ফেরেট ম্যালওয়্যার ছড়াচ্ছে হ্যাকাররা, নিরাপদ থাকবেন যেভাবে
Published: 6th, February 2025 GMT
জনপ্রিয় ইন্টারনেট ব্রাউজারের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে ক্রোম ব্রাউজার। আর তাই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বোকা বানাতে ক্রোম ব্রাউজারের হালনাগাদ সংস্করণ ব্যবহারের প্রলোভনে যন্ত্রে ‘ফেরেট’ ম্যালওয়্যার প্রবেশ করাচ্ছে একদল হ্যাকার। ম্যালওয়্যারটি যন্ত্রে প্রবেশ করেই ব্যবহারকারীর সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করে হ্যাকারদের ঠিকানায় পাঠাতে থাকে বলে জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টিনেলল্যাবস। প্রাথমিকভাবে ম্যাকবুক ল্যাপটপ ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে এ ধরনের সাইবার হামলা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সেন্টিনেলল্যাবসের তথ্য মতে, ফেরেট ম্যালওয়্যার প্রবেশ করানোর জন্য প্রথমে অনলাইনে চাকরির প্রলোভন দেখানো হয়। এরপর ভুয়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার কথা বলে ক্রোম ব্রাউজারের হালনাগাদ সংস্করণ ইনস্টলের জন্য একটি কোড পাঠায় হ্যাকাররা। কোডটি ডাউনলোড করলেই ফেরেট ম্যালওয়্যার ম্যাকবুক ল্যাপটপে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইনস্টল হয়ে যায়। এরপর গোপনে ব্যবহারকারীর সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সাইবার হামলা চালাতে থাকে।
আরও পড়ুনস্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার থাকার ৬ লক্ষণ১১ নভেম্বর ২০২৪ফেরেট ম্যালওয়্যার থেকে ম্যাকবুক ল্যাপটপ ব্যবহারকারীদের রক্ষা করতে এরই মধ্যে নিজেদের নিরাপত্তাব্যবস্থা হালনাগাদ করেছে অ্যাপল। সেন্টিনেলল্যাবসের গবেষকেরা জানিয়েছেন, ফেরেট ম্যালওয়্যারটির সহজেই যন্ত্রে থাকা নিরাপত্তা সফটওয়্যার ও স্ক্যানিং প্রক্রিয়াকে ফাঁকি দিতে পারে। আর তাই অনলাইনে নিরাপদ থাকতে হলে সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক বা অপরিচিতদের পাঠানো সফটওয়্যার ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরও পড়ুন‘ফেককল’ ম্যালওয়্যার থেকে সাবধান, ব্যাংকের নম্বরে ফোনকল করলে চলে যাচ্ছে হ্যাকারদের কাছে০৫ নভেম্বর ২০২৪প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো ফেরেট ম্যালওয়্যার শনাক্ত করা হয়। তবে নতুন করে সাইবার হামলা চালানো ফেরেট ম্যালওয়্যারটি আগের সংস্করণ থেকে বেশ ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন সেন্টিনেলল্যাবসের গবেষকেরা।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
আরও পড়ুনফোনে আড়ি পাতা অ্যাপ থাকলে বুঝবেন যেভাবে৩১ জানুয়ারি ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ র ট ম য লওয় য র ম য লওয ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল, জিয়া-জলিলের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি
১৯৭৫ সালের নভেম্বরে পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থানের মধ্যে নিহত কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীর বিক্রম হত্যাকাণ্ডের ৪৭ বছর পর করা মামলার তদন্ত শেষ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাতে তৎকালীন সেনাপ্রধান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, মেজর (অব.) মো. আবদুল জলিল ও মেজর (অব.) আসাদ উজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি জানিয়ে তাঁদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
তবে এ হত্যাকাণ্ডে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু তাহেরের (অব.) দায় পেলেও মৃত হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযোগপত্র দেননি তদন্ত কর্মকর্তা।
গত ৩০ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ঢাকা মেট্রোর পরিদর্শক সিকদার মহিতুল আলম। তাঁর এই প্রতিবেদন আদালতে গৃহীত হলে দৃশ্যত এ মামলার যবনিকাপাত হবে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর অস্থিরতার মধ্যে ৩ নভেম্বর সামরিক বাহিনীতে এক অভ্যুত্থান ঘটে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে। তখন বন্দী করা হয়েছিল তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। চার দিন পর ৭ নভেম্বর আবু তাহেরের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানে মুক্ত করা হয় জিয়াউর রহমানকে। সেদিনই দশম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট অফিসে (বর্তমানে জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণ) নিহত হন খালেদ মোশাররফ, নাজমুল হুদা ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ টি এম হায়দার।
কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা হত্যাকাণ্ডের ৪৭ বছর পর ২০২৩ সালে মামলা করেন তাঁর মেয়ে নাহিদ ইজাহার খান। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় মেজর জলিলকে। হুকুমের আসামি করা হয় জিয়াউর রহমান ও কর্নেল তাহেরকে।নাজমুল হুদা মুক্তিযুদ্ধে ৮ নম্বর সেক্টরে একটি সাবসেক্টরের অধিনায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের আগে ১৯৬৮ সালে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করেছিল, সে মামলার আসামিদের একজন ছিলেন তিনি।
৪৭ বছর পর মামলা
নাজমুল হুদা হত্যাকাণ্ডের ৪৭ বছর পর ২০২৩ সালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন তাঁর মেয়ে সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান। মামলায় মেজর (অব.) জলিলকে প্রধান আসামি করা হয়। হুকুমের আসামি করা হয় তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ও জাসদ নেতা আবু তাহেরকে।
মামলায় নাহিদ ইজাহার অভিযোগ করেন, তাঁর বাবা (নাজমুল হুদা) নিহত হওয়ার সময় তিনি ও তাঁর ভাই ছোট ছিলেন। তাঁরা বড় হয়ে বাবার কোর্সমেট, সহকর্মী ও বিভিন্ন সূত্র থেকে অনুসন্ধানে জানতে পারেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সকালে দশম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট অফিসে নাজমুল হুদার সঙ্গে অপর দুই সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফ এবং এ টি এম হায়দার অবস্থান করছিলেন। নাজমুল হুদা সকালে নাশতা করার সময় দশম ইস্ট বেঙ্গলের সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল নওয়াজেশের কাছে দ্বিতীয় ফিল্ড আর্টিলারি থেকে একটি ফোন আসে। এরপর দশম ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তারা নাজমুল হুদাসহ তিন কর্মকর্তাকে বাইরে নিয়ে যান।
গত ৩০ নভেম্বর মেজর নাজমুল হুদা হত্যা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। মামলার সঙ্গে তিনজনের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাঁদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।সিকদার মহিতুল আলম, তদন্ত কর্মকর্তাএরপর তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ও জাসদ নেতা আবু তাহেরের নির্দেশে দশম ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তা, জেসিও ও সৈনিকেরা সংঘবদ্ধভাবে ঠান্ডা মাথায় নাজমুল হুদাসহ তিনজনকে হত্যা করেন বলে এজাহারে দাবি করা হয়।
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে আসামি করে এ মামলা করার সময় নাহিদ ইজাহার সংসদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদে সংরক্ষিত আসনের সদস্য ছিলেন। বিএনপি তখন মামলার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিল, এর পেছনে সরকারের কারসাজি থাকতে পারে।
মেজর এম এ জলিল ও জিয়াউর রহমান