ভারতকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার আহ্বান পররাষ্ট্র উপদেষ্টার
Published: 6th, February 2025 GMT
নয়াদিল্লি-ঢাকার ইতিবাচক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উভয় দেশের জনগণের উপকারে আসতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। দুই দেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত মতামত কলামে এ কথা জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। আজ বৃহস্পতিবার কলামটি প্রকাশিত হয়েছে।
কলামে তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে একটি কার্যকর ও ইতিবাচক সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ। আমরা আশা করি ভারতও এই ইচ্ছায় সায় দেবে।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান শুরু থেকেই স্পষ্ট। ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মানবোধের ভিত্তিতে একটি ইতিবাচক ও কার্যকর সম্পর্ক চাই আমরা। আমরা আশা করি, ভারতও আমাদের এই ইচ্ছার সঙ্গে সুর মেলাবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড.
তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতে বাংলাদেশি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে অনেক উচ্চবাচ্য হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগ পর্যন্ত ক্ষমতা শূন্যতার সময়টুকুতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে ছিল না। যার ফলে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। তবে যারা এতে প্রভাবিত হয়েছেন, তারা সবাই আগের সরকারের সুবিধাভোগী এবং বেশিরভাগই মুসলমান। ক্ষমতা গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকার এসব অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। এমনকি সারাদেশের জনগণও সাহসিকতার সঙ্গে হিন্দু ধর্মাবলম্বী, তাদের পরিবার ও মন্দিরের সুরক্ষা দিতে এগিয়ে আসে। তা সত্ত্বেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভারতের গণমাধ্যম ও সাইবারস্পেস বড় আকারে অতিরঞ্জিত ও প্রায়শই পুরোপুরি ভুয়া তথ্য প্রকাশ করে নেতিবাচক আবহ সৃষ্টি অব্যাহত রেখেছে, যোগ করেন তিনি।
উপদেষ্টা দাবি করেন, সব ধর্মবিশ্বাসের মানুষের অধিকারের সুরক্ষা দিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অন্য সব নাগরিকের সমান অধিকার ভোগ করে থাকেন। আমরা দক্ষিণ এশিয়া তথা সারাবিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মডেল হতে চাই। বাংলাদেশে এখন কী হচ্ছে তা নির্বিঘ্নে পর্যবেক্ষণ করার জন্য আমরা ভারতের সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানাই। ভারতের জনগণ তাদের পক্ষপাতহীন তদন্ত থেকে প্রকৃত সত্য জানতে পারবেন।
বিভিন্ন সমস্যা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কিছু ইতিবাচক লক্ষণ দেখা গেছে বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। উদাহরণ হিসেবে তিনি নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির ত্রিপাক্ষিক চুক্তি ও দুই দেশের জেলে-বিনিময়ের ঘটনাগুলো উল্লেখ করেন।
তিনি আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, এই ইতিবাচক উদ্যোগগুলোর ওপর ভিত্তি করে এমন একটি অংশীদারিত্ব তৈরি হবে, যা দুই দেশের মানুষ, এই অঞ্চল ও বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের জন্য মঙ্গলজনক। এ ক্ষেত্রে একটি ভালো উদ্যোগ হতে পারে সীমান্তে নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষদের গুলি করে হত্যার ধারা থেকে বের হয়ে আসা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট পরর ষ ট র উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কল্যাণময় রাষ্ট্র গঠনে ইসলামী শাসনের বিকল্প নেই : অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জনগণের জন্য একটি কল্যানমুখী সংগঠন। মানুষের জান-মাল, ইজ্জত,অধিকার আদায়ের জন্য সার্বক্ষণিক ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মাঠে ময়দানে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রত্যেকটি পাড়া-মহল্লায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বেগবান করতে সক্ষম হয়েছে এবং একটি জনপ্রিয় সংগঠন হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে।
একটি কল্যানময় সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মানে মাহে রমজানের ভূমিকা শীর্ষক "আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল" অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকাল ৩ টায় সিদ্ধিরগঞ্জে অবস্থিত গ্রীন গার্ডেন মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ দ্বীন ইসলাম এর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মুহাম্মাদ জাহাঙ্গীর কবির এর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ সময় অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান আরও বলেন- মাদক, সন্ত্রাস,চাঁদাবাজিতে লিপ্ত অন্যান্য সংগঠনগুলো যেখানে ক্ষমতায় যাওয়ার পূর্বেই ক্ষমতার অপব্যবহার করছে সেখানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জনগণের কল্যানের জন্য কাজ করছে। পাশাপাশি দেশের সর্বক্ষেত্রে জনমানুষের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হচ্ছে তাতে সাধারণ মানুষ খুবই শঙ্কিত।
তিনি বলেন, আওয়ামী প্রেতাত্মারা এখনও সর্বসেক্টরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষ বিগত ক্ষমতাসীন দলগুলোর থেকে মুখ ফিরিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ভোটের মাধ্যমে ইসলামকে বিজয়ী করার মাধ্যমেই জবাব দেবে এমন পরিবেশ সর্বত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জনগণ বুঝতে শুরু করেছে যে, একটি কল্যানময় রাষ্ট্র গঠন করতে ইসলামী শাসনের বিকল্প নেই।
অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সেই জন আকাঙ্খাকে ধারণে ইসলামপন্থীদের নিয়ে একটি ঐক্য তৈরি করে ইসলামের জন্য একটি ভোটের বাক্স জনগণের সামনে অর্পন করতে চায়। যা দেখে বিগত ক্ষমতাসীন, ইসলামবিরোধী শক্তিরা শংকিত। এজন্য সুপরিকল্পিতভাবে ইসলামের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ দল কাজ করছে।
আমাদের সম্মিলিত ঐক্যই পারে এদের সংঘবদ্ধ ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে। যার দরুন বলা যায়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এখন সকল মানুষের জন্য আস্থার ঠিকানায় পরিণত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মাদ দ্বীন ইসলাম বলেন, রমজান মাস তাক্বওয়া অর্জনের মাস। রমজান মাস শিক্ষা গ্রহণের মাস। রমজান মাস আত্মশুদ্ধি অর্জনের মাস। রমজান মাসে আমাদের কে আল্লাহ তাআলার নৈকট্যলাভের জন্য ইবাদতে মশগুল থাকতে হবে। রমজানে প্রায় সকল মুসলিম ইসলাম এবং ইবাদতমুখী থাকে।
জনগণের মধ্যে আল্লাহর ভয় তৈরি হলেই সমাজে কোনো অপরাধ সংঘটিত হবে না। এজন্য আমাদের দাওয়াতি কাজকে বেগবান করতে হবে। পাশাপাশি রমজান মাস কুরআন নাযিলের মাস। আর কুরআনি শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রয়োজনীয় মনোবল এই রমজানের মাহাত্ম্য থেকেই গ্রহণ করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে আলোচনা সভার সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য প্রদান করেন আলহজ্ব মাওলানা হাসান শরিফ,মাওলানা ওবায়দুর রহমান খান নদবী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ, ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ,জাতীয় শিক্ষক ফোরাম,বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ড নারায়ণগঞ্জ জেলা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থানা শাখার নেতৃবৃন্দসহ আরো অনেকে।