দামে কম মানে ভালো তিসির বীজের এত উপকার জানলে চমকে যাবেন
Published: 6th, February 2025 GMT
১. তারুণ্য ধরে রাখে
তিসির অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকায়। ফলে ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয় না এবং ত্বক থাকে টান টান। ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে তিসি। এ ছাড়া তিসির তেল মালিশ করলে শরীর থাকে সতেজ। এই তেল মুখে মাখলেও ত্বক উজ্জ্বল হয়।
২. ক্যানসার প্রতিরোধ করেতিসির বীজে মেলে আলফা লাইনোইক অ্যাসিড, যা আর্থ্রাইটিস, হাঁপানি, ডায়াবেটিস ও ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। বিশেষত কোলন ক্যানসার প্রতিরোধে তিসির বীজ রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
৩.শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে
নিয়মিত তিসি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অংশ সুস্থ ও কার্যকর থাকে।
৪. হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করেতিসি বীজের লাইগন উপাদানটপি অন্ত্রে সক্রিয় থেকে এমন এক উপাদান তৈরি করে, যা হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫. ওমেগা–৩–এর ভালো উৎসওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস তিসির বীজ। ফলে যাঁরা নিরামিষভোজী, তাঁরা নিয়মিত তিসির বীজ খেতে পারেন।
হজমশক্তি বাড়ানো ও পেটে জমে থাকা মেদ কমানোর জন্য তিসি খেতে পারেনউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আদমজীতে ব্যবসায়িরা খুশি হলেও চাঁদাবাজরা ক্ষুব্দ
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে পতন ঘটে আওয়ামী লীগের ১৭ বছরের দু:শাসনের। গত ৫ আগষ্ট থেকে ৮ আগষ্ট পর্যন্ত সারাদেশে কোনো সরকার ব্যবস্থা না থাকায় কতিপয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীর পরিচয়ে চলতে থাকে ব্যাপক লুটপাট ও চাঁদাবাজি।
নানা হয়রানির শিকার হতে হয় সাধারণ ব্যবসায়ী ও জনসাধারণকে। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ব্যবসা কেন্দ্রিক অঞ্চল হিসেবে খ্যাত আদমজী এলাকাতে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে চলতে থাকে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যাপক চাঁদাবাজি।
টাকা না দিলে কেড়ে নেয়া হতো পণ্য, করা হতো মারধর। এসব মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি বন্ধে মাঠে নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। তারা রাস্তায় নেমে হ্যান্ড মাইকে কাউকে চাঁদা না দেয়ার আহ্বান জানান। কেউ চাঁদাবাজি করতে এলে সবাই মিলে তাকে আটকে রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় শিক্ষার্থীদের জানানোর অনুরোধও করেন তারা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের কঠোর অবস্থানের কারণে বন্ধ হয়ে যায় চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম। নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের কাপড় ব্যবসায়ী জয়নাল জানান, আগস্টের দিকে প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই আমাদের কাছে চাঁদা নিতে আসতো। চাঁদা না দিলে মারধর করতো।
দোকান থেকে কাপড় নিয়ে যেতো। আল্লাহর রহমতে এখন আমরা ভালো আছি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আমাদের পাশে থাকায় এখন আর কাউকে চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে না।
আদমজী নতুন বাজার এলাকার দোকানদার জিল্লুর জানান, আমাদের দোকানগুলোর মালিক আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় ৫ আগস্টের পর প্রতিমাসে একেক গ্রুপ জোরপূর্বক তার সকল দোকান ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল নিয়ে যেতো।
কিন্তু আমরা চাইতাম প্রকৃত মালিককে ভাড়া দিতে। পরবর্তীতে গত নভেম্বরে আমাদের দোকান মালিকের স্ত্রী রোকেয়া রহমান বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কয়েকজন নেতৃবৃন্দের সহায়তায় এখন তার কাছে আমরা প্রতিমাসের ভাড়া তুলে দিতে পারছি। এটাই আমাদের অনেক স্বস্তির বিষয়। আমরা এখন নিরাপদে ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারছি।
এ বিষয়ে রোকেয়া রহমান বলেন, গত ১২/১৩ বছর ধরে রেলওয়ের কাছ থেকে লিজ নিয়ে এই জমিতে আমরা দোকানঘর নির্মান করে ভাড়া দিয়েছি। কিন্ত ৫ আগস্ট এর পর কিছু লোক জোর করে ভাড়া উঠিয়ে নিয়ে যায়, এবং ভাড়াটিয়াদের ভয়ভীতি দেখায়। পরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা আমাদের পাশে দাঁড়ায়। তাঁদের সহযোগিতায় আমরা ভাড়া বুঝে পাচ্ছি।
ওদিকে এবার ঈদে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীর নতুনবাজার হকার্স মার্কেট ও ফুটপাতের ব্যবসায়িরা চাঁদাবাজি মুক্ত থাকায় খুশি হলেও মন খারাপ চিহ্নিত চাঁদাবাজ চক্রের। এই চাঁদাবাজ চক্রটি বছরের পর বছর ধরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে আসছে। ঈদ আসলে তাদের চাঁদার রেট বেড়ে যায়।
এবার তারা ব্যাপক চাঁদাবাজির প্রস্তুতি নিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত চাঁদা তুলতে পারেনি। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে মাইকিং করে কাউকে চাঁদা না দেয়ার আহবান জানিয়ে ব্যবসায়িদের পাশে দাঁড়ায়। এতে করে ছাত্রদের কাছে পেয়ে ব্যবসায়িরাও সাহসী হয়ে ওঠে।
ব্যবসায়ি ও স্থানীয়দের তথ্যমতে, গত ১৫/১৬ বছর ধরে প্রতি শুক্রবার আদমজী নতুন বাজার এলাকায় রেলওয়ের জমিতে হকার্স মার্কেট ও নতুন সড়কের দুই পাশের ফুটপাতে বিভিন্ন এলাকার কয়েকশত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি দোকার বসায়। নতুনবাজার ও সোনামিয়া বাজার এলাকার একটি চিহ্নিত চাঁদাবাজ চক্র এই সকল ব্যবসায়িদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলতো।
৫ আগস্টের পর চাঁদাবাজদের একটি অংশ পালিয়ে যায়। কিন্তু আরেকটি অংশ নব্য চাঁদাবাজদের সাথে নিয়ে চাঁদা উঠানো শুরু করে। ৫ আগস্টের পর ৬ মাস ধরে চাঁদাবাজি করে আসছে তারা। এক পর্যায়ে ঈদকে সামনে রেখে ব্যাপক চাঁদাবাজির ছক আঁকে চাঁদাবাজ চক্রটি। এবং ৭ মার্চ শুক্রবার রমজানের মধ্যে ব্যাপক চাঁদাবাজি করে চক্রটি।
এ নিয়ে ব্যবসায়িদের মাঝে চাপা ক্ষোভ দেখা দেয়। কিন্তু ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস করেনি। বিষয়টি জানতে পেরে ৮ মার্চ শনিবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে মাঠে নামে। এবং মাইকিং করে কাউকে চাঁদা না দেয়ার আহবান জানায়। ছাত্রদের আহবানে সাড়া দিয়ে ব্যবসায়িরা চাঁদা দেয়া থেকে বিরত থাকে।
এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এসব ভূমিকাকে ভালো ভাবে নিতে পারেননি এক শ্রেণির কতিপয় রাজনৈতিক নেতা ও চাঁদাবাজরা। কারণ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কঠোর অবস্থানের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে তাঁদের চাঁদাবাজি ও লুটপাট।
যার ফলে ওই চাঁদাবাজ চক্র বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে নেমেছে। তাঁদেরকে বিতর্কিত করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফেইক আইডি খুলে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার যুগ্ম আহবায়ক মেহরাব হোসেন প্রভাত বলেন, এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকার একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মানের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। দেশব্যাপী নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও বৈষম্য মুক্ত করতে ছাত্ররা রাজপথে প্রাণ দিয়েছে।
ছাত্র-জনতার সফল আন্দোলনে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়। কোন দলকে চাঁদাবাজি আর নৈরাজ্যের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ছাত্র-জনতা আন্দোলন করেনি।
লুটপাট আর চাঁদাবাজির সাথে কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকে জনতার সহায়তায় আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হবে। তাই দেশের স্বার্থে সরকারকে সহযোগীতার আহবান জানান তিনি।
কোথাও কোন অন্যায় সংঘটিত হলে বৈষম বিরোধী ছাত্ররা তা প্রতিহত করবে। কোনো অপপ্রচার আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।