নোয়াখালীতে ভোটার হতে উদ্বুদ্ধ করতে গিয়ে হামলায় বিএনপির নেতাসহ আহত ৭
Published: 6th, February 2025 GMT
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম উদ্বুদ্ধ করতে গিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ দলটির অন্তত সাত নেতা-কর্মী হামলায় আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে হরণী ইউনিয়নের বয়াচরসংলগ্ন সীমানা নিয়ে বিরোধপূর্ণ এলাকা তেগাছিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
পরে পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হরণী ইউনিয়নের বয়াচরসংলগ্ন তেগাছিয়া বাজারের সীমানা নিয়ে পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুরের রামগতি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। দুই উপজেলার বাসিন্দারাই ওই এলাকাটি নিজেদের উপজেলার অংশ বলে দাবি করে আসছেন। গতকাল সন্ধ্যায় হরণী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান দোলন নিজ দল এবং স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর কয়েকজন নেতাকে নিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্বুদ্ধ করতে বিরোধপূর্ণ তেগাছিয়া বাজারে যান।
গতকাল সন্ধ্যা আনুমানিক সাতটার দিকে তেগাছিয়া বাজারে জড়ো হওয়া স্থানীয় লোকজনের উদ্দেশে বক্তব্য দেন আক্তারুজ্জামান দোলন। তাঁর বক্তব্য চলার সময় ওই এলাকাটিকে তিনি হাতিয়া থানার অন্তর্গত বলে দাবি করেন। সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে হইচই শুরু হয়। একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় রামগতি এলাকার একদল লোক অতর্কিতভাবে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের ওপর হামলা চালান। হামলায় বিএনপির নেতা আক্তারুজ্জামান (৪৯), ইমাম হাসান (৪৫), জমির উদ্দিন (৪২), মো.
ঘটনার প্রসঙ্গে বিএনপির নেতা আক্তারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ উপলক্ষে ভোটারদের সচেতন করতে তাঁরা হাতিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে হরণী ইউনিয়নের বয়ারচরের তেগাছিয়া বাজার, টাংকির বাজার এলাকার মাইকিং ও সচেতনতামূলক বৈঠক করেছেন। গতকাল এমন একটি সমাবেশ করার জন্য তেগাছিয়া বাজারে গেলে রামগতি এলাকার ‘একটি সন্ত্রাসী বাহিনী’ তাঁদের ওপর হামলা চালান।
হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন হাতিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল বাতেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে তিনিও তেগাছিয়া বাজারে গিয়েছিলেন। বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা ভোটার তালিকা হালনাগাদ নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময় এলাকাটিকে হাতিয়া উপজেলার অংশ বলে দাবি করার সঙ্গে সঙ্গে লোকজন হইচই শুরু করেন। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায় তাঁরা। তখন পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে নেতাদের উদ্ধার করেন। পরে রামগতি থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র এল ক র গতক ল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় ঈদে নতুন নোট বিতরণ স্থগিত
এবার ঈদে ব্যাংকের শাখা থেকে কোনো নতুন নোট মিলবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, টাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় কয়েকটি পক্ষ থেকে আপত্তি উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে ঈদ সামনে রেখে নতুন নোট বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তবে বাজারে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ যেসব নোট রয়েছে, তার ব্যবহার অব্যাহত থাকবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী মাসের মধ্যে নতুন নকশার নোট বাজারে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিভিন্ন ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনসাধারণের মাঝে নতুন নোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো। পাশাপাশি ব্যাংকের শাখায় যে নতুন নোট গচ্ছিত রয়েছে, তা বিনিময় না করে সংশ্লিষ্ট শাখায় সংরক্ষণ করার জন্য বলা হলো। চিঠিতে পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট দ্বারা সকল নগদ লেনদেন কার্যক্রম সম্পাদনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারাও নতুন নোট পাবেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নতুন টাকা পাওয়া যাবে ১৯ মার্চ থেকে। এবার ৫, ২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোট দেওয়া হবে। নতুন নোট বিনিময় হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক ও কয়েকটি ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে। ২৫ মার্চ পর্যন্ত জনসাধারণ ও গ্রাহকদের মধ্যে নতুন নোট বিনিময়ের পরিকল্পনা ছিল। এর মধ্যে নতুন নোট বিতরণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, এবার ঈদে নতুন নোট বিনিময় করা হবে না। তবে বাজারে যেসব নোট রয়েছে, তার প্রচলন অব্যাহত থাকবে।
জানা গেছে, নতুন নকশার নোট বাজারে আসবে এপ্রিল-মে মাসে। এবার টাকার নকশা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি বাদ দেওয়া হচ্ছে। এর পরিবর্তে জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নতুন নোটের নকশায় স্থান পাচ্ছে।
টাকা ছাপানোর সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, বিশ্বের মাত্র ৮–১০টি কারখানা থেকে ১৯০টি দেশ টাকা ছাপানোর কাগজ কিনে থাকে। ফলে চাইলেই হঠাৎ করে টাকার নকশা পরিবর্তন করে নতুন নোট ছাপানো যায় না। এ ছাড়া কালি, ডাইসসহ টাকা ছাপানোর সব সরঞ্জাম বিদেশ থেকে আনতে হয়। ফলে নকশা পরিবর্তন করে নতুন নোট আনতে দুই বছর সময় প্রয়োজন। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দ্রুত সময়ে নতুন নোট আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে টাকার নিরাপত্তার পাশাপাশি মানও বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে।