অস্ট্রেলিয়ায় সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা (১০০ মিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার) অনুদান দিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দেশটির অন্যতম শীর্ষ ধনী ও উদ্যোক্তা রবিন খুদা। বিশ্ববিদ্যালয়টির বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত বিষয়ের নারী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিতে এই অনুদানের অর্থ ২০ বছর ধরে ব্যয় করা হবে। অস্ট্রেলিয়ার কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের এককালীন পাওয়া এটাই সবচেয়ে বড় তহবিল।

রবিন খুদার এই অনুদান সম্পর্কে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মার্ক স্কট বলেন, ‘আমরা গত দুই বছর এই তহবিল নিয়ে নানা পরামর্শ করেছি। এরপর রবিন খুদা বৃত্তির এই প্রকল্প তৈরি ও চালু করেন।’

অনুদানের জন্য সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়কে বেছে নেওয়ার প্রসঙ্গে রবিন খুদা বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অসাধারণ। তাঁরা চমৎকার গবেষণা প্রকল্প নিয়ে কাজ করেন।

এই অনুদানের আগেই গত বছর রাতারাতি অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ ধনী হয়ে আন্তর্জাতিক খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন রবিন খুদা। অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডেটা সেন্টার গোষ্ঠী ‘এয়ারট্রাঙ্ক’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী পরিচালক (সিইও) রবিন খুদা গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করে দেন। ১ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকার চেয়ে বেশি মূল্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ব্ল্যাকস্টোন ইনকরপোরেশন তা কিনে নেয়। এর মধ্য দিয়ে রবিন খুদা অস্ট্রেলিয়ার প্রযুক্তি দুনিয়ার সবচেয়ে তরুণ ধনকুবেরের খেতাব পান।

১৮ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসেন রবিন। তাঁর গ্রামের বাড়ি বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে। তিনি অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বাণিজ্য ও হিসাববিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।

আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়ায় ধনকুবেরের কাতারে বাংলাদেশি রবিন খুদা০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আশুলিয়ায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণালংকার লুট

সাভারের আশুলিয়ায় দোকান বন্ধের সময় এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে ওই ব্যবসায়ীর স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে।

রোববার রাতে আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নাম দিলীপ কুমার দাস (৪৮)। সে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের দুলাল দাসের ছেলে এবং নয়ারহাট বাজারের দিলীপ স্বর্ণালয়ের মালিক। 

জানা যায়, ডাকাতদের হামলায় আহত ওই ব্যবসায়ীকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান।

পুলিশ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানায়, স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার দাস রাতে দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় একদল ডাকাত দোকানে এসে দিলীপের হাতে থাকা স্বর্ণের ব্যাগ ধরে টান দেয় । এতে তিনি বাধা দিলে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে টাকার ব্যাগ ও সেখানে থাকা প্রায় ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা কয়েকটি ককটেল বোমা ফাটিয়ে বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ ঘটনার পর বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা সেখানে ছুটে এসে দিলীপ দাসকে দোকানের সামনে পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান।

নিহতের ফুপাতো ভাই খোকন সরকার বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে শাটার নামানোর সময় কয়েকজন ডাকাত তার হাতে থাকা ব্যাগ ধরে টান দেয়। কিন্তু দিলীপ ব্যাগ না ছাড়ায় চাপাতি দিয়ে তাকে কুপিয়ে স্বর্ণ এবং টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।

নিহতের স্ত্রী সরস্বতী দাশ বলেন, আমার স্বামী প্রতিদিন ৯টার মধ্যে বাসায় আসতো। কিন্তু ওরা আর আমার স্বামীকে বাসায় আসতে দিল না। আমি এ হত্যার বিচার চাই।

সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মেরাজুর রেহান পাভেল জানান, আহত অবস্থায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বুকে বড় ক্ষত ছিল, গালের ডানে ক্ষত ছিল এবং পিঠেও ক্ষত ছিল। আমরা চিকিৎসা শুরু করেছিলাম, স্যালাইন এবং ওষুধ চলছিল, পরে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যেই তিনি মারা যান। আমরা ধারনা করছি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি মারা গেছেন। 

আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধারে আমাদের কার্যক্রম চলছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ