সামিরা খান মাহি বলতে মুখে এক চিলতে মিষ্টি হাসির অবয়ব ভেসে ওঠে চোখের সামনে। কেবল রূপ-লাবণ্যে নয়, অসংখ্য দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছেন নিজ অভিনয়গুণে। আসছে ভালোবাসা দিবসের কাজ নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটছে তাঁর। এরই মধ্যে শেষ করেছেন সাইদুর ইমনের পরিচালনায় ‘প্রশ্ন করো না’ নামে একটি নাটকে। এতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন আরশ খান। এ ছাড়া খাইরুল বাশারের সঙ্গে বেশ কয়েকটি নাটকে জুটি হয়ে আসছেন তিনি।
অভিনয় ক্যারিয়ারের এ সময়ে এসে কাজের ব্যাপারে একটু বেশি হিসাবনিকাশ করছেন। মাহির ভাষ্য, ‘এটি সত্যি যে, ইদানীং কাজের ব্যাপারে বেশি বাছবিচার করছি। একসময় চাইতাম ব্যাক টু ব্যাক কাজ আসুক। এখন তা চাই না। এখন কাজের মধ্যেই থাকতে চাই। তবে সেটা হতে হবে কোয়ালিটিফুল। একটা স্ক্রিপ্ট পাওয়ার পর মন থেকে প্রশ্ন আসে, কাজটি করব কি করব না। আমার কাছে কাজের টিমটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক টিমই তাড়াহুড়ো করে কাজ করতে চায়। আমি তাদের এড়িয়ে চলি। আমি সময় নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। যে টিমের কাছ থেকে এ সাপোর্ট পাব তাদের সঙ্গে আমি এখন কাজ করছি। এ সিদ্ধান্তের কারণে দর্শকদের ভালো কিছু কাজ উপহার দিতে পেরেছি।
মাহির কথাগুলো শতভাগ সত্যি তা ‘গার্লস স্কোয়াড’, ‘রাখাল বালিকা’, ‘প্রেমের পাগলামি’, ‘সুতোয় বুনেছি ফুল’, ‘রিকভারি ম্যান’, ‘লাভ স্টেশন’, ‘হাঙর’, ‘এমন যদি হতো’, ‘একদিন চাকুরী হবে’, ‘ইমোশনাল ম্যান, ‘সকাল বিকাল রাত্রি’, ‘লুঙ্গিবাজ’ কাজগুলোর দিকে চোখ রাখলেই বোঝা যায়। অভিনয় ক্যারিয়ার নাটক, টেলিছবি ও ওয়েব সিরিজ মিলিয়ে একশটির মতো কাজ করেছেন। প্রতিটি কাজেই পেয়েছেন দর্শক সাড়া।
‘ওভার ট্রাম্প’ ওয়েব সিরিজ দিয়ে ওয়েবের ভুবনে অভিষেক হয় তাঁর। প্রথম কাজ দিয়ে দর্শক প্রশংসা কুড়িছেন এ অভিনেত্রী। এরপর থেকেই ওটিটিতে তাঁর ব্যস্ততা বেড়েছে। ওটিটির কারণে অভিনয়শিল্পীরা টিভি-নাটক অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন। আপনিও কি সেই একই পথে হাঁটবেন।
মাহির উত্তর, ‘আমার কাছে মাধ্যম কোনো বড় বিষয় নয়। ওটিটিতে ভালো কাজ হলে করব। তাই বলে টিভি নাটক বাদ দিতে হবে, এটা মনে করি না।’ ‘র্যা ম্প দিয়ে মিডিয়ার ক্যারিয়ার শুরু। এরপর নাটক ও টেলিছবি ও ওয়েবে কাজ করেছেন তিনি। ভালো গল্প-চরিত্র পেলে যে কোনো সময় সিনেমায় তাঁকে দেখা যাবে বলে জানান এই অভিনেত্রী।
অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটে মাহির। একটু সময় পেলে রান্না আর জিমেই কাটে তাঁর সময়। এ ছাড়া প্রমোশনাল কনটেন্ট তৈরি করছেন তিনি। ২০১৪ সালের আরটিভির আয়োজনে ‘মডেল সার্চ’-এ নাম লিখিয়ে হয়ে যান প্রথম রানারআপ। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের অনেকেই ঝরে পড়েন। কিন্তু মাহি এগিয়ে যাচ্ছেন আপন গতিতে। এই সুহাসিনীর অভিনয় নিয়ে স্বপ্ন অনেক। সেই লক্ষ্যের দিকেই এগিয়ে চলছেন তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ মিনারে এপোলো জামালীর মরদেহে শ্রদ্ধা
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও গণসংগীত শিল্পী বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এপোলো জামালীর (আবদুল্লাহ আল মাহামুদ জামালী) প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার মরদেহ রাখা হয়।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের নেতৃত্বে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা এপোলো জামালীর মরদেহে সর্বপ্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, শ্রেণি-পেশার সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তার প্রতি সম্মান জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, গণফোরাম, বাংলাদেশ জাসদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ বাসদ-মাহবুব, স্বাধীনতা পার্টি, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদসহ রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।
এছাড়া গণসংস্কৃতি ফ্রন্ট, সংহতি সংস্কৃতি সংসদ, উদীচী, বিবর্তন, ভাসানী পরিষদ, বিপ্লবী কৃষক সংহতি, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি, বিপ্লবী যুব সংহতি, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি, আখচাষি ইউনিয়ন, বিপ্লবী পাদুকা শ্রমিক সংহতি, বিপ্লবী রিকশা শ্রমিক সংহতি, এসএসপিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সংগঠনও শ্রদ্ধা নিবেদন করে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর, শিল্পাঞ্চল কমিটি, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নাটোর, বরিশাল, দোহারসহ বিভিন্ন জেলা/উপজেলার পক্ষ থেকে এপোলো জামালীর মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এপোলো জামালীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এপোলো জামালীর অকাল প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হলো। বহুমাত্রিক সাম্যবাদী চেতনার এই শিল্পী গণমানুষের অধিকার আর মুক্তির ব্রত নিয়েই নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছেন। গণবিপ্লবের মাঝেই এপোলো জামালী বেঁচে থাকবেন।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রয়াত গুণী শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর আগে এই মহান গণসংগীত শিল্পীর সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করে পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোশরেকা অদিতি হক।
সম্মিলিত কণ্ঠে আন্তর্জাতিক সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। রায়ের বাজারে এই শিল্পীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রায়ের বাজার কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। দাফনের পর তার কবরে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে আবার পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।