বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ক্রিকেটারদের তালিকা মোটামুটি চূড়ান্ত। নতুন করে চুক্তিতে জায়গা করে নিচ্ছেন চার ক্রিকেটার। তিন বছর পর কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ফিরছেন সৌম্য সরকার। বাদ পড়ছেন সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহান। সাকিব গত বছর জাতীয় দলে খেললেও রাজনৈতিক কারণে ক্রিকেটে সম্পৃক্ত থাকতে পারছেন না। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে বিবেচনা করা হবে না বলে জানান বিসিবির একজন কর্মকর্তা। আর সোহান গত বছর জাতীয় দলে নিয়মিত ছিলেন না। সংযোজন-বিয়োজনের মধ্যে নতুন একটি ক্যাটেগরি করা হতে পারে। কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে হবে সেই তালিকা। জাকির হাসান, মাহমুদুল হাসান জয় ও নাঈম হাসানকে দেওয়া হতে পারে বিশেষ চুক্তিতে। নির্বাচক প্যানেল সূত্রে জানা গেছে, বিসিবির শীর্ষ কর্তারা এই বিশেষ ক্যাটেগরিতে রাজি আছেন।
২০২৫ সালের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ২১ থেকে ২৪ ক্রিকেটারকে রাখার পরিকল্পনা বিসিবি নির্বাচক প্যানেলের। গত বছর টি২০ থেকে অবসর নেওয়া মাহমুদউল্লাহ শুধু ওয়ানডে চুক্তিতে থাকছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর অবসর নিলে বিসিবির নীতিমালা অনুযায়ী চুক্তি বাতিল বলে গণ্য হবে বলে জানান বোর্ডের একজন কর্মকর্তা। পঞ্চপাণ্ডব থেকে কেবল মুশফিকুর রহিমকে দুই সংস্করণের চুক্তিতে রাখা হচ্ছে। টেস্ট এবং ওয়াডেতে দলের নিয়মিত ক্রিকেটার তিনি। কেন্দ্রীয় চুক্তির সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার মুশফিক।
নতুন করে চুক্তিভুক্ত হচ্ছেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম, উইকেটকিপার ব্যাটার জাকের আলি অনিক, ফাস্ট বোলার নাহিদ রানা ও লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। তামিম সাদা বলের চুক্তিতে থাকবেন। জাকেরকে তিন সংস্করণে নেওয়া হতে পারে। রানাকে দেওয়া হবে টেস্ট আর ওয়ানডেতে। সাদা বলের চুক্তিতে ফিরছেন সৌম্য সরকার। ২০২৩ সাল থেকে জাতীয় দলে নিয়মিত বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার। ২০২১ সালে শেষবার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে রাখা হয়েছিল তাঁকে। সেবার টি২০ বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলে অনিয়মতি হয়ে পড়েন। চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দ্বিতীয়বার জাতীয় দলের কোচ হওয়ার পর ভাগ্যের শিকে ছিঁড়ে সৌম্যের। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ড সফর দিয়ে জাতীয় দলে নিয়মিত হন। ওয়ানডেতে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি দিয়ে ছন্দে ফেরেন। সম্প্রতি টি২০ ক্রিকেটেও ভালো করছেন। ওয়ানডে ও টি২০ ক্রিকেটের ওপেনিং জুটিতে কোচিং স্টাফ ও নির্বাচকদের প্রথম পছন্দ তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে সে বার্তা পরিষ্কার দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়লেও লিটন কুমার দাসকে তিন সংস্করণের চুক্তিতে রাখা হবে। মেহেদী হাসান মিরাজও আর তাসকিন আহমেদ তিন সংস্করণের খেলোয়াড়। গত বছর শুধু সাদা বলের চুক্তিতে ছিলেন তিনি। হাসান মাহমুদ, মুমিনুল হক, তাইজুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ টেস্টের ক্রিকেটার। সাদা বলের দুই সংস্করণে থাকবেন তাওহীদ হৃদয়, মুস্তাফিজুর রহমান।
শেখ মেহেদী, নাসুম আহমেদ টি২০তে চুক্তি পাবেন। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামকে নিয়ে আলোচনা চলছে। নির্বাচকরা জানান, বোর্ড মিটিংয়ের আগেই চূড়ান্ত তালিকা ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে। বিশেষ ক্যাটেগরি করার কেন প্রয়োজন হলো, জানতে চাওয়া হলে একজন নির্বাচক বলেন, ‘জাকির হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, নাঈম হাসান চুক্তিতে ছিল। তাদের ছেড়ে দিলে জাতীয় লিগের চুক্তিতে চলে যাবে। আমরা চাই না তাদের বাদ দিতে। কেন্দ্রীয় চুক্তিতে না থাকলেও ভিন্ন একটি ক্যাটেগরিতে রাখা হবে। সেটার নাম কী হবে, পরে জানতে পারব।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় দল স স করণ গত বছর
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমি প্রবাসী’র বার্ষিক প্রতিবেদন: ২০২৪ সালে বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা কমেছে ২৭%
২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা ২৭ শতাংশ কমেছে। গত বছর মোট ১০ লাখ ৯ হাজার ১৪৬ জন বাংলাদেশি কর্মী বিদেশে গেছেন। আগের বছর গিয়েছিলেন ১৩ লাখ ৯০ হাজার ৮১১ জন।
ডিজিটাল অভিবাসন প্ল্যাটফর্ম ‘আমি প্রবাসী’র বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২৪-এ এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই নিম্নগামী ধারার মধ্যেও একটি ইতিবাচক দিক রয়েছে। সেটি হলো, ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর বিএমইটি নিবন্ধনে নারীদের অংশগ্রহণ দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
২০২৪ সালে আগের বছরের মতো বাংলাদেশি কর্মীদের শীর্ষ গন্তব্য ছিল সৌদি আরব। মোট কর্মীর ৬২ শতাংশ গেছেন সৌদি আরবে। দেশটিতে অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতে দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে।
বাংলাদেশি কর্মীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম গন্তব্য মালয়েশিয়া। সেখানে কর্মীদের যাওয়া উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ২০২৪ সালে ৯৩ হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় গিয়েছেন। ‘আমি প্রবাসী’র বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, মালয়েশিয়ার নতুন শ্রমনীতি বাংলাদেশি কর্মী কমে যাওয়ার মূল কারণ।
অভিবাসন কমে যাওয়ার পেছনে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নানা কারণও ভূমিকা রেখেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ‘আমি প্রবাসী’র বার্ষিক প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অস্থিরতা বিদেশগামী কর্মীদের কিছুটা অনিশ্চয়তায় ফেলেছে। দক্ষ কর্মী তৈরির অন্যতম মাধ্যম, কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সেও ভর্তির সংখ্যা কমেছে। ২০২৪ সালে ভর্তি হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ১৬৬ জন, যা আগের বছর ছিল ২ লাখ ৩৬ হাজার ২৭০ জন।
২০২৪ সালে বিএমইটি নিবন্ধনের মোট সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৭৬, যা ২০২৩ সালের ৬ লাখ ৬০ হাজার ৮৮টি।
আমি প্রবাসীর বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে মোট বিএমইটি নিবন্ধনে নারী অভিবাসীদের নিবন্ধনের হার ছিল ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশে।
আমি প্রবাসীর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক ই হক বলেন, নারীদের বিএমইটি নিবন্ধনের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রমাণ করে বাংলাদেশের নারীরা আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার (পেশাজীবন) গড়তে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছেন। এটি বৈশ্বিক শ্রমবাজারে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে ইতিবাচক পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করে।