নারী ফুটবলের টালমাটাল সময়ে এল একুশে পদক
Published: 6th, February 2025 GMT
নারী ফুটবলারদের বিদ্রোহের মধ্যেই আজ সন্ধ্যায় এল খবরটা। ২০২৫ সালের একুশে পদক পাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল।
বাংলাদেশের কোনো ক্রীড়া দলের একুশে পদক পাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। দুই যুগ আগে সংস্থা হিসেবে স্বাধীনতা পদক পেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
নারী ফুটবল দলের একুশে পদক পাওয়ার খবরে অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে দুই শব্দে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভালো লাগছে।’
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল বলতে সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা দলটিকে বোঝানো হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে গত অক্টোবরে নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখার পর বাংলাদেশ জাতীয় নারী দল আর কোনো ম্যাচ খেলেনি। এর ফলে সর্বশেষ খেলা দলটিই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়ে থাকতে পারে।
বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল দুবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে। প্রথমবার ২০২২ সালে, দ্বিতীয়বার ২০২৪ সালে।
নারী ফুটবলের জন্য সুখবরটা এসেছে এমন সময়ে, যখন দুবারের সাফজয়ী ১৬ ফুটবলারসহ জাতীয় দলের ক্যাম্পে থাকা ১৮ জন নারী ফুটবলার কোচের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাফুফে ভবনের নিচে সংবাদ সম্মেলন ডেকে সাবিনা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা, রুপণা চাকমা, সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্দারা ঘোষণা দিয়েছেন, পিটার বাটলার কোচ থাকলে তাঁরা গণ-অবসরে যাবেন। সেই ঘটনায় এখন টালমাটাল দেশের নারী ফুটবল।
সংকট সমাধানে বাফুফে গঠিত সাত সদস্যের বিশেষ কমিটি আজ রাতে বাফুফে সভাপতির কাছে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। কমিটি নিজেদের মধ্য শেষবারের মতো সন্ধ্যায় সভা করেছে বাফুফে ভবনে। সেই সভায় কী হয়, প্রতিবেদনে কী থাকে, জল্পনার মধ্যেই বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের একুশে পদক পাওয়ার ঘোষণা এল।
বাংলাদেশে এর আগে কোনো খেলার কোনো দলই একুশে পদক পায়নি। সংস্থা হিসেবে ২০০১ সালে স্বাধীনতা পদক পেয়েছিল বিসিবি। স্বাধীনতা পদকের জন্য স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল অনেকবারই আবেদন করেছিল। কিন্তু তারা এখনো পুরস্কার পায়নি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল র এক শ ফ টবল র পদক প
এছাড়াও পড়ুন:
দুই বছরেও শেষ হয়নি ৩৭ মিটার সেতুর কাজ
ধর্মপাশা উপজেলা সদরের মধ্যবাজারে অবস্থিত মাত্র ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্যের শয়তানখালী সেতুর পুনর্নির্মাণ কাজ দুই বছরেরও শেষ হয়নি। নির্মাণকাজে অবহেলা ও ধীরগতির কারণে ঠিকাদারের ওপর অসন্তুষ্ট থাকলেও এখন পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত সময়ে সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রায় ১৫-২০টি গ্রামের মানুষকে।
জানা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে অর্ধশত বছরের পুরোনো শয়তানখালী সেতুটি দেবে যেতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তখন সেতুটির ওপর দিয়ে পথচারী ও যান চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। দেবে যাওয়া পুরোনো সেতুর পরিবর্তে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। ২০২৩ সালে এলজিইডির হাওর এলাকায় উড়াল সড়ক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শয়তানখালী সেতু নির্মাণসহ ধর্মপাশা থানার সামনে থেকে বাহুটিয়াকান্দা পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০ মিটার সড়ক ও একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য ৯ কোটি ৯৭ লাখ ৮০ হাজার ৪৮০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ কাজ বাস্তবায়নে সুনামগঞ্জের মাহবুব এন্টারপ্রাইজকে ঠিকাদার নিযুক্ত করে ওই বছরের ২৬ মার্চ কার্যাদেশ দেয় এলজিইডি। একই বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সেতু ও সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। কাজে ধীরগতির অভিযোগ এনে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা বাজারের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু এতেও কোনো হেলদোল নেই ঠিকাদারের। ঠিকাদার আগের মতোই ধীরগতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ধর্মপাশা বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, শয়তানখালী সেতুটি দ্রুত নির্মাণ না হওয়ায় মধ্যবাজারের ব্যবসায়ীরা ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ব্যবসায় মন্দা দেখা দেওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
আরেক ব্যবসায়ী শামীম আহমেদ বলেন, শয়তানখালী সেতুটির কারণে দীর্ঘ চার বছর ধরে ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষ করা হলে মধ্যবাজারে ব্যবসায় গতি ফিরে আসবে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবুল মহসিন মো. মাহবুবের ব্যক্তিগত নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি। প্রকল্প সাইটে ঠিকাদারের নিযুক্ত ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, এটি রাজধানীর হাতিরঝিলের সেতুর আদলে তৈরি হচ্ছে। শুরুর দিকে মিস্ত্রি পাওয়া যাচ্ছিল না এবং গত বর্ষায় কাজ করতে না পারায় কাজ পিছিয়েছে। মাস দুয়েকের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করা যাবে বলে তিনি আশাবাদী।
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন বলেন, অত্যন্ত ধীরগতিতে সেতুটির নির্মাণকাজ চলতে থাকায় প্রকল্প পরিচালক কার্যাদেশ বাতিল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নতুন ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়ার কারণে কাজটি আরও পিছিয়ে যেতে পারে– এমন ভাবনা থেকে তা করা হয়নি। তাই ঠিকাদারকে সতর্ক করে দিয়ে আগামী ২৫ জুনের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে কার্যাদেশ বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে।