৩২ নম্বরে ভাঙচুর কারা করেছে, আমাদের জানা নেই: হাফিজ উদ্দিন আহমদ
Published: 6th, February 2025 GMT
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘এটি কারা করেছে, এ তথ্য আমাদের কাছে নেই। এতে সরকারের কী ভূমিকা ছিল, সেই তথ্যও আমাদের কাছে নেই। আশা করব, অল্প কিছু সময়ের মধ্যে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, কারা এ জন্য দায়ী।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেলে আমরা এ সম্পর্কে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া মিডিয়ার সামনে, জনগণের সামনে প্রকাশ করব। অপূর্ণ তথ্য নিয়ে কোনো মন্তব্য করা সঠিক নয়।’
তিনি বলেন, আমরা ধারণা করছি, এগুলো গণতন্ত্রকে ধবংস করার জন্য, আগামী দিনে গণতন্ত্রের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে সেজন্য কেউ কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে পারেন। বিশেষ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ আছে কি না তা জানার চেষ্টা করবো।
এদিকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেছেন, ধানমন্ডি-৩২ নম্বরের বাড়ি হামলা ছাত্রদলের কোনো কর্মসূচি ছিল না। এ ঘটনায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র জনতার একটি অংশ জড়িত।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের যথাযথ বিচার ও সন্ত্রাসীদের সাজা নিশ্চিত করার দাবিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনের অংশ হিসেবে ঢাকা কলেজের প্রধান শিক্ষকের কাছে স্মারক লিপি প্রদান শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের প্রতি ‘ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল’ পুনর্বিবেচনার আহ্বান বিএনপির
ভারতের লোকসভায় সদ্য পাস হওয়া বিতর্কিত ‘ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল’ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। আজ রোববার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনেল ল বোর্ডের মতো সংগঠনগুলোর মতে এই আইন ইসলামি ওয়াক্ফ ব্যবস্থার মূল চেতনার পরিপন্থী। তাদের মতে, ওয়াক্ফ বোর্ডের পরিচালনা মুসলমানদের দ্বারাই হওয়া উচিত। তারা একে মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল বলে অভিমত দিয়েছে।
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ইসলামি দানের প্রাচীন ব্যবস্থা ওয়াক্ফ। আইনটির বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি যে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা এবং বৈষম্যমূলক আচরণের চেষ্টা করা হয়েছে এই আইনে। ভারতের মুসলমানরা এবং বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন মুসলিম ওয়াক্ফ (সংশোধন) বিল-২০২৪ অসাংবিধানিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।’
ভারতের জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২০ কোটি মুসলমানের ধর্মীয় ঐতিহ্য, অধিকার, সংস্কৃতি ও স্বার্থবিরোধী এই আইনকে অপব্যবহারের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে, যা ইসলামি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যাপক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন বিএনপির নেতা সালাহ উদ্দিন আহমদ।
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ভারতে ওয়াক্ফ বোর্ডগুলোর অধীন প্রায় ১০ লাখ একর সম্পত্তির মধ্যে বেশির ভাগই ব্যবহৃত হয় মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও এতিমখানার মতো জনকল্যাণমূলক কাজে। নতুন আইনে পরিচালনা বোর্ডে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, যার ফলে মুসলিম নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে।
সালাহ উদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকারে হস্তক্ষেপের কারণে এবং বৈষম্যমূলক আচরণের ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে—এ রকম কোনো পদক্ষেপ রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে গ্রহণ করা সমীচীন নয় বলে আমরা মনে করি।’
ভারতের লোকসভায় পাস হওয়া বিলে ওয়াক্ফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্যের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ভারতে অন্য ধর্মাবলম্বীদের এ–জাতীয় বোর্ডে অথবা কোনো আইনি সংগঠনে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অন্তর্ভুক্তি দেখা যায় না। সে ক্ষেত্রে এটি একটি বৈষম্যমূলক আইন হিসেবে বিবেচিত হবে। নতুন আইনে পরিবর্তনগুলো শত শত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ওয়াক্ফ জমির ওপর গড়ে তোলা মসজিদ এবং অন্যান্য ইসলাম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলতে পারে।
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, নতুন আইনে অমুসলিম সদস্যদের এই সম্পত্তিগুলোর ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে যে এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে, তা মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ ও আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।