চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মাদ্রাসার বার্ষিক সভার অনুষ্ঠানে মুঠোফোনে ভিডিও করার সময় কিশোর-তরুণদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক কিশোর নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের তাঁতীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মুমিনুল হক (১৭) ওই ইউনিয়নের নালারকুল এলাকার মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে। সে পুটিবিলা উচ্চবিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ত। গুরুতর আহত মো.

মুকিত (২১) নামের এক তরুণকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে বাড়ির পাশের একটি মাদ্রাসার বার্ষিক সভায় দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ সময় ছুরিকাঘাতে মুমিনুল গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

লোহাগাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রীতিপূর্ণা হৈমন্তিকা দাশগুপ্তা প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত ১০টার দিকে মুমিনুল নামের এক কিশোরকে হাসপাতালে আনেন স্থানীয়রা। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। তার বুকে ছুরির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। এরপর পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি আরিফুর রহমান জানান, মাদ্রাসার বার্ষিক সভা উপলক্ষে সেখানে ছোটখাটো মেলা বসেছিল। সেখানে কিশোর-তরুণেরা টিকটক করার জন্য ভিডিও করছিল। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও সংঘর্ষ হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল কর্মী নিহত

নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বালুর মাঠ এলাকায় ছুরিকাঘাতে অপূর্ব নামের এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি পঞ্চবটির বিসিক শিল্পনগরীর টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক ছিলেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত ছাত্রদলের মিছিল শেষে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রদল কর্মীরা সম্রাট নামের একজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা নিহত ও হামলাকারী দুইজনকেই ছাত্রদল কর্মী বললেও, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, হামলাকারী বিএনপির কেউ না। তাদের কর্মসূচি বানচাল করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মোহাম্মদ ইয়ামিন জানান, ধর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্রদলের মিছিলের কর্মসূচি শেষ করে তারা চাষাড়াস্থ শহীদ মিনারের পেছন দিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় তিনি দেখতে পান, পপুলারের পেছন দিকে নিহত অপূর্ব ও হামলাকারী সম্রাটের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছে। এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। এসময় তিনি অপূর্বকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখেন। পরে তার বুকে ছুরিবিদ্ধ দেখতে পান।

তিনি জানান, হামলার পরে সম্রাট পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। তাকে ছাড়িয়ে নিতে তার ভাই আসলে তাকেও গণপিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে সম্রাটকে উদ্ধার করে। এসময় অপূর্বকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ও সম্রাটকে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অপূর্বকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের বাবা মাসদাইর জামালের গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ খোকন ও নিহতের স্ত্রী সাথী আক্তার জানান, নিহত যুবক বিসিকের টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক। তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার জাবুটিয়া গ্রামে। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তারা বুঝতে পারছেন না।

হাসপাতালে সম্রাট হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, যারা হামলা করেছিল তারা চলে গেছে। তিনি শহীদ মিনারের পাশের বেইলি টাওয়ারের একটি ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারী।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, সারাদেশে ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদে ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদলের মিছিলে নিহত অপূর্ব এসেছিল। যে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তিনি বিএনপির কেউ না। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাদের কর্মসূচি বাতিল করতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।        

সম্পর্কিত নিবন্ধ