পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে ১০ সদস্যের কমিটি
Published: 6th, February 2025 GMT
দেশের পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেককে সভাপতি করে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকার। কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে বিভাগটির পুঁজিবাজার শাখার যুগ্ম সচিবকে।
পুঁজিবাজারকে আস্থাশীল জায়গায় আনতে আইন-কানুন পরিবর্তনসহ সার্বিক বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সে বিষয়ে সুপারিশ করবে কমিটি। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের গঠন করা এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকছেন ন্যূনতম কমিশনার পদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একজন কর্মকর্তা এবং ন্যূনতম পরিচালক পদের বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন প্রতিনিধি। এ ছাড়া বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের একজন করে ন্যূনতম নির্বাহী পরিচালক মর্যাদার কর্মকর্তা এ কমিটির সদস্য হিসেবে থাকছেন। কমিটিতে আরও রয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান।
সম্প্রতি অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনায় গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শেয়ারবাজার থেকে গত ১৫ বছরে ১ লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। জালিয়াতি, কারসাজি এবং ভুয়া কোম্পানি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে এ টাকা। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এ ব্যাপারে দায়িত্ব পালন এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১০ ও ২০১১ সালে শক্তিশালী ব্যবসায়িক গোষ্ঠী ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরা শেয়ারের দাম কারসাজির মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক ক্ষতি করে। কিন্তু কারসাজির নায়কদের বিচার হয়নি।
এর আগে গত ৭ অক্টোবর শেয়ারবাজারের উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানো ও আন্তর্জাতিক মানের সুশাসন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার সংস্কারের সুপারিশের জন্য পাঁচ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। টাস্কফোর্স ও কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করে দেশের শেয়ারবাজারের টেকসই ভিত্তি স্থাপন করতে চায় সরকার।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ইয়াংওয়ানের চেয়ারম্যান কিহাক সাংকে
নিজের ৭৮ বছর জীবনের অর্ধেকের বেশিই তিনি জড়িয়ে আছেন বাংলাদেশের সঙ্গে। আশির দশকে এ দেশের পোশাকশিল্পের যাত্রার শুরুতে তিনি ছিলেন এই শিল্পের যাত্রাসঙ্গী। তা–ও আবার হাতে গোনা কয়েকজনের মধ্যে একজন। শুধু তা–ই নয়, আশির দশকে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন প্রথম বিদেশি বিনিয়োগকারী। বাংলাদেশের শিল্পের সঙ্গে সেই যে তাঁর যাত্রা শুরু করেছিলেন, এখন তা এক শিল্পসামাজ্যে রূপ নিয়েছে।
৪৫ বছর ধরে বাংলাদেশ ও এর শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং, পেলেন অন্য রকম এক স্বীকৃতি। বাংলাদেশের শিল্প খাতের বিকাশ ও বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান, বৈদেশিক আয়ের অবদানের জন্য তাঁকে দেওয়া হয়েছে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব (অনারারি সিটিজেনশিপ)। চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী দিনে তাঁর হাতে এই স্বীকৃতি তুলে দেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এর মাধ্যমে একজন বিদেশি বিনিয়োগকারী হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য তিনি পেলেন এ দেশের নাগরিক না হয়েও ‘সম্মানিত নাগরিক’ মর্যাদা।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে যাঁরা তাঁকে এই সম্মাননা দেওয়ার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁরা বলছেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হলে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত ও সহজ করতে হবে। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পথচলা নিরাপদ ও মসৃণ করাও জরুরি। সেই সঙ্গে তাঁদের যথাযথ স্বীকৃতি ও সম্মাননা দিতে পারলে অন্যান্য বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও তাতে সম্মানিত বোধ করবেন।
এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনের মূল আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা বিডা। সংস্থাটি এ দেশের বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ‘বিনিয়োগ অ্যাম্বেসেডর বা বিনিয়োগ দূত’ হিসেবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চায়। এ জন্য ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদানের মাধ্যমে এ দেশের বিনিয়োগ দূতের স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগ নেয় তারা। বিডা মনে করছে, কিহাক সাংয়ের হাত ধরে এ দেশে কোরীয়সহ বিশ্বের আরও অনেক বিনিয়োগকারীর বড় ধরনের বিনিয়োগ আসবে বা আনতে কাজ করবেন।
বিডার এই ভাবনা যে একেবারে অমূলক নয়, তার প্রমাণও এরই মধ্যে পাওয়া গেছে। এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনে কোরিয়ার আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের একটি প্রতিনিধিদল এসেছে। ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং নিজ উদ্যোগে কোরিয়া থেকে এসব বিনিয়োগকারীকে বাংলাদেশ সফরে নিয়ে এসেছেন। সফরকারী কোরিয়া বিনিয়োগকারীদের দলটি গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেখানে তারা বাংলাদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
কিহাক সাং