Samakal:
2025-04-10@12:44:51 GMT

কাউকে বাদ দিলে গণঅবসর!

Published: 6th, February 2025 GMT

কাউকে বাদ দিলে গণঅবসর!

দু’দিনে বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলারের কথা শুনেছে বাফুফের বিশেষ কমিটি। যাকে নিয়ে আপত্তি মেয়েদের, সেই পিটার বাটলার মঙ্গলবার ৩০ মিনিট নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। ছয় থেকে সাত ফুটবলারের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ নানা অভিযোগ কমিটিকে জানিয়েছেন ব্রিটিশ এ কোচ। বুধবার অনুশীলন শেষে সংবাদমাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে বাটলার করলেন বিস্ফোরক মন্তব্য, ‘কোনো সমঝোতা নয়, হয় ওই ফুটবলাররা থাকবেন, না হয় আমি।’ 

তদন্ত চলাকালে বাটলারের এমন মন্তব্যে রীতিমতো ঝড় বইছে দেশের ফুটবলাঙ্গনে। বৃহস্পতিবার বিশেষ কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়ার আগের দিন বাটলারের হুঙ্কারে মেয়েরাও নিজেদের ঐক্যকে আরও মজবুত করেছেন বলে জানা গেছে। দলের সাত ফুটবলারের কোনো একজনকে বাদ দিলে গণহারে অবসরের আগের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকবেন নারী সাফজয়ীরা। মঙ্গলবার সমকালের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মাতসুশিমা সুমাইয়া জানিয়েছেন, ‘ফাইট করে তার পর ছাড়বেন।’ দু’পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে নারী ফুটবলে চলমান অস্থিরতার সংকট নিরসনের সম্ভাবনা খুব কমই। এই সমস্যার সমাধানের পথ এখন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের কোর্টে। পুরো দেশ তাকিয়ে দেশের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানের দিকে।

বাটলারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা মেয়েরা সভাপতি তাবিথ বরাবর ইংরেজি এবং সংবাদমাধ্যমের কাছে বাংলায় চিঠি লেখেন। যেটা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বাইরের কোনো ইন্ধনে মেয়েরা আন্দোলন করছে কিনা, সেটা জানতে গিয়ে চিঠির বিষয়টি সামনে আনে বিশেষ কমিটি। বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলারের সবারই এক কথা, ‘বাটলার থাকলে তারা অনুশীলন করবেন না।’ 

শুধু তাই নয়, সভাপতি তাবিথ আউয়াল অনুরোধ করলেও এই আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াবেন না মেয়েরা। একই সঙ্গে কয়েকজন ফুটবলার দলে থাকলে কোচের চাকরিও ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন ইংলিশ কোচ। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের কারও নাম প্রকাশ না করলেও বাফুফের একটি সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, সানজিদা আক্তার, কৃষ্ণা রানী সরকার, মাসুরা পারভীন, মারিয়া মান্দা, শামসুন্নাহার সিনিয়র এবং নীলুফার ইয়াসমিন নীলাকে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রাখতে চান না। শুধু তাই নয়, এই মেয়েরা নাকি বাফুফের ক্যাম্পে থেকে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। 

বিশেষ কমিটির কাছে এই মেয়েদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গ, অনুশীলনে মনোযোগ না দেওয়াসহ অনেক বিষয়েই অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন বাটলার। বাফুফের এই সূত্র জানিয়েছে, খেলোয়াড় এবং কোচের মতামত জানার পর তদন্ত কমিটির কাছে মনে হয়েছে, মেয়েরা কারও দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছেন। মেয়েরা চিঠিতে যা লিখেছেন আর কমিটির সামনে মুখে যা বলেছেন, তার মধ্যে ৯০ ভাগের সত্যতা মেলেনি। বিদ্রোহী ১৮ মেয়ের মধ্যে আট থেকে ১০ জনের সঙ্গে কোচের কোনো দিন কিছুই হয়নি। সিনিয়রদের চাপেই আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে ওই সূত্রটি। 

বাটলারের বিস্ফোরণের পর ক্যাম্পে থাকা মেয়েরা আরও বেশি কঠোর হচ্ছেন। তাদের দাবি, যেহেতু ১৮ জন একসঙ্গে আন্দোলনে নেমেছেন, তাই কাউকে বাদ দিলে তা মেনে নেবেন না তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী ফুটবলার সমকালের কাছে নিজেদের কর্মপরিকল্পনা জানান, ‘তিনি (বাটলার) যেহেতু বলেছেন, আমরা থাকলে তিনি চলে যাবেন, আমরাও তাঁর আন্ডারে প্র্যাকটিস করব না।’ 

যদি কাউকে বাদ দেওয়া হয়, তখন কী করবেন?– ‘সেটা সময়েই বলে দেবে। অবশ্যই একজনকে ছাড়াও আমরা মাঠে নামব না।’ আগের দিন সমকালের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সুমাইয়াও শেষ পর্যন্ত লড়াই করার কথা বলেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাফুফে ক্যাম্পে ফিরতে গিয়েও বাধার সম্মুখীন হয়েছেন জাপানপ্রবাসী এ ফুটবলার। ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি পাওয়া সুমাইয়াকে ক্যাম্প ছেড়ে বাসায় মায়ের কাছে চলে যেতে বলেছেন বাফুফের এক কর্মকর্তা। সুমাইয়া কর্মকর্তাকে সাফ জানিয়ে দেন, সতীর্থদের ছেড়ে তিনি যাবেন না। বিদ্রোহ করলেও মানসিক ট্রমায় থাকা মেয়েদের জন্য ক্যাম্পে গতকাল মনোবিদ এনেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
 
বাটলারের বিরুদ্ধে মেয়েদের আন্দোলনের সময় সভাপতি তাবিথ আউয়াল যুক্তরাজ্যে চলে যান। গতকাল ঢাকায় ফিরেই ফেডারেশনের এক সহসভাপতির কাছে মেয়েদের আন্দোলন নিয়ে পুরো বিষয়টি শোনেন। এসব শোনার পর গতকাল রাতেই বিশেষ কমিটির রিপোর্ট নিয়ে পর্যালোচনা করার কথা সভাপতি তাবিথের। আজকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময়ই হয়তো কোনো একটা সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে পারেন তাবিথ। 

আবার এমনও হতে পারে, রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করে আরেকটু ভেবে-চিন্তে দু’পক্ষের সঙ্গে বসে সুন্দর সমাধানের পথে হাঁটতে পারেন দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান। এসব ব্যাপারে জানতে তাবিথকে ফোন দিলেও তিনি লাইন কেটে দেন। তবে তাঁর একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, প্রথমে দু’পক্ষকে সব ভুলে মিলে যাওয়ার অনুরোধ করবেন তাবিথ। সেখানে কাজ না হলে হাঁটবেন বিশেষ কমিটির দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে। যে রিপোর্টে আছে বেশ কয়েক নারী ফুটবলারের শাস্তির সুপারিশ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ফ টবল ব শ ষ কম ট র ফ টবল র র বল ছ ন করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যবসাবান্ধব করতে এনবিআরকে অটোমেশন করা হচ্ছে: এনবিআর চেয়ারম্যান

২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়নের প্রাক্কালে চট্টগ্রামে আয়োজিত প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেছেন, ব্যবসাবান্ধব করতে এনবিআরকে অটোমেশন করা হচ্ছে। এবারের বাজেট হবে ব্যবসাবান্ধব বাজেটকে জনবান্ধব করতে ব্যবসায়ীসহ সকলের মতামত নেওয়া হচ্ছে। যার প্রতিফলন পাওয়া যাবে বাজেটে। 

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চিটাং চেম্বারের উদ্যোগে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘আগামী বাজেটে ঘাটতি থাকবে কিন্তু যাতে মূল্যস্ফীতি না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হবে। আর রাজস্ব আদায়ে যৌক্তিকভাবে বাড়ানো হবে করহারও।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘গত অর্থবছরে ৪৫ লাখ করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করে। যার মধ্যে ৩০ লাখ করদাতা শূন্য রিটার্নধারী। বাকি ১৫ লাখ কারদাতা থেকে রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। এত কম সংখ্যক লোকের থেকে রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব নয়। এনবিআর জরিপ করে যারা রিটার্ন দিচ্ছে না তাদের নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে তাদের ব্যাংক হিসেব তলব করা হবে।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের ট্যাক্স টু জিডিপি রেশিও খুবই কম। তাই করহার বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। মার্কিন শুল্ক আরোপের ফলে দেশের পোশাকখাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সরকার আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। এ ছাড়া, ব্যবসায়ীরা যাতে এনবিআর অফিসে ঘুরতে না হয় সেজন্য সবকিছু অটোমেশন করা হচ্ছে। এখন সিঙ্গেল উইন্ডোর মাধ্যমে এক লাখ ৬০ হাজার সার্টিফিকেট অনলাইনে প্রদান করা হয়েছে।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘ভ্যাট এবং বন্ড সুবিধা নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা বন্ড সুবিধা অটোমেশনের আওতায় আনতে কাজ করছি। এ ছাড়া, আয়করের মতো ভ্যাটও যেন ঘরে বসে দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।’’ 

তিনি আগামী বাজেটে ভ্যাট হার যৌক্তিকীকরণ এবং ব্যবসায়ীদের ব্যবসার ট্যাক্স রেট কমানো, ট্যাক্সনেট বৃদ্ধি ও রিফান্ড ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হবে বলে তিনি জানান।

সভায় মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি খলিলুর রহমান, উইমেন চেম্বারের সভাপতি আবিদা মোস্তফা, চিটাগাং চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ও সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম, প্রাক্তন সিনিয়র সহ-সভাপতি এরশাদ উল্লাহ, প্রাক্তন সহ-সভাপতি বেলাল আহমেদ, চেম্বার পরিচালক ও বিজিএমইএ এর ১ম সহ- সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালক হাসানুজ্জামান চৌধুরী (জোসেফ) ও আমজাদ হোসেন চৌধুরী, পান রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. একরামুল করিম চৌধুরী, কক্সবাজার চেম্বার সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী (খোকা), রাঙ্গামাটি চেম্বার সভাপতি মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ মামুন, চট্টগ্রাম ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবু তাহের, চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শওকত আলী, চট্টগ্রাম ফ্রেশ ফ্রুটস ভেজিট্যাবলস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুব রানা, বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মাকসুদুর রহমান, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি সালেহ আহমেদ সুলেমান, ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট অ্যান্ড বিজনেসেস ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি কামরুল হুদা, চট্টগ্রাম গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যাসোসিয়েশনের মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, বিএসআরএম জিএম শেখর রঞ্জন কর ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ শামীম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা/রেজাউল/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ