ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় পাকিস্তান
Published: 6th, February 2025 GMT
চলমান কাশ্মীর সংকট সমাধানে ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে চায় পাকিস্তান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ আলোচনা শুরুর পরিবেশ সৃষ্টি করতে নয়াদিল্লিকে আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার পাকিস্তান অধিকৃত আজাদ কাশ্মীরের বিধানসভার বিশেষ সেশনে ভাষণ দিয়েছেন শেহবাজ। সেখানে তিনি বলেন, আমরা কাশ্মীরসহ অন্যান্য যাবতীয় সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চাই। ভারতের উচিত ২০১৯ সালের ৫ আগস্টের চিন্তা-ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসা এবং জাতিসংঘে প্রদান করা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সংলাপের জন্য এগিয়ে আসা। সূত্র: এমএসএন
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভারতের আধা সামরিক বাহিনী সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটে। এতে নিহত হন অন্তত ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান। হামলার মূল হোতা ছিল পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই মোহাম্মদ।
ওই ঘটনার ৬ মাস পর ৫ আগস্ট পার্লামেন্টে ভোটের ভিত্তিতে সংবিধান থেকে ৩৭০ নম্বর ধারা বিলোপ করে নয়াদিল্লি। সে ধারাটিতে জম্মু এবং কাশ্মীরকে ‘স্বায়ত্বশাসিত রাজ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। সাংবিধানিক ধারা বিলোপ করে জম্মু-কাশ্মিরকে সরাসরি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়।
এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনেন। এখনও সেই অবস্থাই চলছে।
বুধবারের বক্তব্যে শেহবাজ বলেন, দক্ষিণ এশিয়া এবং উপমহাদেশের সার্বিক স্থিতিশীলতার স্বার্থেই পাকিস্তান ও ভারতের সংলাপ শুরু করা উচিত। এ প্রসঙ্গে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর ঐতিহাসকি সফরকে স্মরণ করেন তিনি। ১৯৯৯ সালের সেই সফরে পাকিস্তানে এসে ‘লাহোর ঘোষণা ১৯৯৯’ স্বাক্ষর করেছিলেন বাজপেয়ী।
গত কয়েক বছর ধরে সামরিক খাতকে শক্তিশালী করছে ভারত; বুধবারের বক্তব্যে তারও সমালোচনা করেছেন শেহবাজ। সেই সঙ্গে কাশ্মীরের জনগণের প্রতি পাকিস্তানের আদর্শগত, কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ভারত নিজেদের সামরিক খাতকে সমৃদ্ধ করছে; কিন্তু এটি উপমহাদেশের আঞ্চলিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতা আনতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না। উন্নয়নের জন্য শান্তি ব্যতীত আর কোনো বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, কাশ্মীর সংকট সমাধানের একমাত্র পথহলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজোল্যুশন মেনে সেখানকার জনগণকে স্বাধিকার প্রদান করা। কাশ্মীরের জনগণের প্রতি আমাদের আদর্শগত, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সমর্থন চিরদিন অব্যাহত থাকবে।
.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান আসামির জামিন বাতিল করে শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ
বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।
দাসেরহাট বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে সাধুরপাড়া নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়। পরে ইউনিয়ন পরিষদের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপির বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান। মানববন্ধনে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গাজীউর রহমান মোল্লা বলেন, একাধিক মামলার আসামি বাবু জামিনে এসে আবারও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার দখলের পাঁয়তারা করছেন। সাধুরপাড়া ইউনিয়নে কোনো খুনি, সন্ত্রাসী থাকবে না। তাঁকে সাধুরপাড়ার জনগণ অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। প্রয়োজনে এলাকাবাসী তাঁকে প্রতিহত করবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৪ জুন রাত ১০টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌর শহরের পাটহাটি এলাকায় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে কুপিয়ে জখম করা হয়। ১৫ জুন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ১৭ জুন ২২ জনের নামে থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম। মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপির বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু কয়েক মাস আগে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।
গত বছরের ২৭ আগস্ট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। অভিযুক্তরা হলেন– প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবু, রাকিবিল্লাহ রাকিব, রেজাউল করিম, শরিফ মিয়া, মনিরুজ্জামান মনির, বাদশা মিয়া, মো. শাহজালাল, শফিকুল ইসলাম ও তোফাজ্জল মিয়া। পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়েছেন মামলার বাদী মনিরা বেগম।