এগারসিন্দুর প্রভাতী যখন কিশোরগঞ্জে থামল, তখন সময় বেলা ১১টা। ট্রেন থেকে নেমে এক মিনিটের হাঁটাপথে একরামপুর বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে আমাদের গন্তব্য করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ গ্রাম, ইসলাম উদ্দিন পালাকারের বাড়ি। অটোতে করে পৌঁছে যাই দরগার ভিটা বাজার। সেখানে আমাদেরই অপেক্ষায় ছিলেন ইসলাম উদ্দিন। জানান, অনুষ্ঠান না থাকলে এখানেই সারা দিন কাটান। নির্মাণাধীন একটি ভবনের ছাদে চা, মোগলাই খেতে খেতে জমে ওঠে আড্ডা। শুরুতে নুহাশ আহমেদের দ্বিতীয় ‘ষ’–এর ‘বেসুরা’ প্রসঙ্গ। এখানে গায়কের চরিত্রেই অভিনয় করেছেন। ‘এটাতে অভিনয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পর কিছুটা চিন্তায় পড়ে গেলাম। এরপর যখন শুনলাম প্রীতম ভাই আছে, কিছুটা চিন্তা কমে যায়। নিজে নিজে চিন্তা করলাম যাত্রায় কত কঠিন কঠিন গল্পে অভিনয় করলাম জীবনে। আর এইখানে তো পরিচালক বলে দিবেন, আমি শুধু পারফর্ম করব। রাজি হয়ে গেলাম। গানটা যখন রেকর্ড হলো, চিন্তাটা একদম কমে গেল। আর নুহাশ ভাই অনেক ভালো মানুষ, আমাকে যথেষ্ট সম্মান করে সব দেখিয়ে দিয়েছে।’ বললেন ইসলাম উদ্দিন।
স্মৃতির ঝাঁপি খুলে সত্তর-আশির দশকে ফিরে গেলেন ইসলাম উদ্দিন। গ্রামে গ্রামে যাত্রা থেকে পালাগানের আসর বসত, রাতভর দর্শকেরা উপভোগ করতেন নাটক, উঠানে পাটি পেতে শুনতেন গান। ইসলাম উদ্দিন তখন মক্তবের ছাত্র। বয়স ১২ থেকে ১৩। বড় দুই ভাই তখন গ্রামের যাত্রায় অভিনয় করতেন। ভাইদের নাটক দেখতে গ্রামের পর গ্রাম গেছেন তিনি। সে সময় নতুন একটি নাটকের জন্য অভিনেতা খুঁজছিল যাত্রার দল। সব চরিত্র পাওয়া গেলেও নায়ক চরিত্রে কাউকে মনমতো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সে নাটকের একটি চরিত্রে অভিনয় করছিলেন ইসলাম উদ্দিনের এক চাচাতো ভাই। তিনিই সন্ধান দেন ইসলামের। পালাকারকে এ চরিত্রে নিতে তাঁর বড় ভাইকে রাজি করান যাত্রা দলের ম্যানেজার। এভাবেই শুরু হয় ইসলাম উদ্দিনের অভিনয়জীবন।
নির্মাণাধীন একটি ভবনের ছাদে চা, মোগলাই খেতে খেতে জমে ওঠে আড্ডা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিরোজপুরে সাবেক সংসদ সদস্য আউয়াল ও তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে আগুন
পিরোজপুরে সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়াল ও তাঁর ভাই সাবেক মেয়র হাবিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। গতকাল বুধবার রাত একটার দিকে শহরের পাড়েরহাট সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
ভারতে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বক্তৃতা প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার সারা দেশে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ছাত্র–জনতা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে পিরোজপুর শহরের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে প্রতিবাদ জানায় ছাত্র–জনতা। রাত একটার দিকে সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়াল ও তাঁর ভাই পিরোজপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাবিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৫ ও ৬ আগস্ট ওই বাড়ি দুটিতে একাধিকবার আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তখন থেকে ওই বাড়িতে কেউ থাকেন না; অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ৫ আগস্টের পর এ কে এম এ আউয়াল আত্মগোপনে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুনসকালেও ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙা চলছে, গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সামনের অনেকটা৩ ঘণ্টা আগেগতকাল রাতে পিরোজপুর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হাবিবুর রহমানের মালিকানাধীন একটি ফিলিং স্টেশন ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া বলেশ্বর ব্রিজের টোলঘর ও জেলা যুবলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামানের (ফুলু) সদর উপজেলার শংকরপাশা ইউনিয়নের গ্রামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
আরও পড়ুনবরিশালে সাবেক মেয়র সাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতা আমুর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভাঙচুর১৯ মিনিট আগে