Prothomalo:
2025-04-10@10:11:03 GMT

যৌক্তিক সমাধানে আসাটা জরুরি

Published: 6th, February 2025 GMT

চাকরিতে কোটা সংস্কারে শুরু হওয়া আন্দোলন দেশে অভূতপূর্ব একটি অভ্যুত্থানের ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই সেই আন্দোলন শুরু করেছিলেন। দুঃখজনক হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাতেই এখনো অযৌক্তিক কোটাপদ্ধতি থেকে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নিয়ে বিতর্ক আগেও ছিল, এখন আরও বেশি জোরালো হয়েছে। ইতিমধ্যে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি আশাব্যঞ্জক।

ভর্তি পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য আলাদা কোটা সংরক্ষিত আছে, যেটি পোষ্য কোটা নামে পরিচিত। আর্থসামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা শিক্ষক–কর্মকর্তাদের সন্তানেরা কেন এই কোটাসুবিধা ভোগ করবেন, তা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে। কারণ, কোটা হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য। তবে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মতো একেবারে নিম্নশ্রেণির কর্মচারীদের জন্য সেটি ভেবে দেখা যেতে পারে। কারণ, সেসব পরিবার শিক্ষাদীক্ষায় পিছিয়ে থাকে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম পরিচ্ছন্নতাকর্মীই থেকে যায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটা বাদ দেওয়া হলেও সেই সব নিম্নশ্রেণির কর্মচারীর কথা বিবেচনা করে তাঁদের জন্য সামান্য কোটা রাখা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে প্রতিবাদের মুখে সেই কোটাও বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এবার শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখোমুখি অবস্থানের মুখে পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক যে সুবিধা রয়েছে, সেটা বিবেচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠনের কথাও উল্লেখ করা হয় সিদ্ধান্তে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কয়েকজন শিক্ষার্থী পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশনে বসার পর সোমবার এ ঘোষণা দেন উপাচার্য। ওই ঘোষণায় অনির্ধারিতসংখ্যক পোষ্য কোটার পরিবর্তে ৪০টি কোটার কথা উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া একজন ব্যক্তি একবারের জন্য এ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ওই অনশন ভাঙেন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্ত মেনে নেননি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং পরদিন তাঁরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সেখানে কর্মকর্তা–কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে পুরো পোষ্য কোটাপদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আবার বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণার পর আনন্দ প্রকাশ করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁরা এখন সন্দেহ প্রকাশ করছেন।

যা–ই হোক, আমরা আশা করব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয় পক্ষের সঙ্গে বসে এবং সবার সম্মতি নিয়ে একটি যৌক্তিক সমাধানে আসবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা মনে করি, পোষ্য কোটা নিয়ে প্রশ্নের সুরাহা হওয়া উচিত। বৈষম্যমূলক কোনো কোটাব্যবস্থা থাকতে পারে না। যুক্তিতর্ক ও আলোচনার মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে ঢোকার অনুমতি পায়নি চার ট্রাক তৈরি পোশাক, গন্তব্য ছিল স্পেন

ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা প্রত্যাহার করায় পেট্রাপোল কাস্টমস তৈরি পোশাকবোঝাই চারটি ট্রাককে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি (কারপাস) দেয়নি। এতে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে গতকাল বুধবার ট্রাকগুলো ঢাকায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে নিয়ে যাওয়ার সুবিধা দিতে ২০২০ সালের ২৯ জুন আদেশ জারি করেছিল ভারত। ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) গত মঙ্গলবার সেই আদেশ বাতিল করে।

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ঢাকা থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক তিনটি প্রতিষ্ঠান চারটি ট্রাকে পণ্য বোঝাই করে বেনাপোল বন্দরে নিয়ে আসে। ট্রানজিট নিয়ে ওই পণ্য কলকাতার দমদম বিমানবন্দর হয়ে স্পেনে রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস থেকে ট্রাকগুলো প্রবেশের অনুমতি পায়নি। এতে পণ্যগুলো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ফিরিয়ে নিয়েছে।

বেনাপোলে এই পণ্যের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট ছিল পদ্মা ট্রেডিং। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক অনিক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা প্রত্যাহার করেছে। এর আগেই ট্রাকবোঝাই এসব পণ্য বেনাপোল বন্দরে চলে আসে। পণ্য ঢুকতে না দেওয়ায় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ও আমরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছি।’ তিনি জানান, এই সুবিধা বাতিলের এক দিন আগেও ২০ ট্রাক তৈরি পোশাক তাঁদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতের ট্রানজিট ব্যবহার করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে। সাধারণত তৈরি পোশাকের রপ্তানি গ্রীষ্মে বাড়ে। এখন রপ্তানির ভরা মৌসুম। এই মুহূর্তে ভারতের এই সিদ্ধান্তে তাঁরা বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন বলেন, ‘যে রপ্তানিকারকের পণ্য ফিরে গেছে, তাদের কোনো প্রতিনিধি আমাদের কিছু জানাননি। তবে আমরা জেনেছি, ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস থেকে কারপাস দেওয়া হয়নি। যে কারণে পণ্য ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’

২০২০ সালের ২৯ জুন এক আদেশে ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। তখন বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় কোনো দেশে পণ্য রপ্তানিতে ভারতের কলকাতা বন্দর, নবসেবা বন্দর ও কলকাতা বিমান কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছিল সিবিআইসি। এখন সে সুবিধা প্রত্যাহার করল ভারত।

বিবৃতিতে ভারত দাবি করেছে, এসব পদক্ষেপে ভারতের সীমান্ত দিয়ে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ওপর প্রভাব পড়বে না।

বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, বেনাপোল দিয়ে ভারতের ট্রানজিট নিয়ে তৃতীয় কোনো দেশে যেসব পণ্য রপ্তানি করা হয়, তার বেশির ভাগ যায় ইউরোপের দেশগুলোয়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বেনাপোল ও পেট্রাপোল দিয়ে স্পেন ও সুইজারল্যান্ডে বেশি যায়। এই বন্দর দিয়ে নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানি কম হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ