৭ ঘণ্টা পর শাহবাগ থেকে সরলেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা
Published: 6th, February 2025 GMT
সাত ঘণ্টার বেশি সময় পর রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে সরে গেলেন গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের মধ্যস্থতায় আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তাঁরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। পরে শাহবাগ এলাকায় যান চলাচল শুরু হয়।
অভ্যুত্থানের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচারের লক্ষ্যে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার, শহীদ ও আহত ভাইদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় শাহবাগে অবস্থান নেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। বেলা সোয়া ১১টার সময় তাঁরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা ছাড়া তাঁরা অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস এন মো.
অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে শহীদ পরিবারের কেন্দ্রীয় গ্রুপের মুখপাত্র শহীদ ইমাম হাসানের (তায়িম) ভাই রবিউল আউয়াল বলেন, তাঁরা জনভোগান্তির জন্য দুঃখিত। তিনি বলেন, ‘সারজিস আলম ভাই আসছেন (এসেছেন)। উনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন এবং সরকারে আমাদের পক্ষে যে তিনজন ভাই আছেন, ওনারা আজ আমাদের প্রতিনিধি টিমের সঙ্গে বসবেন। ইভেন (এমনকি), আগামীকাল (শুক্রবার) সারজিস ভাই, হাসনাত ভাই আমাদের শহীদ পরিবারের প্রতিনিধি পক্ষের সঙ্গে বসবেন। দেন (তারপর), রোববার মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের শহীদ পরিবারের প্রতিনিধিদল দেখা করবে। এই শর্তে আমরা আজ ব্লকেড (অবরোধ) কর্মসূচি প্রত্যাহার করলাম।’
আরও পড়ুনসাড়ে ৫ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ শহীদ পরিবারের সদস্যদের, মানুষের ভোগান্তি চরমে২ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্ষণের পর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, কলেজছাত্র গ্রেপ্তার
সাভারে কলেজপড়ুয়া এক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে গোপনে ধারণকৃত ধর্ষণভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে আয়াতুস সিয়াম (২৫) নামে এক কলেজছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ রোববার সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশিক ইকবাল। এর আগে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর (১৭) মা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর শনিবার রাতে সাভার পৌরসভার বিনোদবাইদ মহল্লায় অভিযান চালিয়ে ওই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত সিয়াম সাভার পৌরসভার বিনোদবাইদ এলাকার হামিদুল হক সুমনের ছেলে।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত আয়াতুস সিয়াম সাভার সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র এবং ভুক্তভোগী স্থানীয় একটি মহিলা কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
গত ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাভার সরকারি কলেজের বার্ষিক পিঠা উৎসবে এসে আয়াতুস সিয়ামের সঙ্গে ওই ছাত্রীর পরিচয় হয়। পরবর্তীতে সিয়াম মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন ওই ছাত্রীর সঙ্গে। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের জেরে সিয়াম তার এক বন্ধুর বাসায় ওই ছাত্রীকে নিয়ে বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং তা গোপনে মোবাইলে ধারণ করে রাখে। পরে ধারণকৃত ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে সিয়াম। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট সিয়াম তার বাসায় নিয়ে ওই ছাত্রীকে আবারও ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ওই কলেজ ছাত্রী ঘটনাটি সিয়ামের অভিভাবকদের জানালেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এরই মধ্যে সিয়াম ভুক্তভোগী ছাত্রীর সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে পরিবারের পরামর্শে অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী ছাত্রী পুনরায় সিয়ামের বাসায় বিয়ের দাবিতে কথা বলতে গেলে গোপনে ধারণ করা ধর্ষণভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে চুপ থাকার হুমকি দেয় সিয়াম।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর মা বাদী হয়ে শনিবার রাতে সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে।
সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশিক ইকবাল বলেন, গ্রেপ্তার আয়াতুস সিয়ামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং নির্যাতিত ওই ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও গ্রেপ্তারকৃতের মোবাইল ও ল্যাপটপ জব্দ করে ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।