কোপা দেল রের রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে লেগানেসকে ৩-২ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। বুধবার রাতের কোয়ার্টার-ফাইনালে জয় নিশ্চিত করেন ২০ বছর বয়সী স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড গার্সিয়া, যিনি শেষ মুহূর্তে গোলটি করেন।  

লেগানেসের মাঠে শুরু থেকেই চাপে ছিল রিয়াল। মাত্র আট মিনিটেই স্বাগতিকরা রিয়ালের পোস্টে চারটি শট নেয়। তবে ১৮ মিনিটে রদ্রিগোর বাড়ানো পাস থেকে লুকা মদ্রিচের দারুণ শটে এগিয়ে যায় অতিথিরা। ৩৯ বছর বয়সী এই ক্রোয়াট মিডফিল্ডার চলতি আসরের তিন ম্যাচে করেছেন দুই গোল।  

২৫ মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ব্রাজিলিয়ান তরুণ ফরোয়ার্ড এন্দ্রিক। সতীর্থের পাস পেয়ে ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। টানা তিন ম্যাচে এটি তার তৃতীয় গোল। ৩৯ মিনিটে সফল স্পট-কিকে লেগানেসের হয়ে ব্যবধান কমান হুয়ান ক্রুস। এরপর ৫৯ মিনিটে তার দ্বিতীয় গোলেই সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। লেগানেসের আক্রমণের সামনে রিয়াল গোলরক্ষক লুনিন তখন পুরোপুরি অসহায়।  

সমতা ফেরার পর জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে রিয়াল। একের পর এক আক্রমণ চালালেও ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল পাচ্ছিল না দলটি। তবে ৮২ মিনিটে বদলি হিসেবে নামা গার্সিয়া ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেন। ব্রাহিম দিয়াজের ক্রসে ছয় গজ বক্সে দুর্দান্ত হেডে বল জালে জড়ান তরুণ স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। গার্সিয়ার সেই গোলেই শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কার্লো আনচেলত্তির দল এবং কোপা দেল রের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নীতির ধারাবাহিকতা জরুরি

স্থানীয় হোক, আর বিদেশি হোক– সকল বিনিয়োগকারীর জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং নীতির ধারাবাহিকতা সবচেয়ে জরুরি। অন্যদিকে নীতি যা আছে, তা বাস্তবায়ন করতে হবে। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম সহনীয় রাখাও খুব প্রয়োজনীয় বিষয়। 

গতকাল বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনের তৃতীয় দিনে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত এক সেমিনারে এমন মত দেন বক্তারা। 

তাদের মতে, এ দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যতম বড় বাধা নীতির ধারাবাহিকতা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকা। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতাসহ আরও কিছু বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। 

সেমিনারে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশ একটি পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এখনকার বিভিন্ন নীতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বিনিয়োগ-সংক্রান্ত ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা হয়েছে। এর সমাধান করা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, কেন বাংলাদেশে বিদেশিরা বিনিয়োগ করবে– এ প্রশ্ন সবসময় আসে। এর উত্তরে তাঁর বক্তব্য হলো, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের নবম ভোক্তা বাজার হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের শক্তিশালী জনবল আছে। বিনিয়োগবান্ধব নীতি আছে। 

গবেষণা সংস্থা সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, বিনিয়োগের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি। বিনিয়োগকারীরা নীতির ধারাবাহিকতা চান। হঠাৎ নীতির পরিবর্তনকে তারা বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখেন। তাঁর মতে, এনবিআর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে নীতির সমন্বয় নেই। বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যেও সংস্কার প্রয়োজন। তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হলে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের প্রয়োজন। শিল্পায়ন থেকে শুরু করে সব জায়গায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তির ব্যবহার করতে হবে। 

বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহার করানোর উদ্যোগের উপায় প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিনা শুল্কে সুতা আমদানি করে। এটি অব্যাহত রাখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশের উচিত পণ্য ধরে ধরে আলোচনা করা। 

আমরা কি আসলেই বিনিয়োগ বান্ধব হতে পেরেছি– এমন প্রশ্ন রেখে এপেক্স ফুটওয়্যারের এমডি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রশ্ন আসে বাংলাদেশে কেন বিনিয়োগ করব। বিনিয়োগকারীদের অনেক বিকল্প আছে। ভারত, চীন ও মালয়েশিয়া তাদের বড় বিকল্প। এখন আমাদের প্রয়োজন নীতির প্রাসঙ্গিকতা। নীতির বাস্তবায়ন।’ 

জাপান-বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি তারেক রাফি ভূঁইয়া বলেন, যারা ইতোমধ্যে বিনিয়োগ করেছেন, তাদের প্রতি নজর বাড়াতে হবে। তাদের সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে। এর মাধ্যমে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করা সম্ভব। 

বিল্ডের সিইও ফেরদৌস আরা বলেন, বাংলাদেশে ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল’ খুবই কম। যারা আছে তাদের নিবন্ধন জটিলতা অনেক বেশি। বিএসইসিসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে নিবন্ধন নিতে হয়। তবে বিডা ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করেছে। এর মাধ্যমে নিবন্ধন আগের চেয়ে সহজ হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ