‘ট্রাম্প একজন উন্মাদ’: যুক্তরাষ্ট্রের গাজা দখলের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনির প্রতিক্রিয়া
Published: 6th, February 2025 GMT
লাঠিতে ভর দিয়ে ৭২ বছর বয়সী ফাতি আবু আল-সাঈদ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের আল-কাতিবা মহল্লায় ধ্বংসস্তূপে একাকার হয়ে যাওয়া রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতি শুরুর পর গাজার উপকূলীয় আল-মাওয়াসি এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত অবস্থায় খান ইউনিসে ফেরেন তিনি। এর পর থেকে এভাবে হাঁটা তাঁর নিত্যদিনের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টানা ১৫ মাস ধরে ইসরায়েলের ভয়াবহ বোমা হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপের ওপর সাবধানে পা ফেলে হাতের লাঠি উঁচিয়ে বিধ্বস্ত একটি বাড়ির দিকে ইঙ্গিত করলেন সাঈদ। বললেন, ‘আপনি কি ওই মূল্যহীন ধ্বংসস্তূপ দেখতে পাচ্ছেন? ওটা যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির ভেতরে থাকা সবকিছুর চেয়ে বেশি মূল্যবান।’
আবু আল-সাঈদের কাছে ফিলিস্তিনিদের গণহারে ঘরছাড়া করার বিষয়টি নতুন নয়। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় তাঁর বাবাকে বন্দরনগরী জাফা থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়েছিল। নগরীটি এখন ইসরায়েলের অংশ। তাঁর মায়ের পরিবারকে কাছের সারাফান্দ গ্রাম থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। তিনি সেই প্রথম বিপর্যয় ‘নাকবা’র গল্প শুনে বড় হয়েছেন এবং এখন অন্য একটি বিপর্যয়ের মধ্যে বেঁচে আছেন।আবু আল–সাঈদের ৫০ সন্তান ও নাতি-নাতনির কয়েকজনসহ একদল শিশু তাঁর শ্রোতা। ভারী বৃষ্টি ও বাতাসের পূর্বাভাসেও বিচলিত না হয়ে তারা মনোযোগ দিয়ে তাঁর কথা শোনে। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকটি শিশু যোগ দেয়। বাস্তুচ্যুত এসব শিশুর পরিবারও নিজেদের এলাকায় ফিরেছে। কিন্তু ফিরে ঘরবাড়ি অক্ষত পায়নি। একসময়ের সাজানো-গোছানো বাড়িঘরগুলো এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ। পরিবারগুলো এখন ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই নতুন করে জীবন শুরুর চেষ্টা করছে।
প্রতিদিন সকালে সাঈদ তাঁদের জীবন আবারও স্বাভাবিক ছন্দে ফেরানো নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু গাজা দখল করে নেওয়া প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক মন্তব্য সাঈদের জন্য নতুন করে ব্যঙ্গাত্মক কথাবার্তার খোরাক হয়েছে। ট্রাম্প ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে গাজায় ‘মধ্যপ্রাচ্যের সমুদ্রসৈকত’ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন।
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর রাফায় ধ্বংসস্তূপের ভেতর দিয়ে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা হাঁটছেন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বন্ধুত্বের টানে পার্বতীপুরে এলেন তাইওয়ানের তরুণ
ফেসবুকে পরিচয়। পরিচয় থেকে হয় বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্বের টানে তাইওয়ানের তরুণ লুইস সিংজন ইয়ের ছুটে এসেছেন দিনাজপুরের পার্বতীপুরে। আজ বুধবার দুপুরে পার্বতীপুর শহরের নতুন বাজার মেইনে রোডে সাইকেল চালাতে দেখা যায় তাইওয়ানের ওই তরুণকে।
২২ বছর বয়সী লুইস সিংজন গত ১৩ জানুয়ারি তাইওয়ান থেকে বাংলাদেশে আসেন। এরপর তিনি পার্বতীপুর শহরের আদর্শ কলেজপাড়ায় ফেসবুকের বন্ধু আপন ইসলামের (১৯) বাড়িতে যান। আপন স্থানীয় ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের ছেলে। ভিনদেশি তরুণকে দেখতে প্রায়ই আশপাশের লোকজন আসছেন।
আপন ইসলাম জানান, ফেসবুকে একটি খেলার ভিডিও আপলোড করেছিলেন। সেই ভিডিও দেখে পরিচয় হয় তাইওয়ানের লুইস সিংজনের সঙ্গে। তৈরি হয় বন্ধুত্ব। আর বন্ধুত্বের টানে লুইস শেষ পর্যন্ত তাঁদের বাড়িতে চলে এসেছেন।
আপনের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলের সঙ্গে দেখা করতে আসা লুইস একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ। তাঁর আগমনে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারাও। ছেলের বন্ধু লুইসকে নিজের সন্তানের মতো পরম মমতায় বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন।’
আপন ও তাঁর বন্ধু লুইস সিংজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লুইস সিংজন একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলী। তিনি তাঁর দেশের একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। এর আগেও টুরিস্ট ভিসায় লুইস চারবার বাংলাদেশ এসেছেন। ভবিষ্যতে এলে সিলেটে ঘুরতে যাবেন। ঘুরতে তাঁর পছন্দ। লুইসের বাবা তাইওয়ানের একটি শহরে বসবাস করেন। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে লুইস সবার ছোট। তাঁর দুই বোনের বিয়ে হয়েছে।
তাইওয়ানের তরুণ সাইকেল চালাচ্ছেন। বুধবার দুপুরে পার্বতীপুর শহরের নতুন বাজার মেইনে রোডে