শৈলকুপায় ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কে রুপসা পরিবহনের চলন্ত বাসে হঠাৎ আগুন ধরে ভস্মীভূত হয়েছে। তবে নিরাপদে বাস থেকে নামতে সক্ষম হন অর্ধশতাধিক যাত্রী। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে মহম্মদপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, বাসটি ভোরে খুলনা থেকে কুষ্টিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সকাল ৯টার দিকে মহম্মদপুর এলাকায় পৌঁছালে ইঞ্জিনের ডিফেন্সার ভেঙে পড়ে। এর সঙ্গে তেলের ট্যাঙ্কার ও ব্যাটারির ঘর্ষণে আগুন লেগে যায়। পরে যাত্রীরা দ্রুত বাস থেকে নেমে যান। কিছুক্ষণের মধ্যে বাসটি পুড়ে যায়। শৈলকুপা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

বাসমালিকের পক্ষ থেকে আগুনে ৪০ থেকে ৪২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে জানানো হয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা বলছেন ক্ষতির পরিমাণ ১২ লাখ টাকা। 

ঝিনাইদহ হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক হাসান জানান, বাসে থাকা যাত্রীরা নিরাপদে নেমেছেন। এ ঘটনায় নাশকতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

শৈলকুপা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মহিউদ্দিন বলেন, পরিবহনে পর্যাপ্ত পরিমাণ আঠা ও রঙ ব্যবহার হওয়ায় আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ফোমজাতীয় পদার্থ ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বসুন্ধরায় নির্যাতনের শিকার সেই কল্পনা রোববার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছে

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী কল্পনা সাড়ে তিন মাস পর আগামী রোববার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছে। ১৩ বছর বয়সী এই কিশোরী এখন পুরোপুরি সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

গত ১৯ অক্টোবর কল্পনাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়। ওসিসির সমন্বয়ক চিকিৎসক সাবিনা ইয়াসমিন বৃহস্পতিবার বলেন, চিকিৎসাসেবা নেওয়ার পর কল্পনা এখন পুরোপুরি সুস্থ। রোববার তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। ওই দিনই তাকে আদালতের মাধ্যমে মা-বাবার কাছে দেওয়া হবে।

কল্পনার বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায়। সে শহিদ মিয়া ও আফিয়া বেগমের মেয়ে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় সাড়ে চার বছর গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত কল্পনা। সেখানেই তাকে অমানবিক নির্যাতন করা হচ্ছিল। ভাটারা থানার পুলিশের সহায়তায় ১৯ অক্টোবর রাতে বসুন্ধরার ওই বাসা থেকে কল্পনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর কল্পনা প্রথম আলোকে জানিয়েছিল, দীর্ঘদিন ধরে তাকে মারধর করার পাশাপাশি দিনে এক বেলা খাবার দেওয়া হতো। চুল সোজা করার যন্ত্র দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হতো, লম্বা বেত দিয়ে মারধর করা হতো এবং বন্দী করে রাখা হয়েছিল। মা ফোন করলেও সামনে বাড়ির মালিক দিনাত জাহান থাকতেন বলে মাকেও নির্যাতনের কথা বলতে পারত না কল্পনা।

মেয়েকে মারধরের অভিযোগে আফিয়া বেগম বাদী হয়ে বাড়ির মালিক দিনাত জাহানের বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় মামলা করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০২০) অনুযায়ী ওই মামলাটি করা হয়।

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ আজ বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কল্পনাকে বিদায় জানান। তিনি বলেন, ‘শিশু নির্যাতন নিয়ে সবাইকে শক্তিশালীভাবে কাজ করতে হবে।’

আরও পড়ুননির্যাতনে গৃহকর্মী শিশুটির চারটি দাঁত ভেঙেছে, শরীরে মারধর ও ছ্যাঁকার ক্ষত২০ অক্টোবর ২০২৪

কল্পনার পরিবারের হাতে ২৫ হাজার টাকা চেক তুলে দেন শারমীন এস মুরশিদ। তিনি বলেন, ‘কল্পনার চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার পাশাপাশি তার পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। কল্পনাকে নির্যাতনের কারণে তার শারীরিক অবস্থা অনেক খারাপ ছিল। চিকিৎসকেরা তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলেছেন। তাদের আইনি সহযোগিতাসহ যেকোনো সহযোগিতার জন্য আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি ছিল না। এখন সে পুরোপুরি সুস্থ। কল্পনা পড়াশোনা করতে চাইলে তাকে সার্বিক সহায়তা করা হবে।’

আরও পড়ুননির্যাতনে চার দাঁত হারানো গৃহকর্মী কল্পনা এবার হাসিমুখে বাড়ি ফিরবে২৯ জানুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ