রাজধানী ঢাকার সড়কে ছিনতাই ঠেকাতে ট্রাফিক সার্জেন্টদের স্মল আর্মস (হালকা বা ছোট অস্ত্র) দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। আজ বৃহস্পতিবার উত্তরার আজমপুর বিডিআর মার্কেট–সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি আয়োজিত ‘ঢাকা মহানগরীতে কাউন্টার ও ই-টিকেটিং পদ্ধতিতে বাস চলাচল’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনারের কাছে এক সাংবাদিক জানতে চান, উত্তরার হাউস বিল্ডিং থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত ছিনতাইয়ের প্রকোপ বেশি। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অস্ত্রের মুখে ছিনতাই হচ্ছে। কিন্তু একজন বা দুজন কনস্টেবল বা একজন সার্জেন্টের পক্ষে ছিনতাই রোধ করা সম্ভব নয়। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?

জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এই এলাকায় ছিনতাই হয়। এর আগেও আমি ব্যবস্থা নিয়েছি। এক মাস আগেও রাজধানীতে ছিনতাইয়ের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ব্যাপক ধরপাকড়ের কারণে ১৫ দিন ধরে ছিনতাই খুব কমে গেছে। কারণ, তাদের জেলে রাখা হয়েছে।’

কমিশনার বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমাদের জনবল কম। ট্রাফিকের লোক আরও অসহায়। একজন ডিউটি করেন। তাঁরা নাজুক অবস্থায়। সার্জেন্টদের স্মল আর্মস দিয়ে দিচ্ছি। তিনি যেন এক, দুই বা তিনজন ছিনতাইকারী মোকাবিলা করতে পারেন।’

গতকাল রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে হামলা ও ভাঙচুরে পুলিশের ভূমিকা কী ছিল, এমন এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি। রাত দুইটা–আড়াইটা পর্যন্ত আমি (পরিস্থিতি) মনিটরিং করেছি।’

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি এম এ বাতেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো.

সরওয়ার এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল আলম।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার দিনে কড়া রোদে দীর্ঘ অপেক্ষা

ঘড়িতে বেলা ১১টা। চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্কের পাশে এলোমেলোভাবে দাঁড়িয়ে আছেন ২৫০ জন মানুষ। সুলভ মূল্যের পণ্য নিয়ে ট্রাক আসতেই কিছুটা বিশৃঙ্খলা হলো। পরে নারী ও পুরুষ—দুই সারিতে দাঁড় করালেন বিক্রয়কর্মীরা। এরপর শুরু হয় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রি কার্যক্রম। তবে কড়া রোদ হওয়ায় পণ্যের জন্য অপেক্ষায় হাঁপিয়ে উঠছিলেন ক্রেতারা।

আজ রোববার আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্কের পাশে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের চিত্র ছিল এমন। পবিত্র রমজান মাসে পণ্যের আশায় কড়া রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা ছিল ভোক্তাদের। রোদের কারণে কেউ ছাতা ধরেছেন, কেউ-বা সঙ্গে আনা বস্তা মাথায় ধরেছেন রোদ থেকে বাঁচতে। অধিকাংশ ভোক্তাকে দেখা গেছে, রোদ থেকে বাঁচতে ছায়ার খোঁজে লাইন থেকে কিছুটা দূরে সরে দাঁড়িয়েছেন।

তাঁদের একজন ষাটোর্ধ্ব আবুল কাশেম। ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে থাকেন চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ এলাকায়। রোদের তীব্রতা থেকে বাঁচতে ফুটপাতে গাছের নিচে বসে ছিলেন। এর আগে ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে ছিলেন টিসিবির পণ্য কেনার সারিতে। তিনি বলেন, ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে ছেলেমেয়েরা। তাই রোদ উপেক্ষা করে টিসিবির পণ্য নিতে এসেছেন। তবে ট্রাক দাঁড়িয়েছে রোডের মধ্যে। তাই রোদ থেকে বাঁচতে এখানে বসেছেন।

এদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত টিসিবির পণ্য নিতে ২৫০–২৬০ জন ভোক্তা সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ক্রেতাদের ভাষ্য, রোজায় পণ্যগুলো রোদের মধ্যে দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু রমজানে ভোক্তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে কষ্ট হয়, তাই একটু ছায়ায় পণ্য বিক্রি করলে সুবিধা হয়। তবে টিসিবির কর্মকর্তারা বলছেন, পরিবেশকদের বলা আছে যাতে তাঁরা রোজায় অন্তত ছায়াযুক্ত এলাকায় ট্রাক দাঁড় করিয়ে পণ্য বিক্রি করে।

নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের ২৪ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম নগরের ২০টি স্থানে ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। গত ৩১ ডিসেম্বরের পর এ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। রমজান মাস উপলক্ষে ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার এ কার্যক্রম শুরু করেছে সংস্থাটি।

শুরুতে প্রতি ট্রাকে ২০০ জন করে নগরে প্রতিদিন চার হাজার ভোক্তার কাছে পণ্য বিক্রি করত টিসিবি। তবে প্রতিদিন প্রতি ট্রাক থেকেই অন্তত ৫০ থেকে ১৫০ জন ক্রেতা ফেরত যেতেন। এ ছাড়া ট্রাক থেকে পণ্য নিতে বিশৃঙ্খলা ও হট্টগোল হতো। বিষয়টি মাথায় রেখে গত বুধবার থেকে প্রতিটি ট্রাকের বরাদ্দ ২০০ থেকে বাড়িয়ে ৪০০ জন করা হয়েছে। পাশাপাশি ৫০০ গ্রামের পরিবর্তে খেজুরের পরিমাণ জনপ্রতি এক কেজি করা হয়েছে।

বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরে প্রতিদিন ২০টি ওয়ার্ডের আট হাজার গ্রাহকের কাছে ট্রাকে করে তেল, ডাল, চিনি, ছোলা ও খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে। একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই লিটার ভোজ্যতেল, দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি, দুই কেজি ছোলা ও এক কেজি খেজুর কিনতে পারবেন। সব মিলিয়ে এর মূল্য ৬৬৫ টাকা। পণ্য কিনতে আপাতত পরিবার কার্ডের প্রয়োজন হচ্ছে না।

তবে এ মাসে টিসিবির কার্যক্রমে এখনো চাল দেওয়া হচ্ছে না। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন টিসিবি ৩০ টাকা দরে এসব চাল বিক্রি করে। অনুমোদন না নেওয়ার কারণে চাল বিক্রি হচ্ছে না। তবে আগামী মাসে ট্রাকে চাল বিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন টিসিবির কর্মকর্তা। টিসিবি ছাড়া নগরে প্রতিদিন ২৫ টন ও প্রতি উপজেলায় ৩ টন করে ওএমএস দোকানের মাধ্যমে চাল বিক্রি করে খাদ্য অধিদপ্তর।

টিসিবি চট্টগ্রামের যুগ্ম পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আগামী মাস থেকে চাল দেওয়া হবে। রোজার কথা মাথায় রেখে ট্রাকে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। রোজাদারেরা যাতে ঠিকভাবে পণ্য নিতে পারেন সেটির নির্দেশনা দেওয়া আছে পরিবেশকদের। ছাতাযুক্ত এলাকায় ট্রাক থামানোর জন্য বলা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কানাডার হবু প্রধানমন্ত্রী কে এই মার্ক কার্নি, ট্রাম্পকে কি সামলাতে পারবেন তিনি
  • নড়াইলে ‘বিনা লাভের দোকান’ চালু করেছে শিক্ষার্থীরা
  • মহাসড়কের পাশে হাত-পা বাঁধা মরদেহটি পুরুষ নাকি নারীর, জানেনা পুলিশ
  • অভিষেকের অপেক্ষায় ডেবিড
  • দুই ট্রাকের সংঘর্ষে এক চালক নিহত
  • যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার
  • একজন গেরিলা নেতার ‘জুয়াখেলা’
  • মায়ের মৃত্যুর তিন দিন পর কিশোরীকে ধর্ষণ, বাবা গ্রেপ্তার
  • ধর্ষণের বিরুদ্ধে অভিনয় শিল্পীর প্রতিবাদ
  • রোজার দিনে কড়া রোদে দীর্ঘ অপেক্ষা