Risingbd:
2025-03-10@04:52:58 GMT

বকশিসে মেলে জন্ম-মৃত্যু সনদ

Published: 6th, February 2025 GMT

বকশিসে মেলে জন্ম-মৃত্যু সনদ

দেশব্যাপী ‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে’ ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিয়ম অনুযায়ী, ভোটার তালিকায় নাম তুলতে ডিজিটাল জন্ম সনদ আবশ্যক। ফলে, যাদের নেই তারা জন্ম সনদ সংগ্রহ করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আঞ্চলিক অফিসে যোগাযোগ করছেন। তবে, বকশিস ছাড়া মিলছে না জন্ম সনদ। এমনকি, মৃত্যু, নাগরিক ও ওয়ারিশ সনদ পেতেও দিতে হচ্ছে বকশিস। সব মিলিয়ে নাগরিক সেবা পেতে পদে পদে ভোগান্তিতে পড়ছেন নগরবাসী।

গত ২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর নগর ভবনে কথা হয় পুরান ঢাকার চাঁন খাঁ মসজিদ এলাকার (৩৩ নম্বর ওয়ার্ড) বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। রাইজিংবিডি ডটকমকে তিনি বলেন, ‘‘গত ২৫ জানুয়ারি অনলাইনে নাগরিক সনদের জন্য আবেদন করি। ভেরিফিকেশনে কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেন ডিএসসিসির আঞ্চলিক অফিসের এক কর্মকর্তা। অফিসের কর্মচারীরা বকশিস চায়। দিতে না চাইলে একেক সময় একেক কথা বলেন।’’

‘‘৩ ফেব্রুয়ারি ভোটার হওয়ার শেষ দিন ছিল। কী আর করা! ডিজিটাল জন্ম সনদ ছাড়া ভোটার হওয়া যাবে না। তাই বকশিস দেওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে জন্ম সনদ দিয়েছেন।’’

ডিএসসিসির নগর ভবনের জন্ম নিবন্ধন শাখার কম্পিউটার অপারেটর শফিক জানান, নির্বাচিত কাউন্সিলরের অধীনে তারা নাগরিক সনদ দিতে এক-দুই ঘণ্টা নিতেন। এখন ৯-১০ দিন লাগছে। একইভাবে, ওয়ারিশ সনদে একমাস ও জন্ম-মৃত্যু সনদে লাগছে ১০-১২ দিন । কয়েক মাস ধরে স্থানীয় সরকার শাখা থেকে সংশোধনী না ছাড়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এ সময় ‘বকশিস নেওয়ার’ বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

নগর ভবনের ১১ তলায় সিটি করপোরেশনের সেবা নিতে প্রায় ২০ জন অপেক্ষা করছেন। তাদের বেশিরভাগই জন্ম নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ-সংক্রান্ত কাজে এসেছেন। জানতে চাইলে সেবাপ্রার্থী জসিম উদ্দীন বলেন, ‘‘টাকা ছাড়া কোনো সেবা মিলছে না। জন্ম নিবন্ধন নতুন কিংবা সংশোধনের জন্য ৫০০ থেকে ২ হাজার করে টাকা নিচ্ছেন।’’

সেখানে উপস্থিত বংশালের বাসিন্দা রবিউল হক বলেন, ‘‘ছেলের জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার জন্য আবেদন করেছি। তারা বলেছেন, সংশোধন করতে যেতে হবে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। আমি না গেলে তাদের দুই হাজার টাকা দিতে হবে। আমি বেসরকারি চাকরিজীবী, ছুটি কম। ঝামেলা এড়াতে দেড় হাজার টাকা দিয়েছি।’’

একই এলাকার সরোয়ার হোসেন রকি বলেন, ‘‘ভাতিজির জন্ম নিবন্ধনের জন্য ১০ দিন ঘুরতে হয়েছে। আবেদন করার পর নগর ভবনে গেলে কয়েক দফায় বিভিন্ন কাগজপত্র চাওয়া হয়। তারপরও হয়রানির মাত্রা বেড়ে গেলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে প্রধান নির্বাহী সমস্যার সমাধান করে দেন।’’

ন্যাশনাল কলেজের শিক্ষার্থী সাবির মোস্তফা এসেছেন জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে। রাইজিংবিডি ডটকমকে তিনি বলেন, ‘‘আজ আমাকে বলল, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিলের ফটোকপি লাগবে। আমি এসব আনার পর বলছে হোল্ডিং ট্যাক্সেরও ফটোকপি লাগবে। সবকিছু জমার পর এখন বলছেন, হলফনামা লাগবে। মূলত টালবাহানা করছে বকশিসের জন্য।’’

নগর ভবনের রেজিস্ট্রার জেনারেল (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন) মো.

যাহিদ হোসেন বলেন, নাগরিকেরা যেন সহজে সেবা পান, সেজন্য সিস্টেমের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। কাজে গতি এসেছে। সংশোধনের কাজ বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। জালিয়াতির কোনো অভিযোগ পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বশিরুল হক ভূঁঞার সঙ্গে যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘‘জন্ম নিবন্ধনসহ অন্যান্য কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। কোনো কার্যক্রমে জড়িত অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ঢাকা/এনএইচ/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নগর ভবন ড এসস স র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছেন মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তারা। এই শিক্ষার্থী গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। স্টুডেন্ট ওয়ার্কার্স অব কলাম্বিয়া ইউনিয়ন গতকাল রোববার এই তথ্য দিয়েছে।

ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলেছে, গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীর নাম মাহমুদ খলিল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের শিক্ষার্থী। তাঁকে গত শনিবার তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবন থেকে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাহমুদ খলিলের স্ত্রী আছে। তিনি মার্কিন নাগরিক এবং আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

আরও পড়ুনইহুদি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল প্রত্যাহার ট্রাম্পের০৭ মার্চ ২০২৫

মাহমুদ খলিলের যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের গ্রিন কার্ড রয়েছে বলে ইউনিয়ন জানিয়েছে।

মাহমুদ খলিলের গ্রেপ্তারের বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি প্রতিশ্রুতি পূরণের প্রথম প্রচেষ্টার একটা বলে মনে হচ্ছে।

রিপাবলিকান ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফেরেন। ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ফিলিস্তিনিপন্থী প্রতিবাদী আন্দোলনে জড়িত কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন। এই আন্দোলনকে তিনি ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের গাজাভিত্তিক সংগঠন হামাস। জবাবে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এর জেরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ফিলিস্তিনিপন্থী ও ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। কয়েক মাস ধরে এই বিক্ষোভ চলে।

মাহমুদ খলিল তাঁর আন্দোলনকে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন বলে অভিহিত করছেন। এই আন্দোলনে ইহুদি ছাত্র ও গোষ্ঠীগুলোও অন্তর্ভুক্ত।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় ফিলিস্তিনিপন্থী শিক্ষার্থী বিক্ষোভকারীদের পক্ষের প্রধান আলোচকদের একজন ছিলেন মাহমুদ খলিল।

আরও পড়ুনফিলিস্তিনের জন্য বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করছে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়৩০ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষার্থী বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কেউ কেউ গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় তাঁবু স্থাপন করেছিলেন। তাঁরা কয়েক ঘণ্টার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি একাডেমিক ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের গ্রেপ্তারের জন্য ক্যাম্পাসে পুলিশ ডেকে এনেছিল।

ভবনটি দখল করা শিক্ষার্থীদের দলে ছিলেন না মাহমুদ খলিল। তিনি বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রভোস্ট ও বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যস্থতাকারী ছিলেন।

শনিবার গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা আগে মাহমুদ খলিল বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। তিনি শিক্ষার্থী বিক্ষোভকারীদের নিয়ে ট্রাম্পের সমালোচনা সম্পর্কে কথা বলেন। মাহমুদ খলিল বলেন, তিনি এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন যে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার জন্য সরকার তাঁকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।

অনলাইনে পাওয়া জীবনবৃত্তান্ত অনুসারে, মাহমুদ খলিল সিরিয়ার একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থীশিবিরে বেড়ে ওঠেন। তিনি বৈরুতে ব্রিটিশ দূতাবাসে কাজ করেছেন।

মাহমুদ খলিলের গ্রেপ্তার বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি তাঁর আইনজীবী অ্যামি গ্রিয়ার। মাহমুদ খলিলের স্ত্রী তাঁর (মাহমুদ খলিল) এক সহপাঠীর মাধ্যমে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

আরও পড়ুনইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক সমাপনীর মূল অনুষ্ঠান বাতিল০৭ মে ২০২৪

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কোনো স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে না। তবে এক বিবৃতিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা তাদের শিক্ষার্থীদের আইনি অধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ট্রাম্প ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মুখপাত্ররা এ বিষয়ে করা প্রশ্নের উত্তর দেননি।

আরও পড়ুনক্ষমা চাইলেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভকারী২৭ এপ্রিল ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ