সান্তোসের প্রত্যাবর্তনের দিনে ম্যাচসেরা নেইমার
Published: 6th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল থেকে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে পাড়ি জামিয়েছেন নেইমার জুনিয়র। নিজের ৩৩তম জন্মদিনে প্রায় ১২ বছর পর সান্তোসের জার্সিতে মাঠে নেমেছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। বতাফোগোর সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে তার দল। তবে নিজের প্রত্যাবর্তনের দিনে ম্যাচসেরা হয়েছেন নেইমার।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ব্রাজিলিয়ান পাউলিস্তা চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচটিতে প্রায় ২০ হাজার দর্শক নেইমারের মাঠে নামার অপেক্ষায় ছিলেন। সেই অপেক্ষার অবসান ঘটে দ্বিতীয়ার্ধে। অধিনায়ক আর্মব্যান্ডপর এবং ১০ নম্বর জার্সি গায়ে মাঠে নামলেন নেইমার। গান আর স্লোগানে মুখরিত গ্যালারি।
সান্তোসে একসময় তিনি পরেছেন ১৮, ৭ ও ১১ নম্বর জার্সি। এবার তাকে ১০ নম্বর জার্সি দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। কিংবদন্তি পেলের প্রতীক হয়ে ওঠা সেই জার্সি গায়ে তিনি নামেন। দুহাত তুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন স্রষ্টার প্রতি।
চোটের কারণে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকার অস্বস্তি আর জড়তা ছিল তার শরীরে ও পারফরম্যান্সে। দু-একবার অবশ্য জাদু দেখানোর চেষ্টা করেছেন। একবার গোল করার সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন বেশ। দুই ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে শট নিয়েছিলেন গোলে। কিন্তু গোলকিপার তা আটকে দেন দারুণ দক্ষতায়।
আরও দুই দফায় তার পাস থেকে গোলের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। তবে কোনোটিই কার্যকর হয়নি। প্রথমার্ধে পেনাল্টি গোলে এগিয়ে ছিল সান্তোস। পরে ৬৭তম মিনিটে গোল শোধ করে দেয় বতফোগো। এতে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুই দল।
ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজতেই প্রতিপক্ষের ফুটবলাররা একের পর এক নেইমারের সঙ্গে কথা বলা, ছবি তোলার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। পারফরম্যান্স যেমনই হোক, সান্তোসের হয়ে ফেরার মুহূর্তটিই তার হৃদয়ে বিশেষ জায়গা পেয়ে গেছে।
নেইমার বলেন, ভালোবাসার জন্য কোনো কিছু করতে পারারার যে অনুভূতি, এটা প্রকাশ করার ভাষা জানা নেই আমার। সান্তোসকে প্রচণ্ড ভালোবাসি আমি এবং আজকে যখন মাঠে নেমেছি, ওই সময়ের অনুভূতি কোনোভাবেই বোঝাতে পারব না কাউকে।
শুরুটা সেভাবে ভালো করতে না পারলেও কয়েকটি ম্যাচ খেললে সময়ের সঙ্গে পারফরম্যান্সও ভালো হবে বলে বিশ্বাস নেইমারের। তার ভাষ্য, ম্যাচটি খুব কঠিন ছিল। আমার বাবা ছিলেন মাঠে। তাকে আগেই বলেছিলাম, কঠিন ম্যাচ হবে। রক্ষণ ওরা অনেক ভালো দল, অনেকটা নিচে নেমে খেলে। আমাকে ধৈর্য ধরতে হবে এবং আরও অনুশীলন করে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মাঠে আরও সময় কাটাতে হবে আমাকে, ম্যাচ খেলতে হবে। এখনও শতভাগ নই। আজকে রাতে খুব বেশি দৌড়ানো ও ড্রিবল করার আশা নিজেরও ছিল না। আমার মনে হয়, চার-পাঁচটি ম্যাচ খেললে আরও ভালো অনুভব করব।
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
‘পাকিস্তানে বিপিএলের উন্মাদনা তুঙ্গে’
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেওয়ার পর পাকিস্তান জাতীয় দলে ফিরেছেন তিন ক্রিকেটার। শুধু কি জাতীয় দলে ফেরা…আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্কোয়াডে সুযোগ পেছেন তারা। ফরচুন বরিশালের ফাহিম আশরাফ, রংপুর রাইডার্সের খুশদিল শাহ ও চিটাগং কিংসে উসমান খানের কপাল খুলেছে। বিপিএলে তিন ক্রিকেটারই নিজের রঙ ছড়িয়েছেন।
বোঝাই যাচ্ছে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের আলাদা নজর আছে বিপিএল প্রতিযোগিতায়। সেই উন্মাদনা কতোটা জানতে চাওয়া হয়েছিল ফরচুন বরিশালের হয়ে বিপিএল খেলতে আসা পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আলীর কাছে। যিনি গতকাল প্রথমবার সুযোগ পেয়ে ২৪ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেন। যা তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারেরও প্রথম ৫ উইকেট।
বিপিএল নিয়ে নিজ দেশের আগ্রহের কথা জানাতে গিয়ে ৩২ পেরোনো মোহাম্মদ আলী বলেছেন, ‘‘শুধু বিপিএল নয়, পাকিস্তানে সব ধরণের ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের আগ্রহ তুঙ্গে থাকে। আমি প্রথমবারের মতো বিপিএলে খেলছি। খেলাটাকে উপভোগ করেছি।’’
বরিশালের হয়ে বিপিএল খেলতে সেই ডিসেম্বরেই ঢাকা এসেছিলেন মোহাম্মদ আলী। খেলার সুযোগ পাননি লিগের ১২ ম্যাচে। মাঝে ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। আবার বরিশালের ডাকে ফিরে এসেছেন। এসেই দলের জয়ের নায়ক হয়েছেন। বল হাতে দ্যুতি ছড়িয়ে দলকে তুলেছেন বিপিএল ফাইনালে।
ম্যাচের অপেক্ষায় থাকা এ পেসার সুযোগটি কাজে লাগানোয় দারুণ উচ্ছ্বসিত, ‘‘আমি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। আমি এটা বিশ্বাস করি, আমি খেলি বা না খেলি দলকে অবশ্যই জিতবে হবে। আমি এটাও বিশ্বাস করি আপনি যদি সুযোগ না পান তাহলে আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এটা এমন না যে, আপনি সুযোগ পাচ্ছেন না বলে নিজেকে তৈরিও রাখবেন না। এজন্য আমি নিজেকে প্রস্তুত করছিলাম। এমন সময়োপযোগী পারফরম্যান্সের জন্য। এবং এই পারফরম্যান্সটা কঠিন স্তরেই আসল। কঠিন পরিস্থিতিতেও। এজন্য আমি বেশি খুশি।’’
‘‘দলের জন্য পারফর্ম করতে পারা নিশ্চিতভাবেই আনন্দের। আমি পাকিস্তানেও এ ধরণের পারফরম্যান্স করেছি একাধিকবার। আমার জন্য নতুন কিছু নয়। আমি চেষ্টা করেছি ধৈর্য ও ধারাবাহিকতা রাখতে কঠিন মুহূর্তে। পরিস্থিতি অনুযায়ী বোলিং করার চেষ্টা করেছি।’’ - যোগ করেন আলী।
নিজের শেষ ওভার করতে এসে ৪ উইকেট নেন তিনি। বিপিএলে এর আগে কোনো বোলার ওভারে ৪ উইকেট পায়নি। নতুন এই কীর্তি গড়ায় গর্বিত আলী, ‘‘এটা দারুণ অনুভূতি যে এক ওভারে চারটি উইকেট নেওয়া।’’
জাতীয় দলের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে এখনো অভিষেক হয়নি তার। টেস্ট খেলেছেন মোটে ৪টি। গত বছর রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টেও ছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬ উইকেট পেলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার রেকর্ড ঈর্ষণীয়। ৪৭ ম্যাচে ১৭৪ উইকেট ২৫.০২ গড়ে। নিয়মিত লাল বলে ক্রিকেট খেলায় তাকে অনেকেই উপেক্ষিত রাখে সাদা বলের ক্রিকেটে।
কেন এমনটা হচ্ছে সেই কারণ জানাতে গিয়ে আলী বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি এটা অনেকেরই ধারনা, যারা লাল বলের ক্রিকেটে খেলছে তারা সাদা বলের ক্রিকেটে পারফর্ম করতে পারে না। বিশ্বজুড়েই এই ধারনাটা আছে। আমার সাদা বলের ক্রিকেটের সাফল্য ধারা নতুন কিছু নয়। আমি আগেও বলেছি, আমি ক্রিকেটটা উপভোগ করার চেষ্টা করি সেটা চারদিনের ম্যাচ হোক বা ওয়ানডে ম্যাচ হোক। কিংবা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। আমি এখানে এসেছি কেবল উপভোগ করার জন্যই। সেটা যেকোনো ফরম্যাটেই হোক না কেন।’’
চারদিনের ক্রিকেট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে আলী যোগ করেন, ‘‘আমি সব সময়ই বলি, টেস্ট ক্রিকেট ও চারদিনের ক্রিকেট সবচেয়ে কঠিন খেলা। যখন একজন বোলার চারদিনের কিংবা টেস্ট ক্রিকেটের নিয়মিত বোলার হয়, তাহলে সীমিত পরিসরের খেলাগুলো তার জন্য সহজ হয়ে যায়। সেটা সবার জন্যই। আপনি বলতে পারেন, টি-টোয়েন্টি বৈচিত্র্যপূর্ণ খেলা। চারদিনের ক্রিকেট অনেকটাই কন্ডিশন নির্ভর। আপনি সেখানে সব সময়ই চাইবেন কেবল ভালো জায়গায় বোলিং করতে। ফলে তাদের জন্য সীমিত পরিসরের প্রতিযোগিতা তুলনামূলক সহজ হয়ে যায়।’’
ঢাকা/ইয়াসিন