এখন ছবি নির্মাণ করা মানে নিজেকে অপরাধী করে তোলা: বাপ্পারাজ
Published: 6th, February 2025 GMT
রক্তে তাঁর অভিনয়, সেই কারিশমা তিনি দেখিয়েছেন পর্দায়। একজন প্রেমিকা হারানো প্রেমিক কতটা দুঃখ-বিভোর থাকতে পারে, সেটা অভিনয়ে বাপ্পারাজ দেখিয়ে গেছেন। নব্বইর দশকে প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার পর প্রেমিকদের অবস্থা যেমন হতো, বাপ্পারাজ তা অভিনয়ের মাধ্যমে জীবন্ত করে তুলেছেন পর্দায়। তাই আজও ব্যর্থ প্রেমিকের সফল অভিনেতার স্বীকৃতিটা তাঁর দখলেই রয়েছে।
নায়করাজ রাজ্জাকের সন্তান তিনি। পিতার সেই পরিচয়ে নিজেকে তিনি আবদ্ধ রাখেননি। অভিনয়ে নিজের প্রতিভা ও মেধার বিকাশ ঘটিয়ে নিজের আলাদা পরিচয় গড়েছেন। অথচ এ বাপ্পারাজ এখন অভিনয়হীন। তাঁকে দেখা যায় না, সিনেমার পর্দায় কিংবা হালের ওটিটির জোয়ারে। অথচ প্রায়ই তিনি প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন ইস্যুতে। তাঁর গান, তাঁর সিনেমার সংলাপ ফিরে আসে এ জেনারেশনের মাঝে।
সম্প্রতি তাঁর ৩০ বছর আগের ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমায় ‘চাচা হেনা কোথায়?’ সংলাপের কারণে নতুন করে আলোচনায় এলেন বাপ্পারাজ। সঙ্গে খবর এলো বাপ্পারাজ নতুন একটি ওয়েব কনটেন্টে ‘রক্তঋণ’-এ কাজ করেছেন। যেখানে প্রেমিক নয়, অ্যাকশন অবতারে দেখা যাবে তাঁকে। সম্প্রতি একটি ক্যারেক্টার টিজার পোস্ট করে তেমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন বাপ্পারাজ।
যেখানে তিনি বলছেন, ‘অনেক তো বিরহ হলো। এবার একটু অ্যাকশন হয়ে যাক।’ কনটেন্টটি পরিচালনা করছেন মোস্তফা খান সিহান। নির্মাতা জানান, থ্রিলার রহস্য গল্পে নিয়ে আসছি। শুটিং চলমান। তার আগে দর্শকদের জানালাম, কী আনছি আমরা।
২০১৮ সালে রায়হান রাফী পরিচালিত ‘পোড়ামন ২’ ছবিতে দেখা গিয়েছিল বাপ্পারাজকে। বহুবছর পর ছবিতে সিয়ামের বড়ভাই-এর চরিত্রে অভিনয় করে তিনি প্রশংসিত হয়েছিলেন। এরপর থেকে স্ক্রিনে মিসিং বাপ্পারাজ! যদিও এই অভিনেতা একাধিকবার ইচ্ছে পোষণ করেন যে, তিনি ভালো গল্প, চরিত্র পেলে কাজ করবেন, তবুও কেন তাঁকে পর্দায় দেখা যায় না?
বাপ্পারাজ বলেছিলেন, আমার কাছে যেসব সিনেমার প্রস্তাব যায়, প্রায় একই চরিত্র। বারবার একই চরিত্রে কাজ করতে মজা লাগে না। বয়স হয়েছে, তাই ভারী কিছু চরিত্রে অভিনয় করতে চাই।
‘বাবা কেন চাকর’ ছবির নায়ক বাপ্পারাজ বলেন, এ শুক্রবারেও একটি ছবির প্রস্তাব পেয়েছি। পাণ্ডুলিপি পড়ে দেখলাম, বেডসিন। এ বয়সে আমি কি বেডসিন করব? আরে ব্যাটা, আগে দেখে আয় আমার ছবিগুলো। আমি কি এ ধরনের একটি ছবিও করেছি? মাঝখানে ওটিটিতেও কয়েকটি প্রস্তাব পেয়েছিলাম, সেগুলোও এমন অ্যাডাল্ট। ক্যামেরার বাইরে থাকতে খুব কষ্ট হয়। সারাক্ষণই কানে বাজে, লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন। মিস করি শুটিং। তাই বলে এ ধরনের চরিত্রে তো অভিনয় করতে পারব না। সমাজ নষ্ট করার অধিকার তো আমার নেই।
বাপ্পারাজদের নিজস্ব প্রোডাকশন হাউস ‘রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন’ থেকে নতুন ছবি করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন ছবি নির্মাণ করা মানে নিজেকে অপরাধী করে তোলা। একসময় যারা আমাদের অফিসে এসে বসে থাকত, এখন তারা পরিবেশক। তাদের হাতে-পায়ে ধরে ছবি চালাতে পারব না। আমাদের মাফ করবেন। কখনও ইন্ডাস্ট্রি স্বাভাবিক হলে আবার ছবি নির্মাণ করব।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর দ য়
এছাড়াও পড়ুন:
বৈদেশিক ব্যবসায় কাজ করবে বেসিস-কোরিয়া
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার কোম্পানির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ব্যবসা সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা বাড়াতে বেসিস কোরিয়া ডেস্ক ঘোষণা করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়া উদ্ভাবনমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি দেশ, যেখানে বাংলাদেশের আইসিটি খাতের জন্য রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশি আইসিটি খাতের সব প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কার্যকর অংশীদারিত্ব বাড়াতে পারবে। বেসিস কোরিয়া ডেস্ক হবে কৌশলগত প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে জ্ঞান বিনিময় ও যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ সহজ ও বাজার সম্প্রসারণের দ্বার উন্মোচিত হবে।
নতুন ডেস্ক প্রসঙ্গে বেসিস সহায়ক কমিটির সদস্য (অর্থ) ফৌজিয়া নিগার সুলতানা বলেন, বেসিস কোরিয়া ডেস্কের সদস্যরা এখন থেকে উদ্ভাবনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। যার মধ্যে রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘কোরিয়া ডে’ পালন, কোরিয়ান বাজারে প্রবেশে নীতিগত সহায়তা, কোরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণার সঙ্গে সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা আয়োজন। অন্যদিকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যৌথ উদ্যোগ বা ফ্র্যাঞ্চাইজিংয়ের সুযোগ তৈরি হবে।
উদ্যোক্তারা বলেন, নতুন ডেস্কের কারণে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে প্রাপ্ত ব্যবসায়িক অনুসন্ধান বা লিড সদস্যের মধ্যে শেয়ার করা হবে, কোরিয়াভিত্তিক কয়েকটি আইসিটি ইভেন্টে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকবে। অন্যদিকে কোরিয়ান কোম্পানির সঙ্গে নেটওয়ার্কিং ও বিটুবি সেশনের সুযোগ তৈরি হবে। বাংলাদেশে অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসের সঙ্গে প্রকল্প গ্রহণ ও কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কয়কা), কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সির (কট্রা) মতো কোরিয়ান উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও নীতিগত সহায়তা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং সিক দুদেশের জন্য পারস্পরিক সুবিধা উপস্থাপন করে বলেন, বেসিস কোরিয়া ডেস্ক আইসিটি সেক্টরে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সমন্বয়ের মাইলফলক হবে। বেসিস-কোরিয়া ডেস্ক কোরিয়ার রপ্তানি বাজারকে সমৃদ্ধ করবে। নতুন উদ্যোগ দুই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার কোম্পানির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ব্যবসা সম্প্রসারণ ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা ফলপ্রসূ হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্মসচিব (আইসিটি প্রমোশন ও গবেষণা অনুবিভাগ, অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো: তৈয়বুর রহমান বলেন, বেসিস কোরিয়া ডেস্ক শুধু প্ল্যাটফর্ম নয়: বরং বেসিস সদস্যসহ বাংলাদেশি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য অপার সম্ভাবনার ইঙ্গিত করছে। বেসিস-কোরিয়া ডেস্কের উদ্যোগ বাংলাদেশকে শক্তিশালী আইটি হাব রূপান্তরে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
বেসিস-কোরিয়া ডেস্কের চেয়ারম্যান অ্যাডওয়ার্ড কিম বলেন, বাংলাদেশি ও কোরিয়ান প্রযুক্তি কোম্পানির মধ্যে কৌশলগত বন্ধুত্ব তৈরিতে কাজ করবে ডেস্কটি। নতুন ডেস্কের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যেকার তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের সেক্টরে পারস্পরিক ব্যবসায়িক সুসম্পর্ক তৈরিতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার ট্রিলিয়ন-ডলারের প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি ও ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই) কৌশলগত সহযোগিতার জন্য আদর্শ মডেল তৈরি করেছে। বাংলাদেশ তার দৃঢ়, প্রাণবন্ত তরুণ জনগোষ্ঠী ও সংস্কারভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্ভাবনী প্রবৃদ্ধির সঙ্গে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।
সভাপতির বক্তব্যে বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির বলেন, বেসিস-কোরিয়া ডেস্ক প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে কোরিয়ার বিশাল বাজারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত করা। ফলে প্রযুক্তি ও জ্ঞান বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা আমাদের আইটি পেশাজীবীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।