রাজশাহীতে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ারের বাড়িতে আগুন
Published: 6th, February 2025 GMT
রাজশাহীর বাঘায় সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের গ্রামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার আড়ানী পৌর এলাকার চকসিংগা মহল্লায় অবস্থিত বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। এ ছাড়া উপজেলার মণিগ্রাম ইউনিয়নের সাফারি গ্রামে শাহরিয়ার আলমের ট্রেনিং সেন্টারে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ৫০ থেকে ৬০টি মোটরসাইকেলে প্রায় দেড় শ লোক এসে বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক জসিম উদ্দিন এ সময় পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন এসে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁরা হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আপনারা চলে যান, তা ছাড়া আপনাদের অসুবিধা হবে।’ এরপর তারা বাড়িতে হামলা চালিয়ে দরজা-জানলা ভাঙচুর করে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তারপর পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায় তারা।
এই বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে বাঘা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন হলেও তারা প্রথমে আগুন নেভাতে আসতে পারেনি। স্থানীয় লোকজন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আগুন নেভানোর জন্য আসার প্রস্তুতি নিলে হামলাকারীরা তাঁদের বাধা দেয়। এ জন্য তাঁরা সময়মতো আগুন নেভাতে আসতে পারেননি। ততক্ষণে আগুন চারতলা বাড়ির তিন তালায় উঠে যায়।
আগুন লাগানোর প্রায় আধা ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নেভাতে শুরু করেন। প্রায় একই সময়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসে। তখন দেখা যায়, বাড়ির চারটি এসি পুড়ে গেছে। বাড়ির ২২টি ফ্যান আগুনে পুড়ে বাঁকা হয়ে গেছে। একটি ফ্যান খুলে নিচে পড়ে গেছে। দুটি জেনারেটরসহ বাড়ির আসবাবপত্র আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের বাঘা স্টেশন অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, বেলা একটার মধ্যে তারা আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এনেছেন।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম আছাদুজ্জামান বলেন, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাসার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
নোয়াখালী-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস, মেয়ে সুমাইয়া আলী ঈশিতা এবং দুই ছেলে আশিক আলী ও মাহতাব আলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎপূর্বক অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থাকায় তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সিফাত উদ্দিন তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ আলী এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎপূর্বক অবৈধ সম্পদ অর্জন, খাস জমি দখল করে ৫ তলা বাণিজ্যিক হোটেল নির্মাণ এবং সন্দেহজনক লেনদেন বা মানিলন্ডারিংসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আছে।
অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ-সংশ্লিষ্টরা সপরিবারে অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন রহিত করা প্রয়োজন।
মোহাম্মদ আলী ছাত্রজীবনে বামপন্থি রাজনীতি করতেন। পরে যোগ দেন যুবদলে। এর পর জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। তিনি ১৯৮৬ সালে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেলেও ঋণখেলাপি হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে যান। আয়েশা ফেরদাউস ২০১৪ ও ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। পরবর্তীতে সরকার পতন হলে তিনি পদ হারান।
ঢাকা/মামুন/রফিক