ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের নাম মুছে নতুন নামকরণ করলেন শিক্ষার্থীরা
Published: 6th, February 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম হাতুড়ি দিয়ে তুলে ফেলেছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা নতুন নাম দিয়েছেন ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল’।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হলটির নাম মুছে নতুন নামকরণ করেন।
এ ছাড়া গতকাল দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য দুটি হলে থাকা ফলক থেকে শেখ হাসিনার নাম মুছে ফেলেছেন শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুনধানমন্ডি ৩২ নম্বর: বই, রড, লোহা যে যা পাচ্ছেন নিয়ে যাচ্ছেন২১ মিনিট আগেছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তৃতা প্রচারকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার রাত আটটার আগেই রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। একপর্যায়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। রাত ১১টার দিকে একটি ক্রেন এবং পরে একটি এক্সকাভেটর এনে বাড়ি ভাঙা শুরু হয়। রাত দুইটা নাগাদ বাড়িটির বড় অংশ ভাঙা শেষ হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালেও ভাঙার কাজ চলছিল।
নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল’.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের কথা রাখল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, প্রধান ফটকের নাম হচ্ছে শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। গত বছরের ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মারা যান। মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত তিনি আন্দোলনরত ক্লান্ত–শ্রান্ত শিক্ষার্থী ও জনতাকে পানি পান করাচ্ছিলেন। ‘ভাই, পানি লাগবে পানি’ বলে মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার দৃশ্য দেশবাসীর হৃদয় নাড়িয়ে দেয়। সেই মুগ্ধর স্মরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের নামকরণ করা হয়েছে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ’।
আগামীকাল রোববার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ উদ্বোধন করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এর আগে গত ৫ আগস্টের পরপরই নির্মাণাধীন ওই ফটকের সামনে শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ লিখে দেন শিক্ষার্থীরা। সেটিই ফটকের নামকরণ করার জন্য দাবি তুলেছিলেন তাঁরা। ‘বিজয় তোরণ’ হিসেবে ফটকটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছিল।
আগামীকালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবদুল মজিদ, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নাজমুল আহসান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হারুনর রশীদ খান, ট্রেজারার অধ্যাপক মো. নূরুন্নবী এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ও মুগ্ধের জমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান (স্নিগ্ধ)। সভাপতিত্ব করবেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো মীর মুগ্ধর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ও বর্তমান উপাচার্য মো. রেজাউল করিম। ওই সভায় উপস্থিত থেকে মীর মুগ্ধর বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান (দীপ্ত) ও জমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান (স্নিগ্ধ) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা স্মৃতিচারণ করেন।
সভায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়। ওই দাবিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় দাবি ছিল প্রধান ফটকের নাম শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া। অন্যান্য দাবির মধ্যে ছিল ১৮ জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান ও যথাযথ মর্যাদায় তা পালন করা, টিএসসির সামনে শহীদ মীর মুগ্ধর স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ ও স্মৃতিফলক নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে রাষ্ট্রের কাছে মীর মুগ্ধ হত্যার বিচার চেয়ে আবেদন এবং এই আন্দোলনে সব শহীদের স্মরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে জুলাই গণহত্যা নামে একটি স্মৃতি কর্নার করা।
পরবর্তী সময়ে মো. রেজাউল করিম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণের উদ্যোগ নেন। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৩০তম সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের নাম শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ করা হয়।