ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ তিন দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করে রেখেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। তারা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এসে দেখা না করলে অবরোধ না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং মামলা প্রত্যাহার করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে শহীদ পরিবারের সদস্যরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। দুপুর ২টা পর্যন্ত তারা অবরোধ জারি রেখেছেন। এরফলে চারদিকের সড়কে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়েছে। 

শহীদ পরিবারের সদস্যদের দাবিগুলো হলো-১.

প্রত্যেক হত্যাকারীর দ্রুত গ্রেপ্তার এবং বিচার দাবি। ২. শহীদ যারা  জীবন দিয়েছে, তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং শহীদ পরিবারের প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে চান। 

শহীদ পরিবারের প্রতিনিধি দলের সদস্য গত ৪ আগস্ট মিরপুরে শহীদ শাহরিয়ার আলভীর বাবা আবুল হাসান। তিনি বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডে শাহরিয়ার হাসান আলভী ৪ আগস্ট মিরপুরে গুলিবিদ্ধ হয়। গুলি তার পেট ভেদ করে বেরিয়ে যায়। জীবনের শেষ সময়ে তার সঙ্গে আমি দেখা করতে পারিনি। এরকম নির্মম হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস অতিবাহিত হলো কিন্তু আমার সন্তান হত্যার বিচার দেখতে পাচ্ছি না। আমরা আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি, এই ট্রাইব্যুনাল একটি রঙ্গমঞ্চে পরিণত হয়েছে। তারা এখনও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করতে পারেনি। অথচ হত্যাকারীদের নিরাপদে দেশ ত্যাগ করতে দেওয়া হচ্ছে। 

গত ২৬ জানুয়ারি ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবনে যান শহীদ পরিবারের সদস্যরা। তবে তারা দেখা করতে পারেননি জানিয়ে শহীদ ইমাম হোসেনের ভাই রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদেরকে গত ৩০ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার কথা তবে তারা দেখা করেননি তিনি। তাহলে শহীদ পরিবার যাবে কোথায়? আজকে ড. ইউনূস এখানে আসবে। তা না হলে আমরা শহীদ পরিবার সকল মামলা প্রত্যাহার করে নেব। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অবর ধ জ ল ই গণহত য ইউন স অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাঙচুর অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা

সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।

এতে বলা হয়, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। পলাতক অবস্থায় ভারতে বসে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে জনমনে গভীর ক্রোধের সৃষ্টি হয়েছে যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ছয় মাসে ৩২ নম্বর বাড়িটিতে কোনো ধরনের আক্রমণ, ধংসযজ্ঞ হয়নি। গতকাল রাতে এটি ঘটেছে পলাতক শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে যার দুটো অংশ আছে।

‘একটা অংশ হলো, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা আত্মদান করেছেন শেখ হাসিনা তাদেরকে অপমান করেছেন, অবমাননা করেছেন। শহীদের মৃত্যু সম্পর্কিত অবান্তর, আজগুবি ও বিদ্বেষমূলক কথা বলে পলাতক শেখ হাসিনা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে অবজ্ঞা করেছেন ও অশ্রদ্ধা জানিয়েছেন।’

‘দ্বিতীয়ত, শেখ হাসিনা দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও অমানবিক প্রক্রিয়ায় নিপীড়ন চালিয়ে ক্ষমতায় থাকাকালে যে সুরে কথা বলতেন গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়ার পরেও তিনি একই হুমকি-ধমকির সুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে, গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া প্রতিটি মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলে চলেছেন, হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। শেখ হাসিনা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির হুমকি দিয়েছেন।’

অন্তর্বর্তী সরকার আরও বলেছে, মানুষের মনে জুলাই গণহত্যা নিয়ে যে ক্ষত রয়েছে, সে ক্ষততে শেখ হাসিনা একের পর এক আঘাত করে চলছেন। তার এই সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার দেশ ও জনগণের জানমালের রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বাত্মকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার যথাযথ চেষ্টা করছে।

এতে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধে একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শেখ হাসিনা বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো সম্ভব।

সরকার আশা করে, ভারত যেন তার ভূখণ্ডকে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে এমন কাজে ব্যবহৃত হতে না দেয় এবং শেখ হাসিনাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ না দেয়। অন্তর্বর্তী সরকার ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না।

বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। এই বিচার নিশ্চিত করে গণহত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কী কী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা সরকার খতিয়ে দেখবে।

বিএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ