ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশাল বহর নিয়ে বিদেশ সফরের নামে বিপুল রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় এবং সরকারি অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ভুয়া’ ডক্টরেট ডিগ্রি সংগ্রহ করার অভিযোগ নিয়ে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদক জানায়, ক্ষমতার শেষের পাঁচ বছরে শেখ হাসিনার বিদেশ সফরের জন্য ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৮টি ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছে। এসব সফরে তিনি বিদেশে গিয়ে আরও ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। অন্যদিকে সরকারি অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ভুয়া’ ডক্টরেট ডিগ্রি সংগ্রহ করার অভিযোগ নিয়ে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে। 

দুদকের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন 
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো.

আক্তার হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিদেশে সফরে গেলে বিমান বাংলাদেশের উড়োজাহাজ ভাড়া করতেন সরকারি টাকায়। বিশাল বহর নিয়ে তিনি বিদেশ সফরে যেতেন। ক্ষমতার শেষের পাঁচ বছরে তার বিদেশ সফরের জন্য ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৮টি ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছে। এসব সফরে তিনি বিদেশে গিয়ে আরও ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন।

আক্তার হোসেন বলেন, দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানের তথ্যের ভিত্তিতে বিদেশ সফরের নামে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় ও টাকার বিনিময়ে ‘ভুয়া’ ডক্টরেট ডিগ্রি নেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে অনুসন্ধান করা হবে।

দুদক সূত্র জানায়, টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে জাতিসংঘের প্রায় প্রতিটি অধিবেশনে সরকারপ্রধান হিসেবে যোগ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এ জন্য তিনি প্রতিবারই বিশাল বহর নিয়ে নিউইয়র্কে যেতেন। শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে ২২৭ জনের একটি দল নিয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশন এবং টেকসই উন্নয়নবিষয়ক জাতিসংঘের সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে ১৭৮ জন এবং ২০১৩ সালে ১৩৪ জনকে নিয়েও তিনি জাতিসংঘের সম্মেলনে গিয়েছিলেন। এসব সফরে বিপুল রাষ্ট্রীয় অর্থ খরচ হয়েছে।

দুদক সূত্র আরও জানায়, শেখ হাসিনা সরকারি অর্থ ব্যয় করে ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, বেলজিয়ামের ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয় অব ব্রাসেলস এবং ভারতের বিশ্ব ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদক ও ডিগ্রি সংগ্রহ করেছেন। বিপুল অর্থ ও জাতীয় স্বার্থপরিপন্থি চুক্তির বিনিময়ে এসব ডিগ্রি ও পদক নিয়েছেন তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব দ শ সফর র এসব স ক ষমত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মুজিব বর্ষে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের অভিযোগ: শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক, নথিপত্র তলব

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ উদ্‌যাপন ও শেখ মুজিবের ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ করে অর্থ অপচয় ও ক্ষতিসাধনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সাত সদস্যের একটি কমিটি এই অনুসন্ধান করেছে, গত জানুয়ারি মাসে এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

দুদকের অনুসন্ধান দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম। দলে আরও রয়েছেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা, এস এম রাশেদুল হাসান, এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর, মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এবং মো. আবদুল্লাহ আল মামুন।

অনুসন্ধান দলকে সংশ্লিষ্ট আইন, বিধিমালা ও কমিশনের জারি করা সার্কুলার অনুসরণ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনুসন্ধান চলাকালে কোনো ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ বা সম্পত্তি জব্দের প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট শাখাকে অবহিত করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ১০ পৃষ্ঠার কাগজপত্র অনুসন্ধান দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

গত বছরের নভেম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে ঘোষিত মুজিব বর্ষে কী ধরনের কাজ হয়েছে, কত টাকা অপচয় হয়েছে, সে বিষয়ে ডকুমেন্টেশন করার  সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল উপদেষ্টা পরিষদ। শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে সরকার ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ সময়কে মুজিব বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। তবে কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির কারণে মুজিব বর্ষের সময়কাল বাড়ানো হয়েছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুজিব বর্ষে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের অভিযোগ: শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক, নথিপত্র তলব