যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে ১০৪ জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী নিয়ে বুধবার পাঞ্জাবের অমৃতসরে অবতরণ করেছে দেশটির একটি সামরিক বিমান। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন এজেন্ডার অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে ফেরত পাঠানো হলো কাগজপত্রবিহীন অবৈধ এসব অভিবাসীকে। ফেরত পাঠানোর সময় হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে বিমানে ওঠানো হয় তাদের, যা নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে।

যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ইউএস বর্ডার প্যাট্রল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) হাত-পা বেঁধে রাখা ভারতীয়দের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। 

সংস্থাটির প্রধান মাইকেল ডব্লিউ ব্যাংকস ২৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওর ক্যাপশনে লিখেছেন, সফলভাবে বিদেশিদের ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সামরিক বিমান ব্যবহার করে এটি সবচেয়ে দূরত্বে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর ঘটনা। অবৈধ পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ব্যক্তিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি লেখেন, যদি আপনি অবৈধ পথে আসেন, আপনাকে ফেরত পাঠানো হবে।

এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, প্রায় ৪০ ঘণ্টার এই যাত্রার পুরো সময় শিশু ছাড়া ফেরত পাঠানো অবৈধ অভিবাসীদের হাতকড়া ও পায়ে শেকল পরিয়ে রাখা হয়েছিল। এমনকি খাওয়া কিংবা টয়লেট ব্যবহারেরও যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন নির্বাসিতরা।

ওয়াশিংটনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাতের মাত্র এক সপ্তাহ আগে এই নির্বাসনের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে। এ বিষয়ে সংসদে আলোচনার দাবি তুলেছে বিরোধী দল কংগ্রেস। তবে সেই দাবি আমলে না নিয়ে, বিবৃতি দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। 

এই নির্বাসনকে একটি চলমান প্রক্রিয়া দাবি করে তিনি বলেছেন, ফেরত আসা বহিষ্কৃতদের সঙ্গে ফ্লাইটের সময় যাতে কোনোভাবে দুর্ব্যবহার করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে ভারত। খবর রয়টার্স, এনডিটিভি ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে হামলা, আগুন

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। একই সময় পাশের চৌমুহনী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেনের বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক আটটার দিকে এসব ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের পৃথক দুটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

তবে এই হামলা-ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগের ঘটনার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নোয়াখালী জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম। আজ রাত সাড়ে ১০টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, চৌমুহনীর ঘটনাটি সেখানকার স্থানীয় রাজনৈতিক ঘটনা। এর সঙ্গে ছাত্রদের কোনো সম্পর্ক নেই। তা ছাড়া ছাত্রদের কর্মসূচি ছিল আজ দিনের বেলায়।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ রাত আটটার দিকে শতাধিক কিশোর-তরুণ ও যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর গ্রামের বাড়িতে হামলা চালান। হামলাকারীরা সাবেক সেনাপ্রধানের ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি জাবেদ ইউ আহমেদের দ্বিতল বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালান এবং ড্রয়িংরুমের সোফায় আগুন ধরিয়ে দেন।

প্রায় একই সময় একই ব্যক্তিরা পাশের চৌমুহনী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেন ওরফে ফয়সলের বাড়িতেও হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছেন। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, হামলাকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের মাথায় হেলমেট ও মাস্ক ছিল। তবে হামলা-ভাঙচুরের সময় উভয় বাড়িতে কেউ ছিলেন না।

খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ ও নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে হামলাকারীদের কাউকে পাননি। এ ঘটনার পর রাতে চৌমুহনী পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে তাঁর ছোট ভাই জাবেদ ইউ আহমেদের দ্বিতল ভবনে একদল লোক সন্ধ্যার পর হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছেন। তাঁরা এ সময় নিচতলার সোফায় আগুন ধরিয়ে দেন এবং কিছু মালামাল লুট করে নিয়ে যান। এ ছাড়া একই সময় সাবেক পৌর মেয়র ফয়সলের বাড়িতেও কিছুটা হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তবে হামলাকালে বাড়ি দুটিতে বাসিন্দাদের কেউ ছিলেন না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ