রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় করে শেখ হাসিনার বিদেশ সফর ও ‘ভুয়া’ ডক্টরেট ডিগ্রির বিষয় অনুসন্ধানে দুদক
Published: 6th, February 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশাল বহর নিয়ে বিদেশ সফরের নামে বিপুল রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় এবং সরকারি অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ভুয়া’ ডক্টরেট ডিগ্রি সংগ্রহ করার অভিযোগ নিয়ে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক জানায়, ক্ষমতার শেষের পাঁচ বছরে শেখ হাসিনার বিদেশ সফরের জন্য ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৮টি ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছে। এসব সফরে তিনি বিদেশে গিয়ে আরও ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। অন্যদিকে সরকারি অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ভুয়া’ ডক্টরেট ডিগ্রি সংগ্রহ করার অভিযোগ নিয়ে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে।
দুদকের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো.
দুদকের মহাপরিচালক বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিদেশে সফরে গেলে বিমান বাংলাদেশের উড়োজাহাজ ভাড়া করতেন সরকারি টাকায়। বিশাল বহর নিয়ে তিনি বিদেশ সফরে যেতেন। ক্ষমতার শেষের পাঁচ বছরে তার বিদেশ সফরের জন্য ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৮টি ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছে। এসব সফরে তিনি বিদেশে গিয়ে আরও ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন।
আক্তার হোসেন বলেন, দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানের তথ্যের ভিত্তিতে বিদেশ সফরের নামে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় ও টাকার বিনিময়ে ‘ভুয়া’ ডক্টরেট ডিগ্রি নেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে অনুসন্ধান করা হবে।
দুদক সূত্র জানায়, টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে জাতিসংঘের প্রায় প্রতিটি অধিবেশনে সরকারপ্রধান হিসেবে যোগ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এ জন্য তিনি প্রতিবারই বিশাল বহর নিয়ে নিউইয়র্কে যেতেন। শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে ২২৭ জনের একটি দল নিয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশন এবং টেকসই উন্নয়নবিষয়ক জাতিসংঘের সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে ১৭৮ জন এবং ২০১৩ সালে ১৩৪ জনকে নিয়েও তিনি জাতিসংঘের সম্মেলনে গিয়েছিলেন। এসব সফরে বিপুল রাষ্ট্রীয় অর্থ খরচ হয়েছে।
দুদক সূত্র আরও জানায়, শেখ হাসিনা সরকারি অর্থ ব্যয় করে ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, বেলজিয়ামের ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয় অব ব্রাসেলস এবং ভারতের বিশ্ব ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদক ও ডিগ্রি সংগ্রহ করেছেন। বিপুল অর্থ ও জাতীয় স্বার্থপরিপন্থি চুক্তির বিনিময়ে এসব ডিগ্রি ও পদক নিয়েছেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব দ শ সফর র এসব স ক ষমত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্ষণের বিচার দাবিতে জাবির সাংবাদিকতা বিভাগের মানববন্ধন
দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন করেন তারা। এতে বিভাগটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশ নেন।
মানবন্ধনে তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে৷ সারাদেশে একের পর এক ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে চলছে। সাধারণ মানুষ বিশেষত নারী ও শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ অবস্থায় দেশে নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা খানম বলেন, ‘একজন নারী হিসেবে ধর্ষণের মতো কর্মকাণ্ড মোটেও কাম্য নয় এবং আমরা এটি সমর্থন করি না৷ মাগুরায় একটি শিশু ধর্ষণের পর গত রাতে গাজীপুরেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে৷ সবমিলিয়ে দেশের অবস্থা এখন ভয়ানক৷ শিশু থেকে বয়স্ক কেউই এখন নিরাপদ না৷ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে।’
চলমান ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হিরা খাতুন বলেন, ‘দেশে চলমান ধর্ষণ, নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আমরা ক্লাস–পরীক্ষা বর্জন করেছি। ধর্ষণ একটি ঘৃণ্য অপরাধ, যা ভুক্তভোগীকে চরম ক্ষতির মুখে ফেলে দেয়। আট বছর বয়সী শিশুর সঙ্গে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সমাজের সম্মিলিত প্রয়োগে এখনই সময় ধর্ষকের বিরুদ্ধে কার্যকরী প্রতিরোধ গড়ে তোলার।’
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল বলেন, ‘দেশের কোথাও নারীরা আসলে নিরাপত্তা পাচ্ছে না, এমনকি শিশুরাও ছাড় পাচ্ছে না৷ ফলে ধর্ষণকাণ্ডের মতো ঘটনাগুলো প্রতিনিয়ত ঘটছে৷ মূলত বিচারহীনতার কারণে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে৷ সরকারের কাছে আমরা জোর দাবি জানাই, এ ধরনের আর একটি ঘটনাও যেন না ঘটে এবং যে ঘটনাগুলো ঘটেছে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে৷'
এদিকে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে মানবন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এতে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন৷