শেখ হাসিনার সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়ায় ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুর
Published: 6th, February 2025 GMT
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে অন্তবর্তী সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মানুষের মনে জুলাই গণহত্যা নিয়ে যে ক্ষত রয়েছে সে ক্ষততে শেখ হাসিনা একের পর এক আঘাত করে চলছেন। তার এই সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, পলাতক অবস্থায় ভারতে বসে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে জনমনে গভীর ক্রোধের সৃষ্টি হয়েছে যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
গত ছয় মাসে ৩২ নম্বর বাড়িটিতে কোনো ধরনের আক্রমণ, ধংসযজ্ঞ হয়নি উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল রাতে এটি ঘটেছে পলাতক শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে যার দুটো অংশ আছে। একটি হলো, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা আত্মদান করেছেন শেখ হাসিনা তাদেরকে অপমান করেছেন, অবমাননা করেছেন। শহীদের মৃত্যু সম্পর্কিত অবান্তর, আজগুবি ও বিদ্বেষমূলক কথা বলে পলাতক শেখ হাসিনা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে অবজ্ঞা করেছেন ও অশ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
দ্বিতীয়ত, শেখ হাসিনা দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও অমানবিক প্রক্রিয়ায় নিপীড়ন চালিয়ে ক্ষমতায় থাকাকালীন যে সুরে কথা বলতেন গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়ার পরেও তিনি একই হুমকি-ধামকির সুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে, গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া প্রতিটি মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলে চলেছেন, হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। শেখ হাসিনা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির হুমকি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, মানুষের মনে জুলাই গণহত্যা নিয়ে যে ক্ষত রয়েছে সে ক্ষততে শেখ হাসিনা একের পর এক আঘাত করে চলছেন। তার এই সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
অন্তবর্তী সরকারের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার দেশ ও জনগণের জানমালের রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বাত্মকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার যথাযথ চেষ্টা করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শেখ হাসিনা বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো সম্ভব। সরকার আশা করে, ভারত যেন তার ভূখণ্ডকে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে এমন কাজে ব্যবহৃত হতে না দেয় এবং শেখ হাসিনাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ না দেয়। অন্তর্বর্তী সরকার ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না।
বিবৃতিতে সরকার জানায়, জুলাই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। এই বিচার নিশ্চিত করে গণহত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কী কী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা সরকার খতিয়ে দেখবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ধ নমন ড গণঅভ য ত থ ন কর ছ ন র ঘটন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাখাইনে করিডর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ হেফাজতের
জাতিসংঘের অনুরোধে শর্ত সাপেক্ষে মিয়ানমারের বেসামরিক লোকজনের জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে রাখাইনে করিডর দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর খিলগাঁওয়ে জামিয়া ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম মাদ্রাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক এ কথা বলেন। আগামী ৩ মে চার দাবিতে হেফাজতে ইসলাম মহাসমাবেশ করবে। এর সার্বিক প্রস্তুতি জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সকাল ৯টায় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওই মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
মামুনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশকে ব্যবহার করে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে, দেশপ্রেমিক শক্তি হিসেবে হেফাজতে ইসলাম কোনোভাবেই এটি সমর্থন করে না। এর নিন্দা জানায়। আমরা এর প্রতিবাদ জানাব।’
সংবাদ সম্মেলনে মামুনুল হক আরও বলেন, হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে সবাই উদ্বিগ্ন।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের চার দফা দাবি তুলে ধরেন মামুনুল হক। এগুলো হলো নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী প্রতিবেদন ও কমিশন বাতিল, সংবিধানে বহুত্ববাদের পরিবর্তে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল, ফ্যাসিবাদের আমলে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, শাপলা চত্বরসহ সব গণহত্যার বিচার এবং ফিলিস্তিন এবং ভারতে মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধ।
সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘যে কমিশন কোরআন-সুন্নাহর বিরুদ্ধে সুপারিশ করতে পারে, বাংলাদেশের মানুষ সেই কমিশন মানে না। সংবিধানে বহুত্ববাদ নয়, আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হেফাজত নেতা ও খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাদের প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনরাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের২৭ এপ্রিল ২০২৫