কৃষকের সার পাচারে বিএনপির দুই নেতা
Published: 6th, February 2025 GMT
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জৈব সার চুরির অভিযোগ উঠেছে দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল ও এডিপি থেকে বরাদ্দ পাওয়া সারের মধ্যে ১২২ বস্তা পাচারের সময় আটক করেন স্থানীয় জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি নেতাকর্মী। তাদের ভাষ্য, একই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার ও সহসভাপতি খাদেমুল ইসলাম খোকন এই সার পাচারে জড়িত।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদ গুদাম থেকে পাচার হওয়া সার জীবননগর বাসস্ট্যান্ডে আটক করা হয়। পরে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির নেতাকর্মী সারভর্তি পাওয়ার টিলার চালককে আটক করে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করেন। তাদের সঙ্গে স্থানীয় জনতাও যোগ দেয়। পরে উত্তেজিত জনতা বিএনপির দুই নেতার বাড়িতে হামলা চালায়।
পাওয়ারটিলারের চালক মুন্নার ভাষ্য, উথলী ইউনিয়নের আনারুল বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সার আনার জন্য তাঁর সঙ্গে ভাড়ার চুক্তি করেন। বাঁকা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার ও সহসভাপতি খোকনের নির্দেশে তিনি গুদাম থেকে সার পাওয়ারটিলারে তোলেন। সার নিয়ে উথলী যাওয়ার পথে জামায়াতের লোকজন গাড়ি আটক করেন। জামায়াতের কর্মীরা আবার গাড়িটি ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসেন। এর বেশি কিছু জানেন না তিনি।
জানা গেছে, বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল ও এডিপির আওতায় বরাদ্দ দেয় উপজেলা প্রশাসন। ইউপি চেয়ারম্যানরা ওই টাকা থেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে সার, সেলাই মেশিন ও কীটনাশক স্প্রে মেশিন বিতরণ করেন। ওই ইউনিয়নের সাধারণ কৃষকদের মধ্যে বিতরণের জন্য বরাদ্দ হয় ৬২২ বস্তা সার। সেখান থেকে ১২২ বস্তা জৈব সার মঙ্গলবার বিএনপির দুই নেতার নির্দেশে পাওয়ারটিলারে তোলা হয়।
ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির মফিজুর রহমান বলেন, সাধারণ কৃষকদের মধ্যে বিতরণের জন্য ৬২২ বস্তা জৈব সার পরিষদে আনা হয়। সন্ধ্যায় জানতে পারেন, পরিষদের গুদাম থেকে সার পাওয়ারটিলারে করে পাচার করা হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দলের কর্মীরা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল খালেককে নিয়ে জীবননগর বাসস্ট্যান্ড থেকে সারভর্তি পাওয়ার টিলার আটক করে। পরে পাওয়ারটিলারটি পরিষদে নেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী বলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার ও সহসভাপতি খোকন দীর্ঘদিন ধরে নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছেন। দলীয় প্রভাব দেখিয়ে চাঁদা আদায়সহ জোর করে অনেকে জমি দখলেও তারা জড়িত। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল বাশার বলেন, আগের ইউপি চেয়ারম্যানের সময় এই সার কেনা হয়। এখন প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ায় নতুন কমিটি হয়েছে। তারাই এডিপির টাকায় কাজ করবেন। এ কারণে এই সার দোকান মালিকের কাছে ফেরত পাঠানো হচ্ছিল। দলীয় কোন্দলের জেরে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল খালেক ও যুবদল নেতা রাজা তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন দাবি করে বাশার বলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নিজেই এই ঘটনায় জড়িত।
অপর বিএনপি নেতা খাদেমুল ইসলাম খোকন সার চুরি করে বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তাঁর ভাষ্য, ‘আমি প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার হয়েছি। তারা আমার বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে। বাড়িতে থাকা মা ও স্ত্রীকে মারধর করেছে।’
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল খালেক বলেন, পরিষদের গুদাম থেকে চুরি করে পাচারের সময় সার আটক করেছেন। এর পেছনে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার ও সহসভাপতি খোকনের নাম উঠে আসে। তাঁর দলে কখনও চোরের স্থান দেওয়া হবে না। যিনিই অন্যায় করবেন, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো.
ওই সার ইউপির মাধ্যমেই কৃষকদের মধ্যে বিতরণের কথা জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, এখানে উপজেলা কৃষি বিভাগের সম্পৃক্ততা নেই। বিষয়টি নজরে এসেছে উপজেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা ইউএনও মো. আল আমিনের। তিনি বলেন, ইউপি প্রশাসককে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
চাল চুরিতে কৃষক লীগ নেতা
মঙ্গলবার রাতে পটুয়াখালীর দুমকীতে ওএমএসের চাল পাচারের সময় অটোরিকশা থেকে ১১ বস্তা (৫৫০ কেজি) চাল আটক করেছে স্থানীয় লোকজন। এই চাল উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের মাঝে বিক্রির জন্য বরাদ্দ হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে লেবুখালীর পাগলার মোড় ইউনিভার্সিটি স্কয়ার থেকে চাল জব্দ করেন ইউএনও মো. শাহীন মাহমুদ। পরে রাতেই তিনি ডিলারের গুদাম সিলগালা করেন।
ইউনিয়নের ডিলার খলিল শিকদারের ভাগনে উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক জহির হাওলাদার এ ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি বেশি দামে বিক্রির জন্য খলিলের গুদাম থেকে চাল স্থানীয় মালেক শিকদারের দোকানে পাঠাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জহির হাওলাদারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁর মামা ডিলার খলিল শিকদারের দাবি, তিনি এ ঘটনায় জড়িত নন। চালও তাঁর নয়। জহির খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার ছিলেন। তাঁর ডিলারশিপের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তাই তাঁর (খলিল) গুদামে চাল রেখে ব্যবসা করেন। জহিরের কাছ থেকে তিনি গুদামের অর্ধেক ভাড়া নিয়ে ওএমএসের চাল রাখেন। তাঁর এক টন চাল এখনও গুদামে আছে। জহির নিজের চালই বিক্রি করেছেন।
ইউএনও শাহীন মাহমুদ বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ১১ বস্তা চাল জব্দ করেন। পরে ডিলারের গুদাম সিলগালা করেছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ র জন য র সময় উপজ ল ব তরণ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
নজরকাড়া লাল গাউনে সাদিয়া ইসলাম মৌ
দেশের জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী সাদিয়া ইসলাম মৌ। ভক্ত ও দর্শকের পাশাপাশি বিনোদন অঙ্গনের অনেকেই প্রায়ই এই তারকার সৌন্দর্যে মুগ্ধতা প্রকাশ করে থাকেন। অনেকে আবার তাঁকে মডেল-অভিনেত্রী হিসেবে আদর্শ মানেন। টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা ও পরিচালক জাহিদ হাসানের সঙ্গে সংসারজীবন এই তারকার। তাঁদের সংসারে রয়েছে পুষ্পিতা ও পূর্ণ নামের দুই সন্তান। সম্পতি এই অভিনেত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করেছেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক।
১৯৮৯ সালে প্রথম মডেলিংয়ে পা রাখেন মৌ। একটি শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপনের জন্য সে সময় তাঁর সঙ্গে রেকর্ড ১ লাখ টাকা পারিশ্রমিকের চুক্তি করা হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত তিনিই বাংলাদেশের সর্বাধিক পারিশ্রমিক পাওয়া নারী মডেল।
৩৫ বছর ধরে দেশের শীর্ষ মডেল হিসেবে রাজত্ব চলছে মৌয়ের। মডেল পরিচয়ের পাশাপাশি মৌ একজন গুণী নৃত্যশিল্পী। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে গানের অনুশীলনও করতেন তিনি। গানের চর্চা চালিয়ে গেলে হয়তো আজ সংগীতশিল্পী পরিচয়েও তাঁকে পাওয়া যেত। তাঁর বাবা প্রয়াত সাইফুল ইসলাম ছিলেন জনপ্রিয় একজন সংগীতশিল্পী। আঁকাবাঁকা, বাদশা, আপনজনসহ বেশ কিছু সিনেমাতে প্লেব্যাকও করেছিলেন তিনি।
১৯৯৫ সালের ৩ জুলাই প্রচারিত হয়েছিল সাদিয়া ইসলাম মৌয়ের প্রথম নাটক ‘অভিমানে অনুভবে’। যদিও অনেকটা জোর করেই তাঁকে অভিনয়ে রাজি করানো হয়েছিল।
নৃত্যশিল্পী হিসেবেই সাদিয়া ইসলাম মৌ বেশি পরিচিত। তবে সময়–সুযোগ হলে মাঝেমধ্যে নাটকেও অভিনয় করেন। এসব নাটকের বেশির ভাগ বিশেষ দিবস উপলক্ষে প্রচারিত হয়ে থাকে।
ঢালিউডের তারকা-নির্মাতাদের অনেকে মৌকে চলচ্চিত্রের নায়িকা বানাতে চেয়েছিলেন। বলিউডের ‘সাজান’ সিনেমার রিমেক ‘স্বজন’ সিনেমাতেও তিনি প্রস্তাব পেয়েছিলেন। সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে মৌ বলেন, গল্পপ্রধান, অভিনয় করার মতো চরিত্র পেলে অবশ্যই সিনেমায় কাজ করব।