট ও মাস্ক ছিল। তবে হামলা-ভাঙচুরের সময় উভয় বাড়িতে কেউ ছিলেন না।

খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ ও নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে হামলাকারীদের কাউকে পাননি। এ ঘটনার পর রাতে চৌমুহনী পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে তাঁর ছোট ভাই জাবেদ ইউ আহমেদের দ্বিতল ভবনে একদল লোক সন্ধ্যার পর হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছেন। তাঁরা এ সময় নিচতলার সোফায় আগুন ধরিয়ে দেন এবং কিছু মালামাল লুট করে নিয়ে যান। এ ছাড়া একই সময় সাবেক পৌর মেয়র ফয়সলের বাড়িতেও কিছুটা হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তবে হামলাকালে বাড়ি দুটিতে বাসিন্দাদের কেউ ছিলেন না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ