সম্প্রতি বিদেশে কর্মসংস্থানের প্রলোভন ও মিথ্যা আশ্বাসের মাধ্যমে এক শ্রেণির প্রতারক ও দালালচক্র নিয়মবহির্ভূত ও অবৈধভাবে বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে গমনে ইচ্ছুকদের প্রলুব্ধ করছে। এ পরিস্থিতিতে বিদেশে গমনে ইচ্ছুকদের সতর্কবার্তা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিদেশে গমনে ইচ্ছুকদের ভালো অঙ্কের বেতন ও কাজের লোভ দেখিয়ে ট্যুরিস্ট বা ভিজিট ভিসার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশসহ রাশিয়া, গ্রিস, লিবিয়া, লেবানন, মিসর, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে নিয়মবহির্ভূত ও অবৈধভাবে প্রেরণ করছে এক শ্রেণির প্রতারক ও দালালচক্র। ট্যুরিস্ট বা ভিজিট ভিসায় কাজের আইনগত সুযোগ না থাকায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির পাশাপাশি নিরাপত্তার ঝুঁকিতে পড়ছেন। এমনকি বিভিন্ন দেশে অবৈধ পথে যাওয়ার সময় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

এ প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিদেশ যাওয়ার আগে কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছে।

১.

দালালের প্রলোভনে ট্যুরিস্ট বা ভিজিট ভিসায় কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ গমন না করা।

২. কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিএমইটির বহির্গমন ছাড়পত্র ছাড়া বিদেশে না যাওয়া।

৩. জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) থেকে কর্মসংস্থান এবং রিক্রুটিং এজেন্সির সঠিকতা নিশ্চিত হওয়া।

৪. কর্মসংস্থানের জন্য বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশে না যাওয়া।

আরও পড়ুনবিসিএসে ‘ক্যাডার’ বাদ দিয়ে আলাদা নাম, নিয়োগ-পদোন্নতির জন্য তিন পিএসসি০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনবিসিএসের লিখিত পরীক্ষার নম্বর প্রার্থীকে জানাবে পিএসসি০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

৫. বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান চুক্তি (সমঝোতা স্মারক) অনুযায়ী নারী কর্মীর মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের কোনো সুযোগ নেই।

৬. সোশ্যাল মিডিয়ায় (ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি) প্রচারিত ভুয়া বৈদেশিক চাকরির বিজ্ঞপ্তি থেকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষার জন্য রিক্রুটিং এজেন্সি বা নিয়োগকর্তার তথ্য বিএমইটির ওয়েবসাইট বা প্রবাসবন্ধু কল সেন্টার থেকে যাচাই করা যাবে।

আরও পড়ুনষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির প্রশ্নের ধরন, নম্বর বিভাজন ও মূল্যায়ন নির্দেশিকা প্রকাশ৫ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমি প্রবাসী’র বার্ষিক প্রতিবেদন: ২০২৪ সালে বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা কমেছে ২৭%

২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা ২৭ শতাংশ কমেছে। গত বছর মোট ১০ লাখ ৯ হাজার ১৪৬ জন বাংলাদেশি কর্মী বিদেশে গেছেন। আগের বছর গিয়েছিলেন ১৩ লাখ ৯০ হাজার ৮১১ জন।

ডিজিটাল অভিবাসন প্ল্যাটফর্ম ‘আমি প্রবাসী’র বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২৪-এ এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই নিম্নগামী ধারার মধ্যেও একটি ইতিবাচক দিক রয়েছে। সেটি হলো, ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর বিএমইটি নিবন্ধনে নারীদের অংশগ্রহণ দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।

২০২৪ সালে আগের বছরের মতো বাংলাদেশি কর্মীদের শীর্ষ গন্তব্য ছিল সৌদি আরব। মোট কর্মীর ৬২ শতাংশ গেছেন সৌদি আরবে। দেশটিতে অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতে দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে।

বাংলাদেশি কর্মীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম গন্তব্য মালয়েশিয়া। সেখানে কর্মীদের যাওয়া উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ২০২৪ সালে ৯৩ হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় গিয়েছেন। ‘আমি প্রবাসী’র বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, মালয়েশিয়ার নতুন শ্রমনীতি বাংলাদেশি কর্মী কমে যাওয়ার মূল কারণ।

অভিবাসন কমে যাওয়ার পেছনে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নানা কারণও ভূমিকা রেখেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ‘আমি প্রবাসী’র বার্ষিক প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অস্থিরতা বিদেশগামী কর্মীদের কিছুটা অনিশ্চয়তায় ফেলেছে। দক্ষ কর্মী তৈরির অন্যতম মাধ্যম, কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সেও ভর্তির সংখ্যা কমেছে। ২০২৪ সালে ভর্তি হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ১৬৬ জন, যা আগের বছর ছিল ২ লাখ ৩৬ হাজার ২৭০ জন।

২০২৪ সালে বিএমইটি নিবন্ধনের মোট সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৭৬, যা ২০২৩ সালের ৬ লাখ ৬০ হাজার ৮৮টি।

আমি প্রবাসীর বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে মোট বিএমইটি নিবন্ধনে নারী অভিবাসীদের নিবন্ধনের হার ছিল ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশে।

আমি প্রবাসীর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক ই হক বলেন, নারীদের বিএমইটি নিবন্ধনের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রমাণ করে বাংলাদেশের নারীরা আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার (পেশাজীবন) গড়তে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছেন। এটি বৈশ্বিক শ্রমবাজারে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে ইতিবাচক পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘আমি প্রবাসী’র বার্ষিক প্রতিবেদন: ২০২৪ সালে বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা কমেছে ২৭%